ডা. মো. তাজুল ইসলাম : ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা আমাদের শারীরিক, মানসিক সমস্ত রোগের মধ্যে র্যাংকিংয়ে চতুর্থতম। এই রোগে যারা ভোগেন তারাই কেবল জানেন এ রোগ কতো কষ্ট আর পীড়াদায়ক। বিষণ্ণতা রোগ শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আর্থিক ক্ষতিরও কারণ। সে কারণেই ডিপ্রেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণ তাকে আমরা রোগীদের কাছে বলে থাকি অশান্তি রোগ। কারণ রোগী আমাদের কাছে তার মনের অশান্তি ও কষ্টের কথাগুলো বলে থাকেন। স্বাভাবিকভাবে মন খারাপ আর ডিপ্রেশন রোগ এক নয়। পার্থক্যটা কী জানতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, সবসময় কারও আনন্দ-ফুর্তি থাকে না বা সুসময় থাকে না। থাকতে পারবেও না। সম্ভবও না। যারা নিজেদের দুঃখী মনে করেন, তারা নিজের দিকে খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন আপনার মনের অনুভূতিগুলো সবসময় পরিবর্তন হচ্ছে। যতোই অশান্তিতে থাকুন, যতোই দুঃখের মধ্যে জীবন কাটান না কেন একসময় ঠিকই মন উৎফুল্ল হবে। সুখের দিন আবারও আসবে। আর যারা নিজেকে বেশি সুখী মনে করেন তারাও কোনো না কোনো সময় অসুখী হবেন। কষ্টের মধ্যদিয়ে যাবেন। এটাই স্বাভাবিক জীবন।
কীভাবে বুঝবেন আপনি ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা রোগে ভুগছেন? কখন আমরা রোগ বলবো, যখন আমাদের ভীষণভাবে বিষাদগ্রস্ত করবে। একাধারে দুইসপ্তাহের বেশি চলতে থাকবে। কাজ-কর্মে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে। তখনই আমরা এটাকে আমরা ডিপ্রেশন বা অশান্তি রোগ বলে থাকি। বিষণ্নতা রোগ এতোই কষ্টের হয়, হতাশা, অশান্তি সৃষ্টি হয় যেখানে তীব্র শারীরিক কষ্টেরও চেয়েও বেশি কষ্ট অনুভূত হয়। এই কষ্টের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই।
আগেই বলেছি জীবন নানা উত্থান-পতন থাকে। এটাই স্বাভাবিক। জীবনকে ভালো সব প্রতিকূলতা জয় করার মধ্যেই সফলতা নিহিত। ডিপ্রেশন আপনাকে সফলতা থেকে দূরে ঠেলে দেবে। সুতরাং যতো হতাশা, কষ্টের সময় আসুক না কেন, কাটিয়ে উঠতে হবে। মানসিক জোর রাখতে হবে। দৃঢ় মনোবলই পারে সব কষ্টের অবসান ঘটাতে। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলুন। কারণ জীবন আপনার।
লেখক : অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
আপনার মতামত লিখুন :