নিনা আফরিন, পটুয়াখালী : এবার মাথায় কাপনের কাপড় বেঁধে তিন ফসলী জমি রক্ষায় বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন করেছে দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষক। বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সরেজমিন পরির্দশনকালে দেখা যায় অধিগ্রহনের হাত থেকে নিজেদের জমি রক্ষার জন্য দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষক কিষানী বিভিন্ন ব্যানার প্লাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো.মতিউল ইসলাম চৌধুরী পরিদর্শনের জন্য ধানখালী ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স এলাকায় পৌছলে কৃষকরা তিন ফসলি জমি অধিগ্রহন না করার জন্য স্লোগান দিতে থাকে। জেলা প্রশাসক ধানখালী ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের বক্তব্য শোনেন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কৃষক ফরিদ তালুকদার(৬০),আবদুল মান্নান(৩৫),আফজাল হোসেন(৪৫),আনসার উদ্দীন মোল্লা(৫৫) ও আতাউর রহমান মিলন মিয়া। তারা বলেন,কলাপাড়া উপজেলার প্রায় দুই লাখ হেক্টর জমির মধ্যে ২৫ একর জমি তিন ফসলী।
এই ২৫ হাজার একর জমির মধ্যে ১৬ হাজার একর জমি ধানখালী ও চম্পাপুরে। এখানের উৎপাদিত তরমুজ,মুগ ডাল,আমন ধান সারা দেশে রপ্তানী হয়। এখানের মাটি সোনার চেয়েও খাটি। এই তিন ফসলী জমি অধিগ্রহন করে ইতিমধ্যে সরকার দুটি বিদুৎ কেন্দ্র নির্মান করেছে। এলাকার মানুষ দুই হাজার একর জমি দুটি বিদুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রদান করেছে। কিন্তু এলাকার মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে বেসরকারী কিছু সংস্থা এলাকার আবারো জমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কৃষকরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তারা জীবনের বিনিময়ে হলেও তাদের ফসলি জমি রক্ষা করবে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মধ্যস্ততায় জেলা প্রশাসক উপস্থিত কৃষকদের আর কোন তিন ফসলি জমি অধিগ্রহন করা হবে না বলে আশ্বস্ত করেন।
পরে তিনি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স চত্ত্বরে বের হলে উপস্থিত হাজার হাজার কৃষক তাকে ঘিরে স্রোগান দিতে থাকে। এ সময় গায়ে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে নারী ও পুরুষ রাস্তায় শুয়ে পরে। জেলা প্রশাসক মো.মতিউল ইসলাম চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে তিন ফসলি জমি অধিগ্রহন করা যাবে না। সরেজমিনে দেখার জন্য আমি আজ এখানে এসেছি। কৃষকদের ক্ষতি করে কোন জমি ধানখালী থেকে অধিগ্রহন করা হবে না বলেও ঘোষনা দেন জেলা প্রশাসক। এ সময় তার সাথে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোতালেব তালুকদার,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্বা) মামুনুর রশীদ,ধানখালী ও চম্পাপুর ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :