শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৮ নভেম্বর, ২০১৮, ০২:৪৮ রাত
আপডেট : ০৮ নভেম্বর, ২০১৮, ০২:৪৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বেধে দেয়া সময়েও হস্তান্তর হয়নি মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার

শাকিল আহমেদ: সমঝোতার অভাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বেধে দেওয়া সময়েও হস্তান্তর হয়নি রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক (সমন্বিত) ফ্লাইওভার। উদ্বোধনের এক বছর পার হলেও এখনো অভিভাবকহীন এই উড়াল সড়কটি। ৫ নভেম্বরের মধ্যে দুই সিটি করর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তরের জন্য ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করলেও তারাও ব্যর্থ হয়েছেন।

এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটির আহবায়ক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নগর উন্নয়ন) মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ফ্লাইওভারটি হস্তান্তরের কাজ চলছে। যেদিন মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়েছে তার কয়েকদিন পর কমিটি করা হয়েছে। সে কারণে বেশি সময় না পওয়ায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যায়নি। এখনো কাজ চলছে। কিছু সমঝোতা চুক্তি স্বারক (এমওইউ) চূড়ান্ত করা হয়েছে। আরো দুই এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নকশা অনুমোদনের পর থেকেই মগবাজার মৌচাক-ফ্লাইওভরে নানা ত্রুটি দেখা দেয়। এর মধ্যে ফ্লাইওভারে ট্রাফিক সিগন্যাল, বৈদ্যুতিক বাতি নষ্ট, বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, বাম দিকে স্টিয়ারিং, যানজট লেগে থাকা, ওঠা-নামার র‌্যাম্প জটিলতাসহ নামার লুপে যানজট লেগেই থাকে। যা ফ্লাইওভারের ওপরে চলাচলকারীদের জন্য ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ময়লা পানি জমে পরিবেশদূষণ হচ্ছে।

সূত্র জানায়, উপরোক্ত সমস্যার কারণে শুরু থেকেই ফ্লাইওভারটি দায়িত্ব বুঝে নিতে আপত্তি জানায় দুই সিটি করপোরেশন। মগবাজার-মৌচাক উড়াল সড়কটির বাংলামোটর, মগবাজার, তেজগাঁও, মালিবাগ রেলগেট, রামপুরা অংশ পড়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতায়। আর বাকি অংশ মৌচাক, মালিবাগ মোড়, রাজারবাগ, শান্তিনগর অংশ পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতায়।

নির্মাণ শেষে এরই মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে মগবাজার- মৌচাক ফ্লাইওভারের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। সংস্থাটি স্থানীয় সরকার পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দুই সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়েছে। মন্ত্রণালয় এজন্য মো. মাহবুব হোসেনকে আহ্বায়ক করে গত ২২ অক্টোবর ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দেয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রধান প্রকৌশলী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রধান প্রকৌশলী, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক। কমিটিকে ৫ নভেম্বরের মধ্যে ফ্লাইওভারটি দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তের পর দ্রæত ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করতে বৈঠকে করেছে দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু মন্ত্রনালয়ের বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে এখনো কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি কমিটি।

এবিষয়ে কমিটির সদস্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুবায়ের সালেহিন বলেন, আজ (সোমবার) বিকাল ৪টায় এলজিইডির সাথে সিটি করপোরেশনের একটি সমঝোতা স্মারক হয়েছে। ফ্লাইওভারের নানা সমস্যা ও ত্রুটি নিয়ে মিটিং আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে খুব শিগগিরি এটি হস্তান্তর করা হবে। তবে কবে নাগাদ হতে পারে এবিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক সুশান্ত কুমার পাল বলেন, ফ্লাইওভারটি মেনুয়াল ভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ভাবে এটি হস্তান্তর বাকি রয়েছে। কীভাবে ফ্লাইওভারটির রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে, এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীদের বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব নথিও দেওয়া হয়েছে তাদের। এখন কিভাবে,কবে এটি হস্তান্তর হবে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তিন স্তরবিশিষ্ট চার লেনের এই ফ্লাইওভারটির দৈর্ঘ্য ৮ দশমিক ৭ কিলোমিটার। এটি ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয়ে হয়েছে ১ হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ হাজার ৬৯ লাখ টাকা। এর প্রতি মিটারে খরচ হয়েছে ১৩ লাখ টাকা। ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ করা হয়েছে তিন ভাগে। প্রথম অংশ সাতরাস্তা-মগবাজার-হলি ফ্যামিলি পর্যন্ত এই অংশটি ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করেন। এই ফ্লাইওভারটির দ্বিতীয় অংশ হলো, বাংলামোটর-মগবাজার-মৌচাক-রাজারবাগ পর্যন্ত। এই অংশটি যান চলাচলের জন্য গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর উন্মুক্ত করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ফ্লাইওভারটির তৃতীয় অংশ রামপুরা চৌধুরীপাড়া-মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর অংশ ২৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। সম্পাদনা: শাহীন চৌধুরী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়