সমীরণ রায়: ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিকদলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চলছে। জাতীয় ঐক্যফন্টের সঙ্গে প্রথম দফার পর দ্বিতীয় দফায় ৭ নভেম্বর সংলাপের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে। এরই অংশ হিসেবে গত রোববার রাতে ১৪ দলের সঙ্গে সংলাপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংলাপে ১৪ দলের শরিক দলগুলোকে কয়টি আসন দেওয়া হবে এনিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় ১৪ দলের নেতারা জোট নেত্রীর কাছে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে জানতে চান। জবাবে জোট নেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যোগ্য নেতাকে মনোনয়ন, ভাগাভাগিতে নয়। এ তথ্য সংলাপে উপস্থিত একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।
রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জোট নেতাদের বলেন, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মতো প্রার্থী থাকলে তালিকা দেন, মনোনয়ন দেব। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মতো নয়, এমন প্রার্থী দেবেন না। যোগ্যপ্রার্থী থাকলে সেই তালিকা দেন। কিন্তু সিট ভাগাভাগির জন্য প্রার্থী তালিকা দিলে হবে না। এ সময় ১৯৯১ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই নির্বাচনে জোটকে আসন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু কিছু আসনে জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়েছিল।
জানা গেছে, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট গঠন করা হলে সেই জোটে কারা থাকবেন তা নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও মহাজোট করে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ১৪ দলের নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু আগামী নির্বাচন জোটগতভাবে হবে কী-না জানতে চাইলে জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জোটগতভাবেই নির্বাচন করবো। ১৪ দলীয় জোট আদর্শিক, এ জোট থাকবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিজয় অর্জন করতে হবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে জোটের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার দাবি জানান জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কোনো জাবাব দেননি।
সংলাপ শেষে ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ১৪ দল নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। সংবিধানের বাইরে এক চুলও যাওয়া যাবে না। আমরা প্রত্যয়ের সঙ্গে ঘোষণা করেছি, শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে।
১৪ দলের শরিকদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি সম্পর্কে কোনো আলোচনা হয়েছি কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নাসিম বলেন, ১৪ দলের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, জোটগতভাবে নির্বাচন করবো। আমরা বলেছি, আপনার সিদ্ধান্ত মেনে নেবো। বিশ্বাস করি, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে। শেখ হাসিনার সংলাপের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। আমরা তাকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি।
সংলাপ শেষে বাংলাদেশের ওর্য়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশদে খান মেনন বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে যাবো। সংবিধানের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচন আমাদের দাবি।
সংলাপে উপস্থিত ১৪ দলের এক নেতা বলেন, জোটের শরিক দলগুলোকে কোন কোন আসন দেওয়া হবে, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে চলমান সংলাপ প্রক্রিয়া শেষে এ সংক্রান্ত আলোচনা হতে পারে।
জানা গেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনায় সংবিধানের ভেতরে থেকেই সমাধান দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ১৪ দলীয় নেতারা। নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্র থেমে নেই, এটা চলবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আমরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করবো।
আপনার মতামত লিখুন :