শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৫ নভেম্বর, ২০১৮, ০৩:০০ রাত
আপডেট : ০৫ নভেম্বর, ২০১৮, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইফ ইউ ওয়ান্ট টু বিট দেম, জয়েন দেম

যায়নুদ্দিন সানী : মাতম দেখছি আর হাসছি। এদের অসহায়ত্ব দেখে কিছুটা হাসছি, আর বাকীটা হাসছি এদের ভ-ামি দেখে। সবচেয়ে বেশি মজা পাচ্ছি, না বাম না লীগ, এমন সব সুশীলদের মাতম দেখে। অধিক শোকে পাথর অবস্থা। এরা না পারছে ঘটনা মেনে নিতে, না পারছে, প্রাণ খুলে সমালোচনা করতে। আবার চুপ থাকলে, বুদ্ধিজীবী খেতাবটা হাতছাড়া হয়ে যাবে। ফলে বুঝে উঠতে পারছে না কি করবে।

এদেশের বুদ্ধিজীবীরা মূলত তিন জাতের। প্রথম গ্রুপ হচ্ছে, বাম। দেশে কিছু ঘটলেই, এরা মার্ক্স, এঙ্গেলস আর লেলিনকে হাঁক দেন। উনারা এসে বিভিন্ন তত্ত্ব দিয়ে যান। এরপরে উনারা নেমে পড়েন কলম নিয়ে। তবে এদের মাথায় একটা ব্যাপার থাকে, লীগকে চটানো যাবে না। ফ্রেন্ডলি ফায়ার হতে পারে, তবে এরবেশি এগোনো যাবে না। না এগোনোর যুক্তি হচ্ছে, এমনটা করলে দেশে মৌলবাদী শক্তি মাথাচড়া দিয়ে উঠবে। একই যুক্তিতে ঐক্যতে যায়নি বামরা। না যাওয়া নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নাই। আপত্তি এদের যুক্তি নিয়ে। গেলে বিএনপি শক্তিশালী হয় আর না গেলে লীগ। যদি দুটোর একটা পছন্দ করতে হয়, তবে লীগকে করবো। এই ছিলো ওদের যুক্তি। মূল যে দাবি নিয়ে এই আন্দোলন, সেই ব্যাপারে তাদের অবস্থান আবার ঐক্যের মতোই। কিন্তু তারপরও ঐক্যের সাথে যাওয়া যাবে না। জামায়াত মাথাচাড়া দেবে। সো? মুখে যা ই বলুক, পাবলিক তাদের লীগের ‘বি’ টিম-ই ভাবছে। এই ডাইলেমা এদের অনেক দিন ধরেই। এই সিদ্ধান্তহীনতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। এদিক দিয়ে বলব, ইনু এবং মেনন সাহেব অনেক সৎ। লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে নৌকায় উঠে গেছেন। বাকীরা উঠবেও না, আবার অন্যদের সাথে ঐক্যও করবে না। ফলাফল হলো, এদের অবস্থা এখন ‘না ঘারকা, না ঘাটকা’। এদের ধারণা, এদের এই ডাইলেমা পাবলিক বুঝতে পারছে না। আই গেস নট। পাবলিক বেশ ভালোই বোঝে এদের অ্যাটিচুড। আর পাবলিকের সাফ কথা, লীগই যদি করবো, তাহলে লীগের ‘বি’ টিম কেন করবো? অরিজিনাল লীগই করবো।

সুশীলদের পরের গ্রুপ হচ্ছে, নির্ভেজাল লীগ। শুধু লীগ না, অন্ধ লীগ। আপা যা বলবেন, সেটাই বেদবাক্য। শি ক্যান ডু নো রং। কাউন্সিলে যখন সাধারণ সম্পাদক পদে ইলেকশন না করিয়ে একজনকে মনোনীত করা হলো, এরা হাত তালি দিলেন, ‘বাহ বেশ ভালো সিদ্ধান্ত তো!’ যদি উনি ইলেকশন দিতেন, তাহলেও এরা বলতেন, ‘বাহ বেশ ভালো সিদ্ধান্ত তো!” এদের মূল উদ্দেশ্য অবশ্য অন্য। সফর সঙ্গী হওয়া আর নিজের জন্য চ্যানেলের ব্যবস্থা করা। সেদিক দিয়ে দেখলে, এদের আমি সমর্থন করি। সততা অন্তত আছে। নুন খাচ্ছি এবং গুণ গাইছি। হিসাব ক্লিয়ার।

আর তৃতীয় গ্রুপ হচ্ছে মিক্সড। একসময় বাম ছিলেন, এখন আর নিজেকে বাম বলেন না। সুযোগ পেলে বামদের কটাক্ষও করেন, তবে লীগ প্রশ্নে সাবধান। মাঝে মাঝে লীগের বিপক্ষে যান, তবে হাওয়া বুঝে। সুযোগ পেলেই ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন। ‘থুক্কু’ বলতে এদের জুড়ি নেই। এরাই মূলত নিজেদের সুশীল সমাজ বলে ইন্ট্রোডিউজ করেন। বাম আর সুশীল গ্রুপই মূলত এখন আহাজারি আর মাতম করছে।

কেন করছে, সেটা নিয়ে আমি কনফিউজড। এরা এতো গাধা কেন? এরা কবে বুঝবে, দেশের সাধারণ মানুষের মনের কথা বোঝার ক্ষমতা এরা হারিয়েছে? গাদা-গাদা বইপত্র গিলে, তত্ত্ব আর তত্ত্ব ফলিয়ে এরা কেবল অশ্বডিম্ব প্রসব করছেন। দেশে কিছু হলেই, এই ব্যাপারে মার্ক্সবাদ কী বলে, লেলিনবাদ কী বলে, বকবক করে কান ঝালাপালা করে দেবে। মুখে শুধু একটাই কথা, সাম্প্রদায়িকতা। ধর্মের কী কী ঝামেলা, লীগ হারলে কী হবে, এসব আবোল তাবোল নিয়েই মেতে আছে এই গ্রুপ। তবে এদের একটা জিনিস আছে। চাপার জোর। আর তাই, এদের ডাক আসে টকশোতে।

সুন্দর গুছিয়ে কথা বলা, পাণ্ডিত্ব জাহির করা, এসব আবার পাবলিক বেশ খায়। তবে এরা ঝামেলা যেটা করেন, তা হচ্ছে, এসে যে উনারা মূলত লীগের হয়ে ব্যাটিং করেন। স্পেশালি বিএনপি থাকলে। আর অন্যদিকে লীগ থাকলে কিছু নিউট্রাল সাজার চেষ্টা করেন।

শুরুতে টকশোর বাজার থাকলেও এখন আর নেই। নেই মানে, তথ্যভিত্তিক অনুষ্ঠান আর নেই। উনারা কী বলছেন, তা জনগণ আর শোনে না। আই মিন, সেটা থেকে জ্ঞান আহরণের জন্য শোনে? না। দর্শক যা শোনে, তা এন্টারটেইনমেন্টের জন্য শোনে। ঝগড়া দেখে মজা পায়, তাই শোনে।

এনিওয়ে, ফেসবুক ভাসছে বাম আর সুশীল মাতমে। শোকরানার ঘোষণা আসবার পর থেকেই শুরু হয়েছে এই আহাজারি। এনারা কেউই ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছে না, এই কদিন আগে ‘তেঁতুল হুজুর’ বলে কটাক্ষ করা মানুষটির সাথেই আবার একাত্মতা ঘোষণা করা। এরা এখনও বুঝছে না, ভোটের বাজারে এদের দাম যেমন নেই, তেমনি এদের তত্ত্বেরও কোনো শ্রোতা নেই। বরং হুজুরদের কিছু হলেও ফলোয়ার আছে। আর আছে ভোট কাটবার ক্ষমতা। লীগ মূলত সেটাই সামাল দিচ্ছে।

আওয়ামী বুদ্ধিজীবীদের অবশ্য বিকার নেই। এদের কোনো সময়েই থাকে না। এরা সবচেয়ে বেশি অ্যাকশানে নামে বিএনপির কোনো দোষ ধরা পড়লে। আপত্তি জানাচ্ছি না। তবে লীগ একই কাজ করলে কেবল এদের চেহারা পাল্টে যায়। ঐ একই মুখ থেকে এবার অন্য যুক্তি প্রসব হয়। অ্যাজ ইউজুয়াল। এ ব্যাপারে এরা ওস্তাদ।

শফি সাহেবকে ‘তেঁতুল হুজুর’ বলার সময়ও যেমন এদের হাতে গ-া গ-া যুক্তি ছিলো, এখন, এই আঁতাতের সময়ও এদের হাতে রয়েছে অগণিত যুক্তি। সংলাপ করতে চাইলেও এদের কাছে যুক্তি আছে, না করতে চাইলেও আছে। শুধু তা-ই নয়, এই ধরনের আঁতাত বিএনপি করতে চাইলে, সেটা কাউন্টার দেয়ার জন্যও, এদের যুক্তির ফুলঝুরি শুরু করতে সমস্যা হয় না। যুক্তি রেডি।

ইন অ্যা নাট শেল, আগামী কিছুদিনে, ‘শোকরানা’ নিয়ে অযথা কিছু মাতম হবে। তবে যেহেতু সেম সাইড, তাই কিছু ফ্রেন্ডলি ফায়ার হয়ে থেমে যাবে। বিএনপিও আই গেস এই নিয়ে পানি ঘোলা করবে না। অবস্থা বুঝে শফি সাহেবকে দলে টানতে হলে, এখন করা যে কোনো কটাক্ষ, বুমেরাং হয়ে দেখা দেবে। সো, স্পিকটি নট।

তাহলে? কী দাঁড়াল? শোকরানা মাহফিল, জায়েজ? না হারাম? ‘চাঁড়াল মুচি’ কিংবা ‘শয়তানের সাথে আঁতাত’ কথাগুলো মুখ ফসকে হয়তো বেরিয়েছে, তবে কথাটা সত্য। আসলেই, রাজনীতি এটাই। ইফ ইউ ওয়ান্ট টু বিট দেম, জয়েন দেম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়