খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল : “লেখা পড়ার বয়স নাই, চলো সবাই স্কুলে যাই” শিক্ষাগ্রহনের এ শ্লোগানকে বুকে ধারণ করে ৪১ বছর বয়সে অষ্টম শ্রেণির সমাপনী (জেএসসি) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চমক সৃষ্টি করেছে জেলার আগৈলঝাড়ার এক শিক্ষার্থী।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রাজিহার ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের শিক্ষার্থী হরষিত বাড়ৈ বৃহস্পতিবার শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন। পরীক্ষার্থী হরষিত বাড়ৈ আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের পাশ্ববর্তী উপজেলা কোটালীপাড়া রামশীল গ্রামের মৃত হরে কৃষ্ণ বাড়ৈর পুত্র।
পরীক্ষার্থী হরষিত বাড়ৈ জানান, চাকরির জন্য অন্তত একটি সার্টিফিকেট দরকার। তাছাড়াও কারিগরি শিক্ষা নিয়ে ব্যক্তি জীবনে তিনি স্বাবলম্বী হতে পারবেন বলেই পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। যে বয়সে স্কুলে যাবার কথা ছিল, সে বয়সে পরিবারের হাল ধরায় তিনি লেখাপড়া শিখতে পারেননি। যখন বুঝতে পেরেছেন, চতুর্থ শ্রেণির একটি চাকরির আবেদন করতে হলেও অন্তত অষ্টম শ্রেণির একটি সনদপত্র দরকার হয়। সেই শিক্ষা থেকেই তিনি স্কুলে ভর্তি হয়ে নিয়মিত পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। বয়স হলেও পড়া লেখা কোন হাস্যকর ব্যাপার নয়; এই মূল মন্ত্র ধারণ করে তিনি রাজিহার ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার থেকে নিয়মিত ছাত্র হিসেবে কম্পিউটার এ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি বিষয়ে ভর্তি হয়ে চলমান জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। তার প্রবেশপত্রে জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৭৭ইং।
পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শণে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাসের নজর কারেন পরিক্ষার্থী হরষিত বাড়ৈ। ইউএনও বলেন, লেখাপড়ায় যে কোন বয়স নাই, যে কোন বয়সে লেখা পড়া করা যায় তার অনন্য উদাহরণ পরীক্ষার্থী হরষিত বাড়ৈ। জ্ঞান অর্জনে বয়সের চেয়ে নিজের ইচ্ছা শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে হরষিতের লেখাপড়া বর্তমান সমাজ ও দেশের জন্য একটি উদাহরণ। তার থেকে অনেকেরই শিক্ষা নেয়া উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :