মাহাদী আহমেদ : আফ্রিকার দেশ মালাওইর এক আদালত সে দেশে এম. কে. গান্ধীর একটি মূর্তি নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছে। অভিযোগ মি. গান্ধী জীবিত থাকতে বর্ণবাদী ভাষা ব্যবহার করেছেন।
'গান্ধী মাস্ট ফল' নামের একটি আন্দোলনকারী সংগঠন সম্প্রতি মালাওই আদালতে এক আবেদনে অভিযোগ করেছে, "কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে আমরা বলতে পারি এই ধরনের বাক্য ব্যবহারে গান্ধীর প্রতি ঘৃণা এবং বিরাগ প্রকাশিত হচ্ছে।"
এরপর আদালত ঐ মূর্তি নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
ভারতের সাথে এক কোটি ডলারের এক নির্মাণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে ঐ গান্ধী মূর্তি তৈরির কথা ছিল।
এই চুক্তি অনুযায়ী, মালওইর বাণিজ্যিক রাজধানী ব্ল্যানটায়ারে একটি কনভেনশন সেন্টারের নামকরণ হওয়ার কথা ছিল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ঐ নেতার নামে।
স্থানীয় সংবাদপত্র দ্যা সেশন খবর দিচ্ছে, ভারতের উপরাষ্ট্রপতি ভেংকাইয়া নাইডুর এই সেন্টার এবং মূর্তির উদ্বোধন করার কথা ছিল।
কী বলেছেন গান্ধী?
এম. কে. গান্ধী ভারতের স্বাধীনতার নায়ক হলেও আফ্রিকায় তার ২০ বছর ব্যাপী জীবনের নানা দিক নিয়ে সমস্যা রয়েছে।
এই মূর্তি নির্মাণে জনগণের কোন উপকার হবে না বলে যুক্তি দেখিয়ে ৩০০০ মালাওইয়ান এক আবেদনে সই করেছেন।
গান্ধীর বর্ণবাদী পরিচয় তুলে ধরে দু'বছর আগে ঘানার দুই বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক তাদের ক্যাম্পাস থেকে গান্ধী মূর্তি সরিয়ে নেয়ার ডাক দেন।
ভারতের জাতির পিতার লেখা থেকে প্রমাণ তুলে ধরে তারা বলেন, গান্ধী আফ্রিকানদের 'বর্বর অথবা আফ্রিকার আদিবাসী' এবং 'কাফির' বলে বর্ণনা করেছেন।
আগে কাফির শব্দটি কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানদের প্রতি বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ব্যবহার করা হতো।
আফ্রিকা জুড়ে বিক্ষোভ
দু'হাজার পনের সালে এক ব্যক্তি দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি গান্ধী মূর্তির ওপর সাদা রঙ ঢেলে দিয়েছিল।
তবে আফ্রিকায় শুধু মি. গান্ধীর মূর্তি নিয়েই প্রতিবাদ হয়নি।
ছাত্র বিক্ষোভের মুখে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয় ১৯ শতকের ব্রিটিশ উপনিবেশবাদী সিসিল রোডসের একটি মূর্তি সরিয়ে নেয়।
বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, মূর্তিটির মারাত্মক প্রতীকী শক্তি রয়েছে এবং এর মাধ্যমে এমন একজনের গৌরবগাঁথা তুলে ধরা হয়েছে যিনি কৃষ্ণাঙ্গদের শোষণ করেছেন এবং তাদের জমি কেড়ে নিয়েছেন।"- বিবিসি
আপনার মতামত লিখুন :