প্রবীর বিকাশ সরকার : কান্দির পাড় থেকে চাঁদপুর যাওয়ার পথেই পড়ে রামঘাটলা বা রামঘাট নামক একটি পুকুর। ছোট্ট পুকুর। পুকুরের পশ্চিম-উত্তর কোণে অবস্থিত আওয়ামী লীগের জেলা কার্যালয়। কার্যালয়টি একটি পুরনো একতলা দালানবাড়ি। এই রামঘাট পুকুর এবং ভবনটির মালিক ছিলেন মণিশঙ্কর মুখোপাধ্যায় নামে একজন প্রতিপত্তিশালী হিন্দু ব্রাহ্মণের। অবশ্যই অভিজাত ব্যক্তি ছিলেন। সিলেটে তার চা-বাগান ছিলোÑসেটাই ছিলো মূল ব্যবসা। শহরেও তার চা-পাতা বিক্রির দোকান ছিলো বলে প্রবীণ কারো-কারো মুখে শুনেছিলাম।
সম্ভবত রাজগঞ্জ বা রানীর বাজারে। মুক্তিযুদ্ধের আগে মুসলিম লীগের কোনো এক প্রভাবশালী নেতা ভয় দেখিয়ে বিতাড়িত করেন ওপারে। ওপারে গিয়ে মণিশঙ্করবাবু প্রায় উন্মাদ হয়ে যান বলেও শুনেছি। স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে দেনদরবার করেছিলেন হারানো সম্পত্তি ফিরে পাবার জন্য, কিন্তু পাননি। অপরিসীম বেদনা নিয়ে ওপারে গিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেন। আমি যখন ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র তখন মাঝে মাঝে রামঘাটের এই স্তম্ভে হেলান দিয়ে সিগারেট খেতাম। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাও দিয়েছি। রামঘাটের উল্টোদিকে পল্টনদের দ্বিতল বাড়িটি অনেকেরই নজর কাড়তো।
পল্টনরা যখন মার্কেট করে, এখন যেটা মিডল্যান্ড হাসপাতাল সেখানে একটি পজিশন আমি কিনেছিলাম ১৯৯১ সালে, ‘মানচিত্র বইঘর’ করেছিলাম। তখনও রামঘাট এর স্তম্ভটি ছিলো। ২০০৫ সালেও অনেকটা দেবে যাওয়া অবস্থায় দেখেছিলাম। তারপর কবে যে মিলিয়ে গেলো জানি না। এই ছবিটি কবে যে তুলেছিলাম আজ আর স্মরণে নেই। কুমিল্লার কত কিছুই হারিয়ে গেছে এভাবে! ফেসবুক থেকে। সম্পাদনা : রেআ
আপনার মতামত লিখুন :