মাহাদী আহমেদ : যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ শহরে ইহুদিদের ধর্মীয় উপাসনালয় সিনাগগে গুলি করে ১১ জনকে হত্যার ঘটনার পর দেশজুড়ে উপাসনালয়ের স্থানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে কর্তৃপক্ষ।
নিউ ইয়র্ক সিটি, লস এঞ্জেলেস, শিকাগোসহ ফিলাডেলফিয়ায় বাড়তি পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া, শনিবারেই দেশজুড়ে সিনাগগ ও ইহুদি সেন্টারগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।
নিউ ইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস, শিকাগো ও অন্যান্য শহরগুলোর উপাসনালয়ে নতুন কোনো হামলার হুমকি পাওয়া না গেলেও ওই সমস্ত এলাকায় কড়া পাহারায় আছে পুলিশ। নিউ ইয়র্কের উপাসনালয়গুলোতে ভারি অস্ত্রসহ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।
শিকাগোর পুলিশ বিভাগও পরিস্থিতি গভীরভাবে নজরে রাখছে এবং ওই রাজ্যের সব সিনাগগগুলোতে বিশেষভাবে সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে। লস এঞ্জেলেসের উপাসনালয়গুলোতেও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করাসহ কড়া পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হিউস্টনের হ্যারিস কাউন্টির শেরিফ বলেছেন, সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্মকর্তারা গোটা সপ্তাহজুড়েই সিনাগগগুলোর পরিস্থিতির ওপর গভীরভাবে নজর রাখবে। ফিলাডেলফিয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে শহরজুড়ে প্রতিটি সিনাগগ ও অন্যান্য উপাসনালয়ে কর্মকর্তাদের পাঠানোসহ পরিস্থিতি নজরে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ বিভাগ।
সন্দেহভাজন হামলাকারী ৪৬ বছর বয়সী রবার্ট বাওয়ার্সের শনিবার সকালে পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের পিটসবার্গ শহরের ট্রি অব লাইফ সিনাগগ ভবনের ভেতর প্রার্থনারত ইহুদিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বিবিসি জানায়, মার্কিন কৌঁসুলিরা রবার্ট বাওয়ার্সের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মোট ২৯টি অভিযোগ এনেছেন, এর মধ্যে সহিংসতা, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হত্যা, ধর্মীয় চর্চায় বাধা দেওয়ার অভিযোগসহ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে।
তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অপরাধের অভিযোগও দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন কৌঁসুলিরা। দোষীসাব্যস্ত হলে তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিনাগগে হামলাকে ‘বিদ্বেষপূর্ণ হত্যাযজ্ঞ’ বলে বর্ণনা করেছেন। হামলায় চার পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে বাওয়ার্সও আহত হয়েছেন। তার শরীরে একাধিক গুলি লেগেছে, তবে তিনি বিপদমুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বাওয়ার্সের কাছে একটি অ্যাসল্ট রাইফেল ও তিনটি পিস্তল পাওয়া গেছে। হামলায় নিহতদের পরিচয় সনাক্ত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে আটজন পুরুষ ও তিনজন নারী। কোনো শিশু এ হামলায় হতাহত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
হামলার শিকার যারা হয়েছে তাদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দেশের মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠক। সিনাগগের আশেপাশের মানুষ থেকে শুরু করে পিটসবার্গ জুড়ে শত শত মানুষ নিহতদের স্মরণে মোমবাতি মিছিলে অংশ নিয়েছে। - দ্যা গার্ডিয়ান, বিডি নিউজ ২৪
আপনার মতামত লিখুন :