সাব্বির আহমেদ : ছোটবেলায় প্রায়শই মায়ের রান্না দেখতে রান্নাঘরে বসে থাকতেন। টুকটাক নিজেও করতেন। কিন্তু উশখুশ করতেন। কারণ তাড়না ছিল রান্নাকে পেশা হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করবেন। দিনকে দিন রান্নার প্রতি প্রবল ঝোঁক পেয়ে বসে তাকে। রয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢের মনোযোগও বাড়তে থাকে। বলছি রাজধানীর আফলাতুন নাহার'স কিচেনের সত্ত্বাধিকারী আফলাতুন নাহারের কথা।
রোববার এই প্রতিবেদকের সঙ্গে বিশদ আলোচনা হয় সফল রন্ধনশিল্পী আফলাতুন নাহারের। দুই সন্তানের জননী আফলাতুনের গল্পটা একটু ভিন্নভাবেই শুরু। বিয়ের আগেই পারিবারিক ও সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে রান্না করেন। আর এসব রান্নায় স্বাদও পান সবাই। প্রশংসা পান রন্ধন শিল্পে বিভোর আফলাতুন।
বিয়ের পর রন্ধন শিল্পে পুরো মনোনিবেশ করেন তিনি। স্বামীর কাছ থেকেও পেয়েছেন উৎসাহ। পরিবার যুগিয়েছে প্রেরণা। এবার আরেকটু সামনে এগোন ত্রিশোর্ধ্ব আফলাতুন। ঘরে বসে রান্নার ফরমায়েশের কাজ শুরু করেন। হোম কিচেন থেকে বড় বড় ফরমায়েশ পাওয়ার পর বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও Aflatun Nahar’s Kitchen নামে পেইজ খুলেন। ক্রমান্বয়ে পরিচিতি বিস্তৃত হতে থাকে।
নিজেকে রন্ধন পেশায় পাকাপোক্ত করতে প্রফেশনাল শেফ কোর্স করেন আফলাতুন নাহার। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন রেসিপির উপর বেশ জোর দেন তিনি। স্বনামধন্য শেফ টনি খান এবং শেফ ড্যানিয়েল গোমেজের তত্বাবধানে উন্নত রান্নার হাত পাকা করেন।
এবার নিজেই একটি কিচেন দেওয়ার তাগিদ অনুভব করেন। পাশাপাশি অনেকেই তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেন। বর্তমানে আফলাতুন নাহার'স কিচেনের মালিক এই সফল নারী অনেকের কর্মসংস্থানের স্রষ্টা।
এই নারী উদ্যোক্তার মতে, দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হচ্ছে। এই অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করতে রন্ধন শিল্পকে এগিয়ে নেয়া উচিত। তবে শখের বশে নয়, পেশা হিসেবে।
পেশাদার রন্ধনশিল্পী হওয়ার পাশাপাশি কবিতা চর্চাও করেন আফলাতুন নাহার। তিনি বলেন, দেশের বিকাশমান হোটেলশিল্পে প্রচুর দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের প্রয়োজন রয়েছে।নতুন প্রজন্ম এই শিল্পকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করার মাধ্যমে নিজে উদ্যোক্তা হওয়ার পাশাপাশি অনেক লোকের কর্মসংস্থান তৈরীতে অবদান রাখতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :