সাজিয়া আক্তার : জোট-মহাজোটের রাজনীতিতে দর কষাকষিতে নেমেছে ইসলামী দলগুলোও। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আত্মপ্রকাশ ঘটছে নতুন নতুন জোটের। দুই একটি ছাড়া বেশির ভাগ দলই সরকার বা বিরোধী জোটের সঙ্গে যোগযোগ রাখছে। দেশে ৫০টির বেশি ইসলামিক দল থাকলেও নিবন্ধন আছে মাত্র ৯টি দলের। সুত্র : ডিবিসি টেলিভিশন
১৪টি দল নিয়ে আত্মপ্রকাশ করা ইসলামিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের কোনটিরই নিবন্ধন নেই। তাদের দাবি নির্বাচনে বড় কোন জোটে যাচ্ছে তারা। জোটের পরিধি বাড়াতে এরশাদের জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটে ৫৮ দলের বেশকয়েকটি ইসলামী দল হলেও নিবন্ধন আছে মাত্র দু'টির।
নিবন্ধিত অন্য ৭টি ইসলামিক দলের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে দু'টি করে দল রয়েছে। বাকিরা আছে দর কষাকষিতে।
ইসলামি ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবসময় একটা পারস্পরিক আলোচনা, পর্যালোচনা এবং মতবিনিময় হয়, অমরাও সেটাই করছি। সময় বলে দেবে কখন কীভাবে আমাদের ঐক্য হবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে পারি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ক্ষমতার শরীক হতেই বড় দলগুলোর সঙ্গে জোট করতে চাইছে এসব দল।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান বলেন, বড় দলগুলো মনে করে ইসলামিক দলগুলোকে যদি কাছে টানা যায়, তবে এ দলগুলোর সমর্থকরা নৌকা অথবা ধানের শীষে ভোট দেবে। এই কারণে বড় দলগুলো তাদের সঙ্গে ঐক্য করে, রাজনৈতিক আদর্শগত কারণে করে না। আর ইসলামী দলগুলো আসতে চায়, বড় দলগুলোর সঙ্গে থেকে এক ধরনের সুবিধা নেয়ার লক্ষ্যে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, ইসলামি দলগুলোর জোট করতে চাওয়াকে এটা আদর্শিক মিল ধরে নেওয়া যাবে না। এর মধ্যে প্রধান সংশ্লিষ্টতা হচ্ছে ক্ষমতার ভাগিদার হওয়া এবং ক্ষমতার ভাগিদার হওয়ার মধ্যদিয়ে রাজনৈতিক লভ্যাংশ ভাগাভাগি করা।
অন্যদিকে বেশ কয়েকটি ইসলামী দল নিয়ে গঠিত হেফাজতে ইসলাম বলছে, তারা কোনো জোটে থাকবে না। তবে, কওমী মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রিকে মাস্টার্সের সমমান করায় সরকাররের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চলছে তাদের।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোটের হিসেবে বড় দলগুলো ইসলামিক দলগুলোকে সঙ্গে নিলে সাময়িক লাভ হলেও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিতে পড়তে পারে দেশের রাজনীতি। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :