বিবিসি : জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের টেস্ট দল ঘোষণা করা হয়েছে আজ। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্ব দলে ডাক পেয়েছেন নাজমুল অপু ও মোহাম্মদ মিথুন।দলে নতুন মুখ আছেন আরিফুল হক ও খালেদ আহমেদও
তবে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মমিনুল হক বাদে চলতি মৌসুমে প্রথম শ্রেণীর ঘরোয়া ম্যাচে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান ও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী প্রথম ১০ জনের মধ্যে কারো জায়গা হয়নি দলে।
বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এক আলোচিত নাম তুষার ইমরান। চুয়াল্লিশ রান করে গড়ে ১১,০০০ -এর বেশি রান করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। চলতি বছরেই দুটি জোড়া শতক হাঁকিয়েছেন ঘরোয়া লিগের ক্রিকেটে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩৩ ও লিস্ট এ ক্রিকেটে ২৭.৮৭ গড় নিয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে ১১টি টেস্ট ম্যাচ ও ৫৪ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন সাব্বির রহমান। এর আগে মার্শাল আইয়ুবের মতো ক্রিকেটারদেরও জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ বলে বিবেচনা করা হতো, তবে তিনি কেবল তিনটি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন।
চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ৫ জন
ব্যাটসম্যান মোট রান (মোট ম্যাচ/ ইনিংস) রানের গড় শতক অর্ধ শতক
সাদমান ইসলাম ৫৪০ (৪ ম্যাচ/ ৬ ইনিংস) ৯০ ২ ২
তুষার ইমরান ৪৯৯ (৪ ম্যাচ/ ৭ ইনিংস) ৭১.২৮ ৩ ১
সৌম্য সরকার ৩৬২ (৪ ম্যাচ/ ৬ ইনিংস) ৭২.৪০ ১ ৩
মিজানুর রহমান ৩৩৬ (৪ ম্যাচ/ ৫ ইনিংস) ৬৭.২০ ২ ০
রনি তালুকদার ৩২১ (২ ম্যাচ/ ৪ ইনিংস) ১০৭ ১ ১
চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী৫ জন
বোলার ম্যাচ মোট উইকেট সেরা বোলিং
নাইম হাসান ৪ ২৩ ৮/১০৬
আরাফাত সানী ৪ ২১ ৭/৫৭
ফরহাদ রেজা ৪ ১৬ ৪/২৬
সোহাগ গাজি ৪ ১৬ ৫/৪০
মনির হোসেন ৪ ১৩ ৫/২৪
কারা সুযোগ পেয়েছেন টেস্ট দলে আর কারা নেই?
বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের দলে ডাক পেয়েছেন চারজন নতুন মুখ আরিফুল হক, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, মোহাম্মদ মিঠুন ও নাজমুল ইসলাম অপু। মুস্তাফিজুর রহমানও ফিরেছেন টেস্ট দলে।
বাদ পড়েছেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান, দুই পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি ও রুবেল হোসেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটকে কতটা গুরুত্বের সাথে নেয় জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচকরা?
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বিবিসি বাংলাকে বলেন, "ঘরোয়া ক্রিকেটকে গুরুত্বের সাথে নেয়া হয়ে থাকে। তবে একটা ক্রিকেটারের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার সামর্থ্য কতটা আছে ও বাংলাদেশকে অন্তত পাঁচ বছর যাতে সার্ভিস দিতে পারে এটা ভাবা হয় দল গড়ার সময়।"
তুষার ইমরান সম্পর্কে তিনি বলেন, "এ দলের ক্রিকেটে তুষার ইমরানকে সুযোগ দেয়া হয়েছিল সেখানে তুষার ভালো করতে পারেনি।"
"বাংলাদেশ ক্রিকেটের পরিকল্পনা হয় একটু বছর হিসাব করে। তার মানে এই না তুষার ইমরানের ঘরোয়া ক্রিকেট আমরা খেয়াল রাখি না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টেকনিক্যাল দিকটাও আমরা লক্ষ্য রাখি।"
ক্রিকেটার নেয়ার সময় তিন বছরের একটা পরিকল্পনা করা হয়ে থাকে। ম্যানেজমেন্ট ও সিলেক্টর মিলে এটা তৈরি করেন।
মি: নান্নু বলেন, "এনসিএলের প্রথম থেকে তৃতীয় রাউন্ড পর্যন্ত দেখলে দেখবেন কতগুলো ক্রিকেটার ডাবল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি করছে অহরহ সেক্ষেত্রে এসব বিবেচনা করে স্কোয়াড তৈরি তো কঠিন। আন্তর্জাতিক সম্ভাবনার কথাই আমরা সবার আগে মাথায় রাখি।"
সেক্ষেত্রে স্বভাবতই প্রশ্ন আসে যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেই শিখতে হবে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের?
ক্রিকেট দলের এই নির্বাচক বলেন, "ঘরোয়া ক্রিকেটের ভিত্তি শক্ত না হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করা কঠিন। প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট বা প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট দেখে আমরা খেলোয়াড় নেই।"
শেষ ওয়ানডের জন্য স্কোয়াডে সৌম্য সরকার, কী আছে ফজলে মাহমুদের ভাগ্যে?
বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে জয় পেয়ে সিরিজ নিশ্চিত করেছে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল।
তবে ৩০ বছরে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া ফজলে মাহমুদ টানা দুই ম্যাচে কোনো রান না করেই ফিরে গিয়েছেন সাজঘরে। এদিকে তৃতীয় ওয়ানডের স্কোয়াডে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারকে।
এটা কী ফজলে রাব্বির মতো ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ সময় কাটিয়ে আসা ক্রিকেটারদের ওপর বাড়তি চাপ এনে দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বিবিসি বাংলাকে বলেন, ফজলে রাব্বির পারফর্ম করতে না পারাটা দুর্ভাগ্যজনক।
ফজলে রাব্বির রান করতে না পারা ও সৌম্য সরকারের সুযোগ পাওয়া নিয়ে মি: নান্নু বলেন, "আমি এমন দুর্ভাগ্য দেখিনি যে পরপর দু ম্যাচে রান করতে না পারা, তবুও ডমেস্টিক পারফরম্যান্স ভালো ওর, ক্রিকেট খেলায় কেউই বলে কয়ে রান করতে পারে না।"
সৌম্যকে ডাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, "সৌম্য সরকারকে ডাকার একমাত্র কারণ ও আমাদের পুলের ক্রিকেটার সামনে বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে ২৪ জন ক্রিকেটারের একটা পুল গড়া হয়েছে।"
আপনার মতামত লিখুন :