শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, ০৯:০৯ সকাল
আপডেট : ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, ০৯:০৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জেলা সদরে শক্তিশালী প্রার্থী দেবে আ.লীগ

ইনকিলাব : আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ করছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। পাশাপাশি নৌকার মনোনয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে শরিক দলগুলোর প্রার্থীরা। বর্তমান এমপিসহ প্রত্যেক আসনেই পাঁচ থেকে সাতজন প্রার্থী নিয়মিত প্রচারণা চালাচ্ছেন। আগামীতে জোট শরিকদের অনেক আসনে ছাড় দেয়া হলেও দল ও সংগঠনের স্বার্থে আগামীতে জেলাগুলোর সদর আসনে শক্তিশালী প্রার্থী দেবে আওয়ামী লীগ। শরিক দলের কাউকে সদর আসনে ছাড় দেবে না তারা।

কারণ যেসব জেলায় সদরের এমপি দলের হলেও সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট নয় অর্থাৎ কোন পদে নেই এবং শরিকদের এমপি যেসব জেলায় সংগঠনের অবস্থা নাজুক। এইসব কারণে দলের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট নয় এমন প্রার্থীদেরকেও সদরে মনোনয়ন দেয়া হবে না। প্রার্থীদের সাংগঠনিক পদ, দক্ষতা, এলাকার অবস্থান, প্রভাব, জনপ্রিয়তা দেখে মনোনয়ন দেয়া হবে। এছাড়া জয় নিশ্চিতে যথাযত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ জেলা সদর নিয়ন্ত্রণ মানে পুরো জেলা নিয়ন্ত্রণে থাকা।

দলের নীতি-নির্ধারণী সূত্রে এসব কথা জানা গেছে। এছাড়া তৃণমূল সংগঠনের তরফ থেকে অনেক আগ থেকেই এ দাবিটি করে আসছিল নেতারা। আওয়ামী লীগ মনে করছে, যেকোন জেলার নিয়ন্ত্রণ করা হয় জেলা সদর থেকে। এখানইে সরকারি সকল অফিস থাকে যেমন-ডিসি-এসপি অফিস, হাসপাতাল, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ। এছাড়া রাজনীতির মূল স্থান জেলা সদর। সদর নিয়ন্ত্রণে থাকা মানে পুরো জেলা নিয়ন্ত্রণ থাকা। সেজন্য আগামী নির্বাচনে সদর আসন শক্তিশালী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হবে যেন সে প্রার্থী জয়লাভ করার মধ্য দিয়ে পুরো জেলার নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়।

এছাড়া প্রচার প্রচারণার ঢেউ উঠে সদরে এবং আন্দোলন হয় সদরে। সকল উপজেলার জনগণ সদরে আসে। সদর নিয়ন্ত্রণে থাকলে এই ঢেউ পুরো জেলাতেই পড়ে। তাই সদর আসনে দুর্বল বা অসাংগঠনিক কাউকে মনোনয়ন দিলে পুরো জেলাতেই তার প্রভাব পড়ে। সে কারণে দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সংগঠন বোঝে, ত্যাগী, জেলার ভাল পদে আছে, জনপ্রিয়, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ, প্রভাশালী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হবে। কারণ সংগঠনের বাইরে কাউকে মনোনয়ন দিলে সংগঠনের সঙ্গে বিরোধ তৈরী করে এমপি। নিজস্ব বলয় তৈরী করে ফলে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা তার কাছে ভীড়তে পারে না। জেলা সংগঠন দুর্বল হয়ে যায়।

বর্তমানে এমন অনেক জেলায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। পাশাপাশি জোট শরিক ও জাতীয় পার্টির আসনগুলোতেও আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে বেকায়দায় রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা যা বরাবরই কেন্দ্রীয় সংগঠনের কাছে তুলে ধরছেন।
বিশেষ সূত্র বলছে, আগামী নির্বাচনে বিএনপির অবস্থান না থাকলে শরিকদের বেশি আসনে ছাড় দেয়া লাগবে। ফলে সংসদে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব কমে যাবে। কিন্তু পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ যেন না কমে এবং স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠন যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় তাই সদরের আসনগুলোতে দলের বাইরে শরিকদের বা সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কাউকেও মনোনয়ন দেয়া হবে না।
সূত্র জানায়, বর্তমানে দলের অনেক এমপি রয়েছেন যারা ব্যবসায়ী, নায়ক, গায়ক, খেলোয়াড় থেকে সংসদে এসেছেন। তাদের অনেকেরই এলাকায় অবস্থান ভালো না এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। দলের বাইরে আলাদা বলয় তৈরী করে রেখেছেন, আগামী নির্বাচনেও অনেক ব্যবসায়ী, নায়ক, গায়ক, খেলোয়াড় মনোনয়ন চান। তাই সংগঠনকে বাঁচানোর স্বার্থে তৃণমূলের তরফ থেকে সদর আসনে কেন্দ্রের কাছে দলের ত্যাগী নেতাদের মনোনয়নের জন্য অনুরোধ করছেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহি সদস্য, ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার সভাপতি ও সদর আসনের সংসদ সদস্য র আ ম ওবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী বলেন, জেলা সদর একটি জেলার সবকিছু। সদর ঠিক তো পুরো জেলা ঠিক। নিজের কথা উল্লেখ করে বলেন, আগে ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় ওয়াহাবিদের অনেক প্রভাব ছিল। এছাড়া সীমান্ত এলাকা হওয়া জঙ্গিবাদেরর প্রভাব ছিল। কিন্তু এখন তা নেই। এটা সদরের এমপি হিসেবে ডিসি, এসপিকে বলে সকল পদক্ষেপ নেয়ার ব্যবস্থা করেছি, শক্তভাবে তা করেছি। তিনি আরো বলেন, প্রত্যেক জেলা সদরের এমপি শক্তিশালী এবং সাংগঠনিক হতে হবে। তাহলে সকল বিষয় সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সরকারের উন্নয়ন জেলার প্রত্যেক পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হয়।
জানা যায়, কুমিল্লা-৬ সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি করার পর সংগঠন শক্তিশালী হয়েছে বহুগুণ। কিন্তু এর আগে নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দলকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়েছে। মেয়র নির্বাচনে দলের প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে।
নেত্রকোনা-২ (সদর) আসনের এমপি যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। পুরো জেলায় আওয়ামী লীগের ভোট বেশি হলেও সংগঠনের অবস্থা নিতান্তই করুণ। দলের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই জেলার নেতাদের কাছে। এর কারণ হিসেবে নেতাকর্মীরা মনে করেন, সদরের এমপি আরিফ খান জয়ের সঙ্গে জেলা নেতাদের দ্ব›েদ্বর কারণে এই করুণ অবস্থা। এ বিষয়ে জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক এবং দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী শামসুর রহমান লিটন (ভিপি লিটন) বলেন, পুরো জেলাতেই সংগঠনের অবস্থা করুন। জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বয়স হয়েছে। আবার উন্নয়নের দিক থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে। উপজেলার অবস্থাও সদরের চেয়ে অনেক ভাল। যারা সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় তাদের এবার মনোনয়ন দিলে সংগঠন বলতে কিছু থাকবে না নেত্রকোনায়। এছাড়া রাজশাহী-২ সদর আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি থাকায় কিছুটা বেকায়দায় রয়েছে আওয়ামী লীগ যা বিগত বিএনপির মেয়র থাকাকালীন অবস্থায় হারে হারে টের পেয়েছিল। পঞ্চগড় জেলাতেও আওয়ামী লীগের অবস্থা খারাপের দিকেই যাচ্ছে কারণ পঞ্চগড়-১ সদর আসনের এমপি জাসদ (আম্বিয়া) এর নাজমুল হক প্রধান। এছাড়া ক্ষমতার ১০ বছরেও কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের অবস্থা নাজুক। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, প্রত্যেকটি বিষয় চিন্তা ভাবনা করেই এবার দলের মনোনয়ন দেয়া হবে। সংগঠন যেন ঠিক থাকে সে বিষয়ে প্রাধান্য বেশি দেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়