রফিক আহমেদ : গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র-টিইউসি- এর সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেছেন, সরকার জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে গার্মেন্টস মালিকদের পক্ষ নিয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির নামে সরকার ও মালিক মিলে গ্রার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। মূলত ভোটের আগে মালিকদের খুশী করতে এ উপটোকন দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
জলি বলেন, আমরা ২০১৬ সালের মে মাস থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ১৩ সংগঠন ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা করার দাবিতে সমাবেশ করেছি। নারায়নয়গঞ্জ, আশুলিয়া, উত্তরা, বাড্ডা, রামপুরা, গাজীপুর ও চট্টগামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে টিইউসি বড় সমাবেশ করেছে। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আমরা শ্রম মন্ত্রণালয় ঘেরাও, মজুরি বোর্ডে কয়েক দফা অবস্থান ধর্মঘট, প্রত্যেকটি গার্মেন্টস এলাকায় পদযাত্রা ও সমাবেশ পর্যায়ক্রমে করে আসছি।
টিইউসির নেত্রী বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে অনেকগুলো সমাবেশ করেছি। এছাড়াও ১৬ হাজার টাকা মজুরিব দাবিতে কারখানাভিত্তিক আন্দোলন, কর্মবিরতি ও আন্দোলন এখনো অব্যাহত আছে। সরকারের পক্ষ থেকে মজুরি বোর্ড গঠন করার পর বোর্ডের যারা ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক আপত্তি জানিয়েছে টিইউসি। মজুরি বোর্ডের বিলম্বিত প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মিছিল-সমাবেশ হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি সর্বনিম্ন ৯৩.৪৬ ডলার। এটা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের তুলনায় খুবই কম। কম্বোডিয়ায় ১৮২ ডলার, ভিয়েতনামে ২৫০ ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৭৫ ডলার, তুরস্ক ৫০০ ডলার, ইন্দোনেশিয়ায় ২৪৭ ডলার, ফিলিপাইনে ২৬৯ ডলার, ভারতে ১৩৬ ডলার, চীনে ৪৯১ ডলার ও পাকিস্তানে ১১৯ ডলার করে গার্মেন্টস ন্যূনতম মজুরি শ্রমিকরা পাচ্ছেন বলে জানা যায়।
তিনি আরো বলেন, শ্রমমন্ত্রী ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার পর শ্রম মন্ত্রণালয়ের মজুরি বোর্ড খসড়া ন্যূনতম মজুরির গেজেট প্রকাশ করে। আমরা এ ঘোষিত মজুরির বিরুদ্ধে শ্রম মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে আপত্তিপত্র প্রদান করেছি। এছাড়াও বিভিন্ন গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি পালন করেছি। ২০১৭-১৮ সালে মে মাসেও শ্রমিকদের ১৬ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে প্রত্যেকটি গ্রার্মেন্টস এলাকায় দেশের অর্থনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়, সংহতি ও সমাবেশ করেছি।
আপনার মতামত লিখুন :