স্মৃতি খানম : কুড়িগ্রামে বুড়ি তিস্তা নদীতে প্রথমবারের মতো কচুরিপানার উপর ভাসমান বেডে চাষ হচ্ছে লাউ, বরবটি, শিম, করলা, ঢেঁড়স, কলমি শাক, ধনেপাতা, পাট শাক ও লালশাক। এতে ভূমিহীন ব্যক্তিরা এসব চাষ করে লাভবান হচ্ছেন আর ক্রেতারা পাচ্ছেন রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মুক্ত শাকসবজি।
উলিপুর উপজেলা সদরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বুড়ি তিস্তা নদীতে সারা বছর কচুরিপানা ভরে থাকে। গত মৌসুমে এক কৃষি শ্রমিক সিলেটের হাওর অঞ্চলে কাজ করতে গিয়ে কচুরিপানার ওপর ভাসমান বেডে শাকসবজি চাষ দেখে এসে তার গল্প শোনান। এতে বলদিপাড়ার আজাদুন্নবী ও রাশেদুন্নবী আগ্রহী হয়ে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে কচুরিপানার ওপর ভাসমান বেডে শাকসবজি চাষ শুরু করেন। তাদের ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ১ মিটার প্রস্থের ১৬টি বেডে আবাদে খরচ হয়েছে ৬ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে ২ হাজার টাকার শাক বিক্রি করেছেন। ফলে ভালো লাভের আশা করছেন তারা। তাদের এই সাফল্য দেখে প্রতিবেশিরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
কৃষকরা জানান, আমাদের এখানে ১৬ টা বেড আছে, এরমধ্যে লালশাক, লাউ, বরবটি, করলা ধনিয়া পাতা ও সরিষা আছে।
অন্য এক কৃষক জানান, কচুরিপানার ওপর শাক সবজি হয় এই প্রথম হয়। আর এখানে সারও লাগে না। সেই সাথে ক্ষেতেও সুস্বাদু।
এই আবাদ বিকল্প আয়ের পথ খুলে দেয়ায় মানুষের মধ্যে আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য এ পদ্ধতির চাষের সম্প্রসারণ চাচ্ছেন স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি।
কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিছুর রহমান বলেন, এখানে শাক সবজি খুবই সুন্দর আবাদ হয়েছে। সেই সাথে অনেকে কৃষকই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।
কৃষি ককর্মকর্তা জানান,ভাসমান বেডে শাকসবজি আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের উলিপুর অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো.আব্দুল গাফ্ফার বলেন, আমরা ভাসমান বেডে শাকসবজির আবাদের জন্য কৃষকদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি। সেই সাথে এটি উলিপুর উপজেলার জন্য সফল প্রযুক্তি। এবং অনেক কৃষক এখানে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
এ অবস্থায় ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা কার্যক্রমের আওতায় উপজেলার বাকেরেরহাট, নারিকেলবাড়ী, ভদ্রপাড়া ও পাঁচপীর এলাকায় ২০জন কৃষক ৮৪টি ভাসমান বেডে শাকসব্জি চাষ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।সূত্র: সময় টেলিভিশন
আপনার মতামত লিখুন :