শিরোনাম
◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু

প্রকাশিত : ২০ অক্টোবর, ২০১৮, ০৩:০১ রাত
আপডেট : ২০ অক্টোবর, ২০১৮, ০৩:০১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিচার শুরু হচ্ছে আরও ৯ মামলার

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে থাকা ৩৬ মামলার মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে তাকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার শেষে রায়ের দিনও আদালত ঠিক করেছে আগামী ২৯ অক্টোবর। বাকি ৩৪ মামলার মধ্যে গ্যাটকো, নাইকো ও বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলাসহ ৯ মামলা এখন বিচার শুরুর অপেক্ষায়।

এর মধ্যে অভিযোগ গঠন পর্যায়ে তিনটি ও পুলিশ প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে বাকি ছয়টি মামলা। এদিকে খালেদা জিয়ার এসব মামলা নিয়ে তার আইনজীবীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা গেছে। আর এসব মামলা নিয়ে বিএনপি যেন রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা না করতে পারে সে দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে আওয়ামী লীগও। মামলার ৯টি হচ্ছে— গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা, নাইকো দুর্নীতি মামলা, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা, গুলশানে বোমা হামলার অভিযোগে মামলা, খুলনায় অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা, সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে ‘মিথ্যা’ মন্তব্য করায় ঢাকায় মানহানির দুই মামলা, ৪২ জনকে হত্যার অভিযোগে মামলা এবং হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে পঞ্চগড়ে দায়ের করা একটি মামলা। এই ৯ মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া  বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর কোনো আইনি ভিত্তি নেই। শুধু রাজনৈতিক কারণেই তার বিরুদ্ধে এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আইনি ভিত্তি থাকুক আর না থাকুক, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর ইচ্ছে মতোই সব আদেশ আসছে। গায়ের জোরেও আদালত অনেক আদেশ দিচ্ছে।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৩৬টি মামলার মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় হয়েছে। আর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারও শেষ হয়ে এখন রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। ১৫টি মামলার কার্যক্রম হাই কোর্টের আদেশে স্থগিত রয়েছে। বাকি মামলাগুলোর মধ্যে বলা চলে ৯টি মামলা বিচার শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি বলেন, এসব মামলার সবই রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য করা। তাই মামলাগুলোও দুর্বল। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শ ম রেজাউল করিম  বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। বিচারক নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়নসহ বিচার বিভাগের সব কিছুই সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত। তাই সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করছে, এমন কথা বলার কোনো ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ ও খুনিদের আইনিভাবে বাঁচাতে না পেরে এখন তারা রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্যই এমন বক্তব্য দিচ্ছে। অপরাধ যে করবে তার বিচার হবে, আইন সবার জন্য সমান। তাই এসব অযাচিত মন্তব্য না করতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের প্রতি অনুরোধ জানান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক এ সম্পাদক।

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা : ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ে গ্লোবাল অ্যাগ্রো ট্রেড কোম্পানি লিমিটেডকে (গ্যাটকো) ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া ও তার ছোট ছেলে (প্রয়াত) আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে আসামি করে এ মামলাটি করা হয়। রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী। মামলায় গ্যাটকোকে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকা ক্ষতির অভিযোগ করা হয়। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে।

নাইকো দুর্নীতি মামলা : ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলাটি করা হয়। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার নয় নম্বর বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা : দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় এ মামলা করা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার দুই নম্বর বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগ গঠনের জন্য রয়েছে।

গুলশানে বোমা হামলার অভিযোগে মামলা : ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনের জন্য গুলশানে সমবেত হয়। পরে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় ঘেরাও করার জন্য রওনা হলে সেই মিছিলে বোমা হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় খালেদা জিয়া, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, খন্দকার মাহবুবুর রহমানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা ইসমাইল হোসেন। মামলাটি বর্তমানে পুলিশ প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

খুলনায় অগ্নিসংযোগের মামলা : খুলনার ফুলতলা উপজেলায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়। ২০১৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ বাদী হয়ে ফুলতলা থানায় খালেদা জিয়াসহ মোট ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ৬০-৭০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। বর্তমানে মামলাটি খুলনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের অপেক্ষায় রয়েছে।

জয়কে নিয়ে ‘মিথ্যা’ মন্তব্য করায় মানহানির দুই মামলা : শ্রমিক দিবসে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে ‘মিথ্যা’ বক্তব্য দেওয়ায় মানহানির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। এ মামলাটি পুলিশ প্রতিবেদন পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের অ্যাকাউন্টে ৩০ কোটি ডলার রয়েছে বলে বক্তব্য দিয়ে তার সম্মানহানি করার অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩ মে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ১ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’-এর মুরাদনগর উপজেলা কমিটির সভাপতি শরিফুল আলম চৌধুরী। কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।

৪২ জনকে হত্যার অভিযোগে মামলা : ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ২০-দলীয় জোটের লাগাতার আন্দোলনের সময় ৪২ জনকে হত্যার অভিযোগ এনে ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পুলিশের প্রতিবেদন পর্যায়ে রয়েছে।

হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে পঞ্চগড়ে মামলা : ২০১৫ সালে বিএনপির অবরোধের সময় পেট্রলবোমায় মানুষ হত্যার অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পঞ্চগড়ে মামলা দায়ের করেন বোদা উপজেলার আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহাগ। মামলায় পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ হত্যা, নানাভাবে জানমালের ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি রাষ্ট্রদ্রোহের মতো অপরাধ করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। এ মামলাটি বর্তমানে পুলিশ প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়