আদম মালেক : চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে(জুলাই আগস্ট) বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১০ কোটি ৭০ লাখ ডলারে। গেল বছরের এই সময় ঘাটতি ছিল ১৭৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার যা গত বছরের এই সময়ের চেয়ে ৩৪ কোটি ১০ লাখ ডলার বেশী। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
বাণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধির পেছনে বিভিন্ন বড় প্রকল্পের সরঞ্জাম আমদানির কথা বলেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর।
এছাড়া বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণেও বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-অগাস্ট সময়ে ৮৮২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৬৭১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এ হিসাবে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
তবে সেবা বাণিজ্যে ঘাটতি কমে ৩৯ কোটি ডলার হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ৭৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার ছিল। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসম্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ডলার।
সাধারণভাবে কোনো দেশের নিয়মিত বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতি বোঝা যায় চলতি হিসাবের মাধ্যমে। আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য নিয়মিত আয়-ব্যয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এখানে উদ্বৃত্ত হলে চলতি লেনদেনের জন্য দেশকে কোনো ঋণ করতে হয় না। আর ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে ঋণ নিতে হয়।
তবে বিদেশি বিনিয়োগ ও বিদেশি সহায়তা ছাড়ের পরিমাণ বাড়ায় চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-অগাস্ট) সময়ে সরকারের আর্থিক হিসাবে ভালো উদ্বৃত্ত তৈরি হয়েছে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে যেখানে কোটি ৪০ কোটি ২০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল, এবার একই সময়ে সেই উদ্বৃত্ত ৪৭ কোটি ৩০ লাখ ডলাওে উন্নীত হয়েছে।
বাণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. মির্জা এ বি আজিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের আমদানি প্রবৃদ্ধি বেশী রপ্তানী প্রবৃদ্ধি কম। এ কারণেই বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। আবার আমদানির নামে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচারের কারণেও বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তাই অর্থ পাচারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের যৌথ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কঠোরতা আনতে হবে। পাশাপাশি পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধির মাধ্যমে রপ্তানী বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
সম্পাদনা-সোহেল রহমান
আপনার মতামত লিখুন :