শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৮ অক্টোবর, ২০১৮, ০৪:১৬ সকাল
আপডেট : ১৮ অক্টোবর, ২০১৮, ০৪:১৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মেসওয়াকের যতো ফজিলত

আমিনুল ইসলাম হুসাইনী : সুস্থ সবল দাঁত এবং অন্যান্য রোগ থেকে বেঁচে থাকতে নিয়মিত দাঁত মাজার বিকল্প নেই। এখন কথা হচ্ছে, কী দিয়ে দাঁত মাজবেন? দাঁত মাজার জন্য বহুল প্রচলিত দু’টি মাধ্যম হলো ব্রাশ ও মেসওয়াক। তো আপনি কোনটি ব্যবহার করবেন? ব্রাশ না মেসওয়াক? আসুন জেনে নিই, দাঁতের যতেœ কোনটি বেশি উপকারী।

ডেন্টিস্টরা বলেন, ব্রাশের মাধ্যমে দাঁত মাজা যদিওবা আধুনিকতার অনুসরণ, তথাপি তা অনেক সময়ই ভুল ব্যবহারে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই যেমন- দীর্ঘদিন একই ব্রাশ ব্যবহার করলে ব্রাশে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া দাঁত ও মাঢ়িতে প্রদাহের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আবার কখনো কখনো জোরে চাপ পরার কাণে দাঁতের এনামেলের আস্তর ক্ষয় হয়ে দাঁতের গোড়ার সংবেদনশীলতা বাড়ায়।

অপরদিকে ঐতিহ্যের মহিমায় সমুন্নত সুন্নাত মেসওয়াকে রয়েছে অনন্য উপকারিতা। বিভিন্ন গাছের ডালে তৈরি এই মিসওয়াকে রয়েছে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান। এই যেমন, ট্রাইমিথাইল অ্যামিন, সালভাডোরাইন, অ্যালকালয়েড, ফ্লোরাইড, সিলিকা, সালফার, ভিটামিন সি, ফ্লেভোনয়েডস এবং স্টেরলস পদার্থ। তাছাড়া মেসওয়াকে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। যা শরীরের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয়।

মেসওয়াকের আশগুলো খুব নরম এবং মসৃণ হওয়ায় দাঁতের জন্য তা বেশ আরামদায়কও। নিয়মিত মেসওয়াক করলে মুখের ভেতর সৃষ্ট হওয়া ক্ষত বা ঘা দূর দূর হয়। এর আরেকটি উপকার হলো মুখের দূর্গন্ধ দূর করা। এতো গেলো বিজ্ঞানের থিওরি। এবার আসুন দেখি মেসওয়াকের গুরুত্বে ইসলাম কী বলে। মেসওয়াক রাসূল (সা.) এর একটি অনন্য সুন্নাহ। রাসূল সা. আজীবন এটিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। এমনকি তিনি ইন্তেকালের পূর্বেও মেসওয়াক করেছিলেন।

ইসলামের দৃষ্টিতে মেসওয়াক যে কতোটা গুরুত্ববহ তা বুঝে আসে প্রত্যেকটি হাদিসের কিতাবে মেসওয়াক নামক স্বতন্ত্র অধ্যায় দেখেও। আর স্বয়ং রাসূল (সা.) তো বলেই গেছেন, ‘আমার উম্মাতের উপর যদি কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে তাদের প্রত্যেক সালাতের সময় মেসওয়াক করার নির্দেশ করতাম।’ (বুখারি : ৮৮৭, মুসলিম : ৫৮৯)

আল্লামা ইবনে হাজার রহ. মোনাব্বেহাত কিতাবে মেসওয়াকের বিশটি উপকারিতা উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে সর্ব নিম্ন উপাকারিতা হলো ময়লা দূর করা, আর সর্বোচ্চ উপকারিতা হলো মৃত্যুর সময় কালেমা স্মরণ হওয়া। এজন্যই হযরত আবু দারদা রা. বলেন, তোমরা নিজেদের জন্যে মেসওয়াক করা অপরিহার্য করে নাও এবং এ ব্যাপারে উদাসীন হয়ো না। কেননা মিসওয়াকে রয়েছে চব্বিশটি উপকারিতা। তার সবচেয়ে বড় ১০ টি উপকার হল, ১. মেসওয়াক করলে আল্লাহ তা’আলা সন্তুষ্টি হন ২. নামাযের সওয়াব সাতাত্তর গুণ বৃদ্ধি পায়। ৩. স্বচ্ছলতা আসে। ৪. মুখ সুঘ্রাণ হয় ৫. দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়। ৬. মাথা ব্যথা সেরে যায়। ৭. চোয়ালের ব্যথা দূর হয়। ৮. ফেরেশতাগণ মোসাফাহা করেন। ৯. চেহারা উজ্জ্বল হয়। ১০. দাঁত উজ্জ্বল হয়।

এছাড়াও মেসওয়াকে টুথপেস্টের প্রয়োজন হয় না এবং তা সহজেই সাথে রাখা যায়। ফলে যখনই কোনো খাবার গ্রহণ করা হয়, তখনই দাঁত পরিস্কারে এটি ব্যবহার করা যায়। ব্রাশ করার মধ্যেও যে কোনো উপকার নেই, তা কিন্তু না। উপকার অবশ্যয়ই আছে। তবে মেসওয়াক অপেক্ষা কম। তাছাড়া ব্রাশের মাধ্যমে দাঁত পরিস্কারের সুন্নাতটুকু আদায় হলেও নবীজির সুন্নাহের অনুসরণ হয় না। তারপরও যারা দাঁত মাজায় ব্রাশ ব্যবহারেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তারা ব্রাশ ব্যবহার করুন, কোনো বাধা নেই। তবে ব্রাশ ব্যবহারে সঠিক নিয়মের প্রতি লক্ষ্য রাখুন। আর পাঁচ ওয়াক্তের নামাজের আগে অবশ্যই মেসওয়াক ব্যবহার করুন। এতে দাঁতের যেমন যতœ হবে, তেমনি পরকালের পূণ্যও হবে।

লেখক : ইমাম ও খতিব, কসবা রেলস্টেশন রোড জামে মসজিদ। কসবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়