আশিস গুপ্ত, নয়াদিল্লি: জনবহুল রাস্তায় দুরন্ত গতিতে গাড়ি চালিয়ে একের পর এক পথচারীকে পিষে দিচ্ছে কোনও আততায়ী, অথবা ব্যস্ত সময় রেল স্টেশনে বা সড়কের মাঝেই এলোপাথাড়ি ছুরির ঘায়ে হত্যার ধ্বংসলীলায় মেতে উঠেছে মুখে মাস্ক পরা কোনও অজ্ঞাতপরিচয়। বিদেশে এই ধরণের ঘটনা প্রায়ই খবরের শিরোনামে ওঠে।
সন্ত্রাসের এই নয়া পদ্ধতির নাম ‘লোন উল্ফ’। শুধু বিদেশের মাটিতে নয়, এই হামলার বীজ এ বার ছড়িয়ে পড়তে পারেভারতের মাটিতেও। উৎসবের মরসুমে এমনই সতর্কবার্তা দিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। ভারতের মতো জনবহুল দেশে এই ধরণের জঙ্গি হানা হলে তার পরিণতি ভয়ানক হবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মাত্রা ছাড়াবে। মৃত্যুর সংখ্যা হবে অগুন্তি।
দিল্লির কাছেই গুরুগ্রামে ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি)-র বার্ষিক অনুষ্ঠানে এমনটাই জানিয়েছেন রাজনাথ।‘লোন উল্ফ’ অর্থাৎ একক জঙ্গি হামলা। নাশকতার এই নয়া পন্থায় রীতিমতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে জঙ্গি শিবিরকে। এমনটাই মত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার। সম্প্রতি লন্ডন ও নিউ ইয়র্কে এ ধরনের ‘লোন উল্ফ’ হামলা উদাহরণ অসংখ্য। এই ধরণের সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য প্রথমেই বেছে নেওয়া হয় রাজ্যের কোনও জনবহুল শহরের ব্যস্ত মোড়কে বা রেল স্টেশন অথবা মেট্রো স্টেশনকে। তার পর আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে আক্রমণ চালানো হয় পথ চলতি মানুষের উপর।
রাজনাথের মতে, দিন দিন এই ধরণের একক জঙ্গি হামলা বা ‘লোন উল্ফ’-এর পদ্ধতিতেও নিত্য নতুন কৌশন আনছে জঙ্গিরা। সেটাই সবচেয়ে চিন্তার বিষয়।রাজনাথের কথায়, “এই ধরণের সন্ত্রাসের মোকাবিলা করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।” গোয়েন্দা সূত্রে খবর, একক জঙ্গি হামলা কখন এবং কী ভাবে হবে তার কোনও আগাম বার্তা পাওয়া সম্ভব হয় না। তাই সন্ত্রাস রোখার সময়টুকুও মেলে না। এটাই এই হামলার অন্যতম ট্রিক। তাই দেশের সব রাজ্যের পুলিশকে সন্ত্রাস দমনে আধুনিক হাতিয়ার ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ।
তাঁর কথায়, “সন্ত্রাস তো শুধু দেশের গণ্ডিতে আটকে নেই, এটা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বেই। তাই যে কোনও রকম হামলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়াটাও দরকার।”ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে জামাত-উল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর চার জঙ্গি নেতা। এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার।
তাদের নাম মহম্মদ সালাউদ্দিন, মহম্মদ জাহিরুল মহম্মদ রাকিব ও মহম্মদ রিয়াজ আলি চৌধুরী। বাংলাদেশ থেকে এসে তারা আস্তানা গেড়েছে উত্তর দিনাজপুরে দিনহাটার এক যৌন পল্লীতে। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, গোটা রাজ্যেই নাশকতার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ওই চার নেতা উত্তরবঙ্গের ডেরা থেকেই রাজ্য জুড়ে নাশকতা চালাতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :