রক্সী খান, মাগুরা : মহাম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর বিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্ত্বরের লক্ষাধিক টাকা দামের গাছ ও গাছের ডাল কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বিক্রয় করে দিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মঙ্গলবার দুপুরে খবর পেয়ে সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে দেখা যায় গাছ কাটার এই চিত্র। এসময় কর্তনকৃত বড় কয়েকটি মেহগনী গাছ ভ্যানে করে দ্রুত নিয়ে যেতে দেখা যায় ব্যাপারিদের ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বললে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় বিদ্যালয় পরিচালনার কোন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করেন না। এবং দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি স্কুলের সৌন্দর্য বর্ধন ও ছায়াদানকারী এ সকল গাছ বিক্রি করেছেন।
একাধিক প্রজাতির গাছের ছায়ায় বিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি নয়নাভিরাম দৃশ্যে পরিবেষ্ঠিত। ক্লাসের অবসরে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা ছায়া শিতল বৃক্ষতলে সময় পার করত পরবর্তী ক্লাসের অপেক্ষায়। টিফিনে সেখানে তাদের সময় কাটতো গল্প কিংবা খেলাধুলা করে। যেখানে বৃক্ষরাজিরা দাড়িয়ে ছিল ছন্দময়। কিন্ত প্রধান শিক্ষকের সামান্য স্বার্থের কাছে সেই বৃক্ষরা আজ পরাজিত।
স্কুলের সৌন্দর্য বর্ধনকারি গাছগুলো বিক্রি করে দেওয়ার খবরে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ইদ্রিস মিয়া বলেন, কারো সাথে কোন কথা না বলে প্রধান শিক্ষক গাছ গুলো বিক্রি করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আর একজন সদস্য বলেন, প্রধান শিক্ষক মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হওয়ায় ভয়ে কেউ তার অপকর্মের প্রতিবাদ করতে পারে না।
বিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এসকে নুরুজ্জামানের নিকট গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ব্যাপারিদের গাছের ডাল কাটার কথা বলেছি তবে গাছ কাটতে নয়।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ এসএম খায়রুজ্জামান জানান, ম্যানেজিং কমিটির নির্দেশ, রেজুলেশন এবং প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়াই স্কুল ছুটির দিনে গাছ কেটে বিক্রয় করেছেন প্রধান শিক্ষক । আমি বিষয়টি শুনেছি তবে প্রধান শিক্ষককে গাছ বিক্রয়ের নির্দেশ দেয়নি বলে তিনি আরো জানান।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই তবে এমন কিছু হলে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। মাগুরার জেলা প্রশাসক মো: আলী আকবর জানান, বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রয়ের সত্যতা মিললে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :