সমকাল: যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এ মাসে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন বয়কট করতে পারে বলে রোববার খবর দিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন সাংবাদিক জামাল খাসোগি। এ ঘটনার পর পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাবশালী অনেকগুলো মিডিয়া এবং বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা সম্মেলনটি বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানায় বিভিন্ন গণমাধ্যম।
২৩ অক্টোবর থেকে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আয়োজিত এই সম্মেলনে তার ‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনা উত্থাপন করার কথা রয়েছে। তেলের ওপর সৌদির নির্ভরতা কাটাতে এই পরিকল্পনা করছেন তিনি।
দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনটিতে ওয়াল স্ট্রিটের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বহুজাতিক, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তাদের অংশ নেয়ার কথা ছিল।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্টিভ মেনুশিন এবং ব্রিটেনের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেক্রেটারি লিয়াম ফক্স সম্মেলনটি বর্জন করতে পারেন।
খাসোগিকে সৌদি সরকারের নির্দেশে হত্যা করা হয়েছে তা প্রমাণিত হলে, একটি যৌথ বিবৃতিতে নিন্দা জানানোর কথাও ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের কূটনীতিকরা।
তবে খাসোগির বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিজ বলেছেন, তাকে হত্যা করা হলে শুধু জানানোটা যথেষ্ট হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত একটি লেখায় তিনি বলেন, ‘যারা তাকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে, তাদের রাজনৈতিক অবস্থান যাই হোক না কেন, তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।’
হাতিস আরো জানান, শনিবার খাসোগির জন্মদিন ছিল।
হাতিসকে বিয়ে করার জন্য খাসোগি তার আগের বিয়ের তালাকের কাগজপত্র আনতে সৌদি কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি আরব খাসোগিকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের ‘কঠোর শাস্তি’ দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘সত্যি সত্যিই এমনটা করা হলে তিনি ভীষণ রেগে যাবেন।’ তবে সৌদির সঙ্গে সামরিক চুক্তি বাতিল করতে অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প, ‘এমনটা করা আমরা নিজেরাই নিজেদের শাস্তি দেব। ওরা এসব (অস্ত্র) আমাদের কাছ থেকে না কিনলে রাশিয়া বা চীনের কাছ থেকে কিনবে।’
খাসোগি সৌদি যুবরাজ তথা রাজপরিবারের সমালোচনা করায় সৌদি পত্রিকায় তার কলাম বন্ধ করে সতর্ক করে দেয়া হয়। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসনে গিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় লেখালেখি করছিলেন।
গতকাল শনিবার মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন জানায়, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গও সম্মেলনটি বর্জন করেছে।
শুক্রবার সিএনএন, সিএনবিসি ও ব্রিটিশ পত্রিকা ফিনান্সিয়াল টাইমস শুক্রবার সম্মেলনটির স্পন্সরশিপ বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছিল।
তুরস্কের কর্মকর্তারা বলছেন, খাসোগিকে কনস্যুলেটের ভেতর হত্যা করা হয়েছে। তার অডিও ও ভিডিও প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে।
সৌদি আরব খাসোগিকে হত্যার কথা অস্বীকার করে বলেছে, তিনি ওইদিন বিকেলে কনস্যুলেট ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন। কিন্তু, খাসোগি কনস্যুলেটে প্রবেশের করছেন এই ভিডিওতে দেখা গেলেও কনস্যুলেট থেকে বাইরে আসার ভিডিও বা অন্য কোনো প্রমাণ নেই।
আপনার মতামত লিখুন :