নূর জাগকে/রাশিদ রিয়াজ : সৌদি ভিন্নমতালম্বি সাংবাদিক জামাল খাশোগজির নিখোঁজ এবং এই ঘটনার তদন্তে নেপথ্যে আসলে কি ঘটছে তা জানতে চেয়েছেন জাতিসঙ্ঘের মফাসচিব অ্যান্টোনিও গুতারেজ। গতকাল শনিবার ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে বিবিসিকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘ মহাসচিব এই দাবি জানিয়েছেন।
এসময় তিনি বলেন, আমার আশংকা আগামিতে এমন ধরণের গর্হিত অপরাধ নিত্য-নৈমেত্তিক ব্যাপারে পরিণত হবে। গত ২রা অক্টোবর ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর থেকেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা জামাল খাশোগজির, তুরস্কের দাবি তাকে সেখানে শারিরিক নির্যাতন করে নারকিয় কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত তথ্য তুর্কি গোয়েন্দারা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে জানিয়েছে। খাশোগজির নিখোঁজ রহস্য অবশ্যই উন্মোচন করতে হবে, বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি বলেন, আমাদের সকলকে একসঙ্গে জোরদার দাবি তুলতে হবে, অন্যথায় আগামী দিনে সংবাদপত্র ও সংবাদকর্মীদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হতেই থাকবে।
তবে তুরস্কের এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন এবং অসত্য বলে দাবি করেছে সৌদি সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দেল আজিজ বিন সউদ বিন নায়েফ বলেন, এই ধরণের অভিযোগ সৌদি বিদ্বেষী বিদেশি শক্তি এবং গণমাধ্যমের মিথ্যে অপপ্রচার।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল শনিবার বলেছেন, খাশোগজি হত্যায় সৌদি আরব জড়িত এই অভিযোগ প্রমানিত হলে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে কঠোর শাস্তি দেবে। এসময় তিনি বলেন আমি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ এবং হতাশ, তবে এই কারণে সৌদি আরবের কাছে মার্কিন অস্ত্র বিক্রয় বন্ধ করা হবেনা বলেও তিনি জানিয়েছেন। জামাল খাশোগজির নিখোঁজ রহস্য সমাধানে মার্কিন সিনেটের চাপের মুখে ট্রাম্প এমন কথা বলেন। গত বুধবার রিপাবলিকান দলের প্রভাবশালী সিনেটর র্যান্ড পল মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি এবং সামরিক সহায়তা বন্ধের আহ্বান জানান।
এদিকে খাশোগজি নিখোঁজের ঘটনায় সৌদি আরবই জড়িত বলে জানিয়েছেন মার্কিন সিনেটের বিদেশ নীতি বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান বব কোর্কার। প্রভাবশালী এই রিপাবলিকান সিনেটর বলেন, এই ঘটনায় তৃতীয় কোনো দেশের জড়িত থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে এটা স্পষ্ট যে এখন পর্যন্ত যেসব গোয়েন্দা তথ্য আমরা পেয়েছি তাতে অভিযোগের আঙুল সৌদি আরবের দিকে তোলাই সঙ্গত হবে। বর্তমানে খাশোগি নিখোঁজের ঘটনায় মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করছেন কোর্কার ও তার কমিটির সদস্যরা। এছাড়াও জামাল খাশোগজি জীবিত থাকার সম্ভাবনা খুবই সীমিত- এমনটাই জানিয়েছেন কোর্কার। সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির অপর সদস্য ও ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট সিনেটর টিম কাইনে বলেন, এখন সৌদি আরবের দায়িত্ব নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করা। সৌদিকে প্রমাণ করতে হবে, তারা কোনোভাবেই জামাল খাশোগিকে নির্যাতন, হত্যা ও গুমে অংশ নেয়নি। আল জাজিরা/ ওয়াশিংটন পোস্ট/ ইউএসএ টুডে/ বিবিসি
আপনার মতামত লিখুন :