মাছুম বিল্লাহ : এবার সারাদেশে হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব হবে ৩১ হাজার ২৭২ ম-পে। এ বছর মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে ১১৯৫টি। গতবার ৩০ হাজার ৭৭ মন্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছে
সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি ও নিরাপত্তা বাড়ায় এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নের কারণে দুর্গাপূজার ম-প বৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
শনিবার ঢাকেশ^রী জাতীয় মন্দিরে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়েরও অর্থনৈতিক উন্নতির সূচকের প্রতিফলন ঘটেছে। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকারের নিরাপত্তার বিষয়টিও পূজার সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনুকুল প্রভাব তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
এসময় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত ও ঢাকা মহানগর সার্বজনিন পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সাম্প্রদায়িক সম্পতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিজয়া দশমীর দিন শুক্রবার হওয়ায় ১২ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত বিজয় শোভাযাত্রা বন্ধ রাখা এবং রাতে ১০টার মধ্যে নিরঞ্জন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ।
নির্মল চ্যাটার্জি বলেন, ২৯ অক্টেবর বিজয়া দশমী। আমরা যথা নিয়মে বিজয়া দশমীর দিন প্রতিমা নিরঞ্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুক্রবার জুম্মার দিন তাই দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত শোভাযাত্রা বন্ধ রাখা এবং রাত ১০ টার মধ্যে নিরঞ্জ সম্পন্ন করার জন্য সকল অঙ্গ সংগঠনকে নির্দেশ দিয়েছি। আমরা সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাই অন্য ধর্মের পবিত্রতা রক্ষায় আমাদের এই বিশেষ নির্দেশনা।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্গোৎসবে ৩ দিনের সরকারি ছুটির ঘোষণা করার দাবি জানানোসহ ৭ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হল- দুর্গাপূজার সময় কারাগার, হাসপাতাল,অনাথ আশ্রমে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা, অন্যান্য জাতীয় উৎসবের ন্যায় বঙ্গভবন, গণভবন,নগরভবনসহ প্রধান প্রধান সরকারি ভবনসমূহে আলোকসজ্জা ও সড়কে জাতীয় পতাকা ও শুভেচ্ছা বাণী দিয়ে সুসজ্জিত করা, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বাতিল করে হিন্দু ফাউন্ডেশন গঠন করা, দুর্গোৎসবের দিনে স্কুল,কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষাসহ সরকারি বেসরকারি চাকুরীতে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ রাখা, অবিলম্বে দেবোত্তর সম্প্রত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণনয়ন করা এবং পূজায় মন্দিসমূহে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
হিন্দুনেতারা বলেন, দুর্গোৎসবের সার্বজনীনতাই আজ আমাদের উচ্চারিত শ্লোগান ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। আমরা উৎসবের সার্বজনীনতার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রকে ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’ এই চেতনায় দাঁড় করাতে চাই।
তারা বলেন, সারদীয় দুর্গোৎসব কেবলমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের। ঐতিয্যের এই উৎসবগুলো ধর্ম নির্বিশেষে পারস্পারিক সম্প্রীতির বন্ধনকে গভীর থেকে গভীরতর করে। পূজোর মাধ্যমে আমরা সর্বজনীন ধারাকেই প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
সরকারের নিরাপত্তা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে হিন্দুনেতারা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত সরকারের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করছি। আমাদের আস্থা আছে, সরকার পূজো এবং নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পূর্বাপর সময়ে সথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেবেন।
আপনার মতামত লিখুন :