শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ০৭:৫৫ সকাল
আপডেট : ১৩ অক্টোবর, ২০১৮, ০৭:৫৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আওয়ামী লীগে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভিড় আর বিএনপি চায় লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড

আরটিভি: নির্বাচন সামনে রেখে রাজশাহীর ৩ এবং ৪ নম্বর সংসদীয় আসনে শুরু হয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। ৩ নম্বর আসনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চাইছেন তাদের প্রার্থী মনোনীত হোক তৃণমূল থেকে। আর এ আসনের বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের টিকিট পেতে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। অন্যদিকে ৪ নম্বর আসনে একাধিক প্রার্থী নিয়ে বেকায়দার রয়েছে বড় দু’দল।

রাজশাহী-৩ অর্থাৎ পবা এবং মোহনপুর আসনটি শহরের একেবারে কাছাকাছি হওয়ায় সব সময়ই জেলা এবং স্থানীয় নেতাকর্মীদের নজর থাকে এ আসনটির ওপর। তিন লাখ পাঁচ হাজার সাতশ’ ৭৫ ভোটারের এ আসনটিতে নির্বাচন সামনে রেখে সভা-সমাবেশ এবং গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

এই আসনটিতে আগে বিএনপির দখলে থাকলেও ২০০৮ সাল ও ২০১৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে এটি আওয়ামী লীগের দখলেই রয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখানে বিএনপি ছাড়া আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা নির্বাচনে বিজয়ের প্রত্যয় ব্যক্ত করে দলীয় নিজেদের নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচন পূর্ববর্তী মতবিনিময় সভা ও গণসংযোগ করছেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সাংসদ আয়েন উদ্দিন ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ে। এছাড়াও পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মেরাজ উদ্দিন মোল্লাও এই দৌড়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ও তরুণ কর্মী হিসেবে মনোনয়ন পেলে বাকি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে জয়ের কথা জানান বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এ আসনে একাধিক প্রার্থী নৌকার মনোনয়ন চাচ্ছে আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। সভানেত্রী ও পার্লামেন্টরী বোর্ড যাকে মনোনয়ন দিবে আমরা সবাই তার পক্ষে কাজ করবো। আর যদি আমি মনোনয়ন পাই তবে তারাও আমার পক্ষে কাজ করবে। এখানে কোন বিভেদ থাকবে না।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে লালন করি। একজন রাজনৈতিককর্মী হিসেবে সব মানুষেরই প্রত্যাশা থাকে জাতীয় সংসদে নির্বাচন করার। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। তৃণমূলের চাহিদার ওপরেই ভিত্তি করে আগামী নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রী ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড তাদের হাতেই এবার নৌকা তুলে দিবেন। তাই তৃণমূল থেকে রাজনীতি করা এই নেতা মনোনয়ন পেলে তার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাজশাহী মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাচ্চু বলেন, জোটগতভাবে হোক বা না হোক এককভাবে মনোনয়ন তাকে দিয়েছেন দলের চেয়ারম্যান এরশাদ। ১২ বছর ধরে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। এখানে একক নির্বাচন হোক বা জোটের নির্বাচন হোক আমাদের বিজয় আসবেই।

অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থিতা লাভের আশায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টুর নাম শোনা গেলেও মাঠে সক্রিয় রয়েছেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন।
মিলন জানান, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে যাওয়ার কথা ভাবছে না বিএনপি। এছাড়াও আওয়ামী লীগের কারণে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকায় তারা তাদের নির্বাচনী গণসংযোগ করতে পারছে না। তারপরও প্রতি নিয়ত তারা এলাকায় যাচ্ছেন ও নেতাকর্মী ও জনগণের খোঁজ খবর রাখছেন। নির্বাচনে বিএনপি গেলে আবারও ধানের শীষের বিজয় এ অঞ্চলে নিশ্চিত। বলে জানিয়েছেন বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী এই নেতা।

অপরদিকে, এক সময়ের জেএমবি অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত রাজশাহী-৪ আসনে দুই লাখ ৭৭ হাজার ৯৮৮ ভোটারের এ বাগমারা আসনটি পেতে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়ছে জাতীয় পার্টিরও মনোনয়ন প্রত্যাশী। নানা উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজশাহী-৪ বাগমারা আসনটি আওয়ামী লীগ যেমন ধরে রাখার চেষ্টা করছে, তেমনই আসনটি পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে মাঠে নীরবে কাজ করছে বিএনপি। নেতাদের অনেকেই বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে ছুটে গেছেন। সেইসঙ্গে জানান দিয়েছেন নিজেদের প্রার্থিতার বিষয়টি। এছাড়াও অনেকেই ব্যানার ফেস্টুন টাঙিয়ে দোয়া চেয়েছেন।
এই আসনে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। এখানে এই দলের পক্ষ থেকে জোরালো মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেন বর্তমানে পরপর দুইবারের এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম সান্টু, তাহেরপুর পৌরসভার পর পর দুই বার নির্বাচিত মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ ছাড়াও নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক জিনাতুন নেছা তালুকদারসহ আরও দু-একজনের নাম শোনা যাচ্ছে।

বর্তমান এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক জানান, বিএনপি-জামাত জোট আমলে বাগমারা ছিল একটি রক্তাক্ত জনপদ। যেখানে জেএমবি দ্বারা মানুষ হত্যা, গুম ও খুনের মত ঘটনায় মানুষ আতংকে থাকতো। সেখানে ২০০৮ শেখ হাসিনার সরকার গঠনের পর এখানে জেএমবি ও সন্ত্রাসমুক্ত শান্তির এলাকায় পরিণত করতে পেরেছি। এখানে এখন উন্নয়নের ছোঁয়া সর্বত্র। এবার দলের মনোনয়ন পেলে উন্নয়নের ধারা আগামীতেও অব্যাহত রাখাবো।

এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু জানান, এ নির্বাচন অতীতের নির্বাচনগুলোর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করি আর আমাদের নেত্রী ও সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন সভায় বলেছেন তৃনমূলের সমর্থন যাদের রয়েছে তাদের হাতেই এবার নৌকা তুলে দিবেন কেন্দ্র। উন্নয়নর্মলক কর্মকাণ্ডসহ ঝড়, বৃষ্টি, খরায়, বন্যায় আমি বাগমারার মানুষের সঙ্গে থেকেছি, আমার বিশ্বাস আমি মনোনয়ন পেলে এ আসনে নৌকার বিজয় হবে শতভাগ।

তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ও অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে বেড়ে ওঠা বহু ত্যাগ স্বীকার করে আমার আওয়ামী লীগের সঙ্গে পথ চলা। দল চাইলে নিবেদিত কর্মী হিসেবে এই আসনে আমার জয় সুনিশ্চিত।
এদিকে নেত্রীর মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আর দলীয় মনোনয়ন পেলে আবারো হারানো আসনটি পুনরুদ্ধারে কথা জানান মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির নেতারা।

রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি জানান, জনগণের মুক্তির লড়াই করতে গিয়ে আজ মিথ্যা মামলায় কারাগারে। যতক্ষণ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার মুক্তি না হবে, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ তৈরি না হবে এবং ন্যূনতম জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুব্যবস্থা না হবে সে পর্যন্ত জনগণের দল হিসেবে বিএনপি কোনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। যদি খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা হয় তবে আমি এই দলের ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে মনোনয়ন চাইবো এবং মনোনয়ন পেলে বাগমারা আসনে ধানের শীষকে জয়ী করে আনবো।

সাবেক এমপি অধ্যাপক এম এ গফুর স্থানীয় বিএনপিতে তার অবদানের কথা স্মরণ করে জানান, দুর্নীতিমুক্ত জীবন যাপন করে এ অঞ্চলে আমি বিএনপিকে শক্তিশালী করেছি। মানুষের সঙ্গে চলেছি, মানুষের জন্য করেছি। খালেদা জিয়ার মুক্তি হলে আর নির্বাচনী ব্যবস্থা নিরপেক্ষ হলে দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো এবং নির্বাচনে জনগণের ভোটে আমি নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করবো।
এছাড়াও মনোনয়ন লাভের প্রত্যাশা করছেন, ড্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. আসফাকুর রহমান শেলী। উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মকলেছুর রহমান, ভবানীগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আব্দুর রাজ্জাক, আমেরিকার প্রবাসী ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম।
আর লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করার কথা বলছেন উপজেলা জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু তালেব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়