আহমেদ ইসমাম: ভারতের ওড়িষ্যা ও অন্ধ্রে আঘাতের পর তিতলি ধেয়ে আসছে বাংলাদেশে। আজ আবহাওয়া অধিদফতর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। আবহাওয়া অধিদফতর আরও জানিয়েছে, সকাল ১০টায় দেশের দক্ষিণ অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করতে পারে তিতলি। এ সময় এর গতি হবে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ঝড়টি এখন নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে, এতে কোনো ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি না হলেও নিম্নচাপের কারণে ভারি বৃষ্টির আশংকা রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশংকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর ও উত্তর অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে পরবর্তি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ দূরত্বে থেকে মাছ ধরতে বলা হয়েছে। এদিকে তিতলি’র প্রভাবে গতকাল টেকনাফে সর্বোচ্চ ১০৮ মিলি লিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজও সারাদিন ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া আধিদফতর।
ঘূর্ণিঝড় তিতলি’তে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়। উপকূলীয় এলাকার প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৯টি জেলার সকল চাকুরিজীবিদের পরবর্তি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ৬৫ হাজার সিপিপি ভলানটিয়ারদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও সাধারণ মানুষকে আতংকিত না হয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। ১০৯০(টল ফ্রি) নম্বরে কল দিয়ে আবহাওয়ার তথ্য পাওয়া যাবে।
এ দিকে গত বৃহস্পতিবার ভারতে আঘাত আনায় ৮ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এদের মাঝে ৬ জন গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে মারা যান। অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্য মন্ত্রীর এক বিবৃতিতে বলা হয়। তাদের ৬৭টি মাছ ধরার নৌকা সমুদ্রে গিয়েছিল। তার মধ্যে ৬৫টি ফিরে এসেছে। বাকি দু’টির খোজ পাওয়া যায়ানি। সেই দু’টি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভেঙে পড়েছে বিদ্যূত সরবরাহ ব্যবস্থা। কমপক্ষে দু’হাজার বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। এতে তাদের ৪ হাজার ৩১৯টি গ্রাম এবং ছ’টি শহরের বিদ্যূত সরবরাহ প্রভাবিত হয়েছে। টেলিফোন সংযোগও ধসে পড়েছে। অন্যদিকে, একাধিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে, গাছ পড়ে বন্ধ চেন্নাই-কলকাতা জাতীয় সড়ক।
আপনার মতামত লিখুন :