শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:৫৬ দুপুর
আপডেট : ০১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:৫৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমাদের প্রত্যাশা, প্রাপ্তি ও সম্ভাবনা

প্রীণন ফারুক: একটা সময় বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ওয়ান ডে ক্রিকেটে আমরা চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছিলাম। মাশরাফির হাতে অধিনায়কত্ব চলে আসার পরই দলটায় বিরাট পরিবর্তন চলে আসলো। মাঠের দল পরিচালনায় মাশরাফি কখনোই আহামরি মানের অধিনায়ক ছিলো না। তার চেয়ে ভালো ক্রিকেট সেন্সের ক্রিকেটার বর্তমান দলেই আছে। কিন্তু একটা জায়গায় তিনি অনন্য, অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

বাঙালিকে নেতৃত্ব দেওয়ার চেয়ে কঠিন কাজ মনে হয় আর কিছুতেই নেই। আমরা সবাইই নিজেদের যোগ্যতম ভাবি। অপরের নেতৃত্ব বিনাবাক্যে মেনে নেওয়ার মানসিকতা আমাদের নেই। কিন্তু মাশরাফির বিরল এক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে পুরো দলটাকে তিনি এক সুতোয় গেঁথে ফেলেছেন! দলকে উজ্জীবিত করার, প্লেয়ারদের ভেতর আত্মবিশ্বাস তৈরি করে তাদের সেরাটা বের করে আনার অদ্ভুত এক ক্ষমতা আছে মাশরাফির। মেরুদ- শক্ত করে প্লেয়ারদের পাশে দাঁড়ানোর মানসিকতাও বিস্ময়কর।

এই মাশরাফির অধিনায়কত্বে বিগত বছরগুলোতে ওয়ান ডে ক্রিকেটে আমরা বিস্ময়কর সফলতা অর্জন করছি, সারা বিশ্বে সব দলের কাছ থেকেই সমীহ আদায় করে নিচ্ছি। এশিয়া কাপের শেষ ৪ আসরে ৩ বার ফাইনাল খেলেছি, যেখানে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানের মতো দলগুলো খেলছে! এ অর্জন নিঃসন্দেহে অনেক বড় কিছু।

গত কয়েক বছর ধরে আমাদের ব্যাটিং স্তম্ভে পরিণত হয়েছেন তামিম ইকবাল। তিনি নিজেকে বিশ্বের সেরা ওপেনারে পরিণত করেছেন। প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই তিনি দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রথম ম্যাচের পর থেকেই তিনি অনুপস্থিত। সাকিব আল হাসান, যিনি একের ভেতর দুই। তাকে নিয়ে খেলা মানে দুজন প্লেয়ারকে নিয়ে খেলা, সেই সাকিব ছিলো না ফাইনালে। তারপরেও আমরা পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কাদের টপকিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছি! ব্যাটিং বিপর্যয়ের পরেও দুর্দান্ত বোলিং-এর মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা ফাইনাল উপহার দিয়েছি। একটা ম্যাচে একটা দল হারবেই, দুর্ভাগ্যক্রমে সে দলটা আমরা। এটা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছুই নেই।

আমরা যে পথে আছি সে পথে থাকলেই সামনের বছরের বিশ্বকাপে অন্যান্য দলগুলোর জন্য একটা থ্রেট হিসাবেই আবির্ভূত হবো। বিশ্বকাপে ভালো করার যথেষ্ট সুযোগ আছে আমাদের। এমনকি, আমরা বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতোও একটা দল, যে দলের অধিনায়ক একজন মাশরাফি।

অনেকের মতো আমিও আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। দলে নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন সিনিয়র কিছু ক্রিকেটার। এরা তো আর আজীবন থাকছে না, তখন কেমন হবে দলের চেহারা? আমরা নতুন ক্রিকেটার পাচ্ছি কই!?

হ্যাঁ, আমরা নতুন ক্রিকেটার পাচ্ছি, আবার পাচ্ছিও না। নতুনরা দলে আসা যাওয়ার মধ্যেই আছে। একটা প্লেয়ারকে কয়েকটা ম্যাচ সুযোগ দিয়েই তার ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাচ্ছি, বাতিল করে দিচ্ছি! শচীনের মতো গ্রেট প্লেয়ারও তার প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন ৭৯তম ওডিআইতে গিয়ে! আমাদের দেশে শচীনের জন্ম হলে আমরা তাকে ৭৯ তম ম্যাচ খেলার সুযোগই দিতাম না! সৌম্য, লিটন, মিরাজ, মোসাদ্দেক, অপুদের নিরবিচ্ছিন্ন সুযোগ দিয়ে যেতে হবে। এদের প্রতিভা আছে, সে প্রতিভার সুফল আমরা পাবোই। এখন যারা পারফর্ম করছেন, তারাও কিন্তু শুরুতেই হাতি-ঘোড়া মেরে ফেলে নি, তাদেরও খারাপ সময় গিয়েছে। এগুলো বিবেচনায় নিতে হবে।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের কোচ হয়ে যারা আসেন, তারা ফুটবলের কোচের ক্ষমতা ভোগ করেন। এটা বন্ধ করতে হবে। এই যে হাতুরা, তিনি এখনো কোচ থাকলে, বর্তমান দলে পারফর্ম করা অনেককেই ছেঁটে ফেলতেন!

কিছু কিছু জায়গায় আমাদের কাজ করতে হবে। পেসার হান্টের পাশাপাশি লেগ স্পিনার হান্টের ব্যবস্থাও করতে হবে। দলে একজন লেগ স্পিনারের অভাব আমরা সবসময়ই বোধ করি। ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ফালতু সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ করতে হবে। প্লেয়ারদের এলোমেলো ব্যক্তিগত জীবনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার নানামুখি কৌশল ও ব্যবস্থা নিতে হবে। কোন প্রতিভা যেন ঝরে না যায় তার কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। দল নির্বাচনে শতভাগ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে হবে। টি-টুয়েন্টি, ওডিআই ও টেস্টের জন্য আলাদা স্কোয়াডও করতে পারি আমরা। ঘরোয়া লীগকে আরো শক্তিশালী করতে হবে এবং 'এ' দলের নিয়মিত বিদেশ সফর নিশ্চিত করতে হবে।

বিশ্বক্রিকেটে রাজত্ব করার বিপুল সম্ভাবনা আছে আমাদের। এবং আমরা তা পারবো, পারতে হবে!
লেখক: ব্যাংকার, কথাসাহিত্যিক ও সাবেক ছাত্রনেতা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়