মো.ইউসুফ আলী বাচ্চু : কোটা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ১৬৩ বছরের পরীক্ষিত কোটা প্রথা বাদ দেওয়ার সুপারিশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড এবং লিবারেশন ওয়ার ফোর্সেস রিসার্চ ফাউন্ডেশন।
রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর কোটা বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সংশ্লিষ্ট কোটা সুবিধাভোগীদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এমন কি সাধারণ মানুষের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে মতবিনিময় না করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে ১৬৩ বছরের পরীক্ষিত কোটা প্রথা বাদ দেওয়ার পক্ষে সুপারিশ করেছেন। সঙ্গত কারণে আমরা উক্ত সুপারিশের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ঘরোয়া রিপোর্ট প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
মেহেদী হাসান আরও বলেন, ৭৫’র পট পরিবর্তনের পর ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২২ বছর কোনও কোটা দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ৩ দশমিক ০৯ শতাংশ কোটা দেওয়া হয়েছে। যদি ওই সময়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রাপ্যমত দেওয়া হতো তাহলে মুক্তিযোদ্ধারা এবং তাদের সন্তানরা এতো পিছিয়ে পড়তো না। ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সামরিক শাসন আমলে যেসব আদেশ নির্দেশ আইন করা হয়েছে তা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তাই আমরা বলতে চাই, ১৯৭৬ এবং ১৯৮৫ সালে ২০ শতাংশ ও ৫ শতাংশ জেলা কোটা কমানো সংবিধানের (অনুচ্ছেদ -১০) পরিপন্থী। এই অবস্থায় আমরা বঙ্গবন্ধুর সরকার ঘোষিত ১৯৭২ সালের ৮০ শতাংশ জেলা কোটা প্রবর্তনের দাবি জানাই।
নারী সংগঠনের দাবিগুলো উধৃতি করে তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে নারী কোটা বাতিলের মতো আর্থ সামাজিক অবস্থা তৈরি হয়নি। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) একাধিক বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে নারী কোটার প্রয়োজনীয়তার চিত্র পাওয়া গেছে। পিএসসি ‘র গত পাঁচ বছরের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিসিএস পরীক্ষার আবেদনে নারীদের অংশগ্রহণ আগের চেয়ে বেড়েছে। কিন্তু বিসিএস এ নারীদের চাকরি পাওয়ার হার ধারাবাহিকভাবে কমছে। ৩৩ তম বিসিএস থেকে বিগত ৪টি বিসিএস এ দেখা গেছে, নারীদের চাকরি পাওয়ার হার ৩৮ দশমিক ২৬ শতাংশ থেকে নেমে ২৬ দশমিক ২২ শতাংশে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে নারী কোটা বাতিল হয়ে গেলে নারীদের আরও পিছিয়ে পরার আশংকা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, লিবারেশন ওয়ার ফোর্সেস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক বিচারপতি মুনসুরুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের (বোয়াফ) সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :