তরিকুল ইসলাম সুমন: দেশের অন্যতম নৌ বন্দর ঢাকা সদরঘাট পুরনো খোলস ছেড়ে আজ নতুন খোলসে। এখন আর সেই ঘিঞ্জি পরিবেশ চোখে পড়ে না। নেই কোনো যানজট। ফলে এখন কাউকে পড়তে হয় না হয়রানিতে কিংবা হতে হয় না কুলিদের কাছে জিম্মি। নোংরা পরিবেশ এখন আলো ঝলমলে পরিবেশে উন্নিত হয়েছে। অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে স্থাপন করা হয়েছে ৭টি এলইডি মনিটর ও ৪০টি সিসি ক্যামেরা। অনাকাঙ্ক্ষিত যে কোনো ঘটনা তাৎক্ষণিক সমাধানের ব্যবস্থা সদরঘাটে নিয়ে এসেছে নতুন মাত্রা। এমনটাই জানিয়েছে সদরঘাট নৌ বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক একে এম আরিফ উদ্দিন।
আরিফ উদ্দিন জানান, আজ থেকে ৩-৪ বছর আগেও এ পরিবেশ ছিল না। নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের ইচ্ছে ও কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টায় আজ এটি শুধু দেশ নয় বিদেশের কাছেও সুপরিচিত। প্রতিদিনই বিদেশি পর্যটকরা আসেন ঢাকা সদরঘাট পরিদর্শনে। এখানকার বর্তমান পরিবেশ দেখে সবাই সন্তোষ প্রকাশ করছেন। যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে সুবিশাল পার্কিং এরিয়া, নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। যাত্রীদের বসার জন্য নতুন ভবনে সুপরিসর জায়গা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সময় কাটানোর জন্য বেশ কয়েকটি টিভি দেওয়া হয়েছে। দু টাকা পরিশোধে পরিচ্ছন্ন ওয়াশ রুম ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন। বিভিন্ন গন্তব্যের নৌ যান নির্দিষ্ট গ্যাংওয়ে ও পন্টুন দিয়ে ছেড়ে যাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সদরঘাট এলাকার নদীর পাশে বৃক্ষ রোপন করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় বেঞ্চও বসানো হয়েছে। ইচ্ছে করলে যাত্রীরা নদীর পাড়ে এসে বসতেও পারবেন।
তিনি আরো বলেন, সদরঘাট থেকে কুলি ও ইজারাদারদের দৌরাত্ব নির্মূল করা হয়েছে। সদরঘাট এলাকা থেকে ইজারা প্রথা বাতিল করা হয়েছে। কুলিদের মালামাল নিয়ে টনাটানি বন্ধ হয়েছে। মালামলের ওজন অনুযায়ী কুলিদের পয়সা দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যদি এর কোনো ব্যত্যয় ঘটে বা কুলিরা যদি যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তাহলে সিসি ক্যামেরায় দেখে তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। টারমিনাল ও পন্টুন এলাকা থেকে ৪শতাধিক হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। ফলে যাত্রিরা নির্বিঘ্নে পন্টুন ও গ্যাংওয়েতে চলা ফেলা করতে পারছেন। এমনকি লঞ্চে যাত্রী তোলার জন্য হাক ডাক ও বন্ধ করা হয়েছে। বিকাল ৫ টার পরে পণ্যনিয়ে ভ্যান গাড়ি গ্যাংওয়েতে প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফলে যাত্রীরা কোনো ধরণের ঝামেলা ছাড়াই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে পারছেন।
বরিশাল গামী আবুল কাসেম, পটুয়াখালির কাদের বক্স ও চাঁদপুরগামী ইলিয়াস ব্যাপারী জানান, আগের চেয়ে এখন সদরঘাট এলাকা অনেক পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন। মালপত্র নিয়ে হকারদের নেই কোনো টানাটানি। পন্টুনগুলোও প্রশস্ত ও পরিষ্কার করা হয়েছে। এখনকার পরিবেশ অগের চেয়ে সস্তিকর।
আপনার মতামত লিখুন :