মুফতি আহমদ আবদুল্লাহ: শিশুরা ফুলের মত স্নিগ্ধ, পবিত্র ও নিষ্পাপ। শিশুরাই জাতির ভবিষ্যত কর্ণধার। ভবিষ্যত শান্তি, সংস্কৃতি ও সভ্যতা নির্ভর করে আজকের শিশুদের ওপর। সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়বে এ শিশুরাই। পৃথিবীর হাসি-গান-আনন্দের নিরন্তর উৎস হলো তারা। আজকের অবুঝ শিশুরাই হবে আগামীর স্বপ্নময় ভবিষ্যতের দিশারী। এদের কেউ হবে বিজ্ঞানী, কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাষ্ট্রনায়ক ইত্যাদি। আবার কেউ তো ঝরে যাবে ভবিষ্যতের ক্রুর, বৈরী পৃথিবীর ক্ষুধা দারিদ্র, পুষ্টিহীনতা, নিরাপত্তাহীনতার আবর্তে।
শিশুরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। আরব সমাজে চরম অবহেলিত ও নির্যাতিত শিশুদের তিনি সেরা সম্পদ বলে আখ্যায়িত করেন। তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে আসীন করেন। পবিত্র কুরআন মহান রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘ধনৈশ্বর্য এবং সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য।’ ( সুরা কাহফ: ৪৬)
রাসুল (সা.) তাৎক্ষণিক তাকে বললেন, ‘তুমি উভয়ের মাঝে সমতা বিধান করলে না। (বোখারী শরীফ) ইসলাম এভাবেই আদর, স্নেহ এমনকি চুমুর ব্যাপারেও সমতার নির্দেশ দেয়। হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, একবার এক ব্যক্তি নবী কারিম (সা.)- এর কাছে উপস্থিত হলেন। লোকটির সঙ্গে একটি শিশুও ছিলো। নবীজি লোকটিকে বললেন, ‘তুমি কি এই শিশুর প্রতি দয়া করো? তিনি হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলেন। প্রিয় নবীজি বললেন, ‘তাহলে এই শিশুর প্রতি তুমি যতটুকু দয়া করবে তারচে বেশি আল্লাহ তোমার প্রতি দয়া করবেন। তিনি দয়ালুর মধ্যে সবচে বড় দয়ালু।’ (আল আদাবুল মুফরাদ: ৩৭৭)
অপরদিকে কন্যা সন্তানদের বিশেষ মর্যাদায় আধিষ্ঠিত করত মহানবী (সা.) বলেন, ‘পর্দানশীন কন্যারাই উত্তম সন্তান। তোমাদের সন্তানদের মধ্যে মেয়েরাই উত্তম।’
তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই সৌভাগ্যবান, যার প্রথম কন্যা সন্তান। যে ব্যক্তি একটি কন্যা সন্তানকে সঠিকভাবে ভরণ-পোষণ করেছে, তার জন্য বেহেশত অবধারিত।’
রাসুল (সা.) শিশুদের সীমাহীন ভালোবাসতেন। তাদের আগে সালাম দিতেন। শিশুদের কান্না তিনি মোটেই পছন্দ করতেন না। একবার তিনি শিশু হুসাইনের কান্নার আওয়াজ পেলেন। এতে তিনি ব্যথিত হলেন এবং হজরত ফাতেমা (রা.)কে বললেন, 'তুমি কি জানো না, শিশুদের কান্নার আওয়াজ আমাকে কষ্ট দেয়?’
একদিন প্রিয়নবী (সা.) নামাজ পড়ছিলেন। এদিকে হাসান ও হুসাইন নানাকে সেজদারত অবস্থায় পেয়ে একেবারেই পিঠে চড়ে বসে পড়লেন। তিনি সেজদা দীর্ঘায়িত করলে এবং স্বেচ্ছায় নামা পর্যন্ত তাদের নামিয়ে দিলেন না। নামাজ শেষে সাহাবায় কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনি তো সেজদায় দীর্ঘায়িত করেছেন। রাসুল (সা.) জবাবে বললেন, ‘আমার সন্তানদ্বয় (নাতি) আমাকে সওয়ারি বানিয়ে আনন্দ করছিলো, তাই তাদের নামিয়ে দেয়াটা আমার পছন্দ হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :