শিরোনাম
◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ২৭ বস্তা টাকা, গণনা চলছে ◈ তীব্র তাপপ্রবাহ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও ৭ দিন বন্ধের দাবি ◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক

প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৮:১৩ সকাল
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৮:১৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আ. লীগ-বিএনপির লড়াইয়ে ভাগ বসাতে চায় জাপা

ডেস্ক রিপোর্ট : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি এখনো। প্রধান দুটি দলের মনোনয়নও চূড়ান্ত হয়নি। কে পাবেন মনোনয়ন, তাও এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন টানিয়েছেন অনেকে। কেউ আবার নির্মাণ করেছেন তোরণ। যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে। অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিচ্ছেন। নির্বাচনী এলাকার ক্লাব ও সামাজিক সংগঠনগুলোকেও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন। সমাবেশ ও পথসভায় বক্তব্য দিয়ে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে এলাকার সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

এসব তৎপরতায় ভোটারদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনী আমেজ। বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে কে কোন আসনে মনোনয়ন পাচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে জল্পনাকল্পনা। গ্রামের চায়ের দোকানগুলো নির্বাচনী আলোচনায় সর্বাধিক মশগুল। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চলছে প্রচারণা।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় রয়েছে দুটি নির্বাচনী আসন।

চুয়াডাঙ্গা-১ ও চুয়াডাঙ্গা-২। নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনকে বিএনপি-জামায়াত জোটের বলে গণ্য করা হতো। কিন্তু গত দুই সংসদ নির্বাচনে আসন দুটি হাতছাড়া হয় তাদের। এ দুই নির্বাচনে আসন দুটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী হন।

একাদশ নির্বাচনে বিএনপি চাইছে আসন দুটি ফিরিয়ে আনতে। আর আওয়ামী লীগ চাইছে গত দুই নির্বাচনের মতো এবারও বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে। অন্যদিকে প্রধান এই দুই দলের লড়াইয়ে ভাগ বসাতে চায় জাতীয় পার্টি।

চুয়াডাঙ্গা-১

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন), স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর মাহবুব হোসেন মেহেদী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ শেখ সামসুল আবেদীন খোকন ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুল হক বিশ্বাস দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য ব্যাপক গণসংযোগ করছেন।

এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে অতীতে অনেকে কেন্দ্রে ব্যস্ত থাকলেও এলাকায় ছিলেন নিশ্চুপ। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট আলাদা। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এলাকায়ও এবার বেশ তৎপর। সব মনোনয়নপ্রত্যাশী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। নির্বাচনী এলাকার শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ঘুরছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। অবশ্য এ আসনে জামায়াতের কোনো প্রার্থীর তৎপরতা চোখে পড়েনি। অতীতের নির্বাচনগুলোর মতো আগামী নির্বাচনেও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে।

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নের জন্য তদবির করছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য শামসুজ্জামান দুদু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, সাবেক যুগ্ম সচিব ড. আব্দুস সবুর (এম এ সবুর), জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লে. কর্নেল (অব.) সৈয়দ কামরুজ্জামান ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শরিফুজ্জামান শরীফ। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা অধিক হলেও বেশির ভাগ মনোনয়নপ্রত্যাশী এখনো চুপ। তাঁদের প্রকাশ্য কোনো তৎপরতা নেই। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি থাকলে কোনো কোনো মনোনয়নপ্রত্যাশী তা পালন করছেন। বিএনপির বেশির ভাগ মনোনয়নপ্রত্যাশীর অভিযোগ, তাঁদের দলীয় কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না।

অন্যদিকে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন এবারও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে নির্বাচন করার জন্য বেশ তৎপর। তিনিই দলের মনোনয়ন পাবেন এমনটি প্রায় চূড়ান্ত বলে দাবি করেছে দলের নেতাকর্মীরা।

সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘জনগণ আবারও নৌকা প্রতীকে ভোট দেবে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষ আমাদের কাছে আসে। আমাদের উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। দেশের মানুষকে আমরা ভালো রেখেছি। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত উন্নতি হয়েছে। আমি ৫৪-৫৫ বছর আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত। নেত্রী যা করবেন, তা মেনে নিয়ে আমরা দলের জন্য কাজ করব। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মানুষ নৌকার দিকে চেয়ে আছে। তারা নৌকা প্রতীকেই ভোট দেবে। চুয়াডাঙ্গা-১ নির্বাচনী এলাকায় রাস্তা হয়ে গেছে ৯০ শতাংশ। কোথাও কোথাও ৯৫ শতাংশ। বাকি যেটুকু আছে তা যদি আমি সমাপ্ত করতে পারি, তাহলে তৃণমূলের মানুষ আমাদের নৌকা প্রতীকেই ভোট দেবে।’

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা আমাদের কথা বলতে পারছি না। মাঠে নামতে পারছি না। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এ সরকার আমাদের কথা বলার অধিকার হরণ করেছে। সমাবেশ করে আমরা যে কিছু বলব তার কোনো সুযোগ নেই।’

জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বলেন, ‘দেশে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলের ৯ বছরে বড় ধরনের উন্নয়ন হয়েছে, যা মানুষ আজও মনে রেখেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুঃশাসন দেখেছে মানুষ। এ কারণে তাদের প্রতি এ দেশের মানুষের আস্থা নেই। মানুষ পরিবর্তন চায়। মানুষের মধ্যে জাতীয় পার্টির গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। আগামী নির্বাচনে মানুষ জাতীয় পার্টিকে ভোট দেবে।’

চুয়াডাঙ্গা-২

এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহসাধারণ সম্পাদক হাশেম রেজা, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল মল্লিক, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মঞ্জু নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পেতে ব্যাপক গণসংযোগ করছেন।

অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ও বিএনপি নেতা মখলেছুর রহমান তরফদার।

জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দীন জোয়ার্দ্দার দুলু।

জামায়াতের মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি রুহুল আমিন।

এই আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলী আজগার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন। আওয়ামী লীগের একটি মনোনয়ন বোর্ড আছে। প্রধানমন্ত্রী বিচক্ষণতার সঙ্গে তা দেখছেন। আওয়ামী লীগ যেহেতু বড় দল, সেহেতু মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার সবার আছে। এর পরও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে কে মানুষের সঙ্গে আছে, কে উন্নয়ন করেছে, এলাকায় কার গ্রহণযোগ্যতা বেশি—এসব অবশ্যই দেখবেন প্রধানমন্ত্রী। নৌকার মনোনয়ন যে-ই পান, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁর জন্য মাঠে নামব। প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থীকে জিতিয়ে আনব।’

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ‘বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, আমি বিশ্বাস করি জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনগণের রায় নিয়ে আমরা বিজয়ী হব অবশ্যই।’

জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী দেলোয়ার উদ্দীন জোয়ার্দ্দার দুলু বলেন, ‘দেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখা গেছে জাতীয় পার্টির ৯ বছরের শাসনামলে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতি মানুষ আস্থাহীন হয়ে পড়েছে। নতুন করে জাতীয় পার্টির কথা ভাবছে মানুষ। ভোটারদের কাছ থেকে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।’ সূত্র : কালের কণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়