শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি: কী পাচ্ছে বাংলাদেশ, কী হারাতে পারে? ◈ রাতেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা (ভিডিও) ◈ চাপাতি হাতে ব্যাগ ছিনিয়ে পুলিশের সামনেই হেঁটে গেলো ছিনতাইকারী, ভিডিও ভাইরাল ◈ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগার নায়ারা রিফাইনারির ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা ◈ রাতের আকাশে ভেসে উঠলো ‘নাটক কম করো পিও’ (ভিডিও) ◈ জটিল ভয়ানক যে রোগে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ◈ কুড়িগ্রামে চাঁদা দাবি করা জামায়াতের সেই নেতা সাময়িক বহিষ্কার ◈ বড়াইগ্রামে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে দুই বিষয়ে দুই পরীক্ষার্থী ফেল! ◈ টাঙ্গাইলে পুলিশ হেফাজতে বিএনপি নেতার রহস্যজনক মৃত্যু ◈ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ তলিয়ে দেখা দরকার: শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৯:০৪ সকাল
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৯:০৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দিন দিন পর্যটক হারাচ্ছে রাঙ্গামাটি

ডেস্ক রিপোর্ট : পাহাড়ে ঘুরে বেড়াতে কার না মন চায়। কারণ পাহাড়কেই বলা হয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। বাংলাদেশের এই প্রাকৃতির সৌন্দর্যের লীলাভূমি হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। এখানে বাস করে ১১ ভাষাভাষী ১৩টি জনগোষ্ঠী। এখানকার পর্যটন শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা পালন করে আসছে। এখানে রয়েছে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা। কিন্তু এলোমেলোভাবে রয়েছে এখানকার পর্যটন শিল্প।

মূলত তিনটি পাহাড়ি জেলাকে নিয়েই পার্বত্য চট্টগ্রাম (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) গঠিত। এখানে এলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, দৃষ্টিনন্দন পাহাড় এবং সবুজের সমারোহে প্রাণ জুড়িয়ে যায় ভ্রমণপিপাসুদের। সাজেক ও নীলগিরিতে যেন হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে মেঘ। আর এসব কারণেই তিন জেলায় পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ছে।

তবে স্থানীয় ও উদ্যেক্তারা বলছেন, এই পার্বত্য অঞ্চলই হতে পারে বাংলাদেশ সরকারের আয়ের অন্যতম উৎস। আর এ জন্য উদ্যোক্তা ও সরকারিভাবে বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি। এই দু’টিসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো বিবেচনা করে উদ্যোগ গ্রহণ করলেই বছরে এই পাহাড় থেকে রাজস্ব আদায় করা যাবে কোটি কোটি টাকা।

স্থানীয়রা এও বলছেন, পুরনো দিনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ছাড়া বিশেষ করে রাঙ্গামাটিতে তেমন কোনো পর্যটন স্পট গড়ে উঠছে না। যার কারণে দিন দিনই পর্যটক হারাচ্ছে রাঙ্গামাটি। আর আগের মতো আবারও এই শিল্পকে জাগিয়ে তুলতে সরকারিভাবে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আর পর্যটন শিল্পের মানোন্নয়ন ঘটলে এখানকার হোটেল-মোটেলগুলোতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে স্থানীয়দের। ভ্রমণের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও নিরাপদ ও সহজ করতে হবে।

হোটেল মতি মহলের স্বত্বাধিকারী এস এম সফিউল আজম বলেন, আমাদের এখানকার হোটেল ব্যবসা তেমন ভালো নয় বললেই চলে। রাঙ্গামাটিতে এখন আর পর্যটকরা ভিড় জমান না। আর এ জন্য দায়ী স্থানীয় পর্যটন কর্তৃপক্ষই। তাদের যথাযথ উদ্যোগ না থাকাতেই আজকের এই অবস্থা। তিনি পাহাড়ে পর্যটন শিল্পের বিকাশে আরও পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন গ্লোবাল ভিলেজের নির্বাহী পরিচালক হেফাজত সবুজ বলেছেন, ‘কেবলই রাঙ্গামাটির পর্যটন শিল্প নিম্নের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই জেলায় ইতোমধ্যে কয়েকটি নতুন পর্যটন কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে; তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা অস্বাভাবিক হওয়ার কারণে পর্যটকরা তো দূরের কথা স্থানীয়রাও ওদিকে ঝুঁকছে না।’

তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে রয়েছে ঘাগড়ার ফুরোমন পাহাড়, ঘাগড়া ঝরণা, বিলাইছড়ির দুর্গম এলাকায় অবস্থিত ধুপপানি ঝরণা, কাটা ঝরণা অন্যতম। বিশেষ করে এসব পাহাড়ি এলাকাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালো নয়; আর এসব এলাকায় পর্যটকরা বেড়াতে বের হলে সেদিন আর ফেরাও সম্ভব নয়। এতে রাত্রি যাপনে তো অসুবিধা রয়েছেই। পর্যটন শিল্পের বিকাশে স্থানীয়ভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নজরদারি আরও বাড়াতে হবে।’

রাইন্যা টুগুন ইকো রিসোর্টের চেয়ারম্যান ললিত সি চাকমা বলেন, ‘পর্যটন শিল্প বিকাশে খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের চেয়ে পিছিয়ে আছে রাঙ্গামাটি; এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই পিছিয়ে পড়ার পিছনে কয়েকটি কারণও রয়েছে। প্রথমত পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য এখানে রাজনৈতিক ঐকমত্য নেই। ২০১৪ সালের আগস্টে স্থানীয় পর্যটন শিল্পকে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করা হলেও পরে এই বিষয়ে জেলা পরিষদের উদ্যোগহীনতা রয়েছে। তৃতীয়ত সরকারি পৃষ্টপোষকতার কারণে স্থানীয়ভাবে জন উদ্যোগ গড়ে উঠছে না।’

ললিত চাকমা আরও বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকায় স্থানীয়রা উদ্যোগী হচ্ছে না। এর মধ্যে এখানকার পরিবেশ পরিস্থিতির সম্পৃক্ততা রয়েছে। এছাড়া এখানকার পর্যটন শিল্পের সুফল ও কুফল নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে এক ধরনের মিশ্র ধারণা রয়েছে যে পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা যাবে নাকি যাবে না’

রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, ‘পর্যটন শিল্পের অগ্রগতি তো এমনিতেই হবে না। এর সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে স্থানীয় রাজনীতিরও সম্পৃক্ততা রয়েছে। এখানকার পর্যটন কর্তৃপক্ষ চাইলেই রাতারাতি এ শিল্পের পরিবর্তন ঘটাতে পারবে না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে পরিকল্পনাহীনতার কিছুই নেই। রাঙ্গামাটির পর্যটন সম্ভাবনা নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। সরকারি পরিকল্পনাগুলো তো দ্রুত এগিয়ে নেয়া যায় না। ধীরে ধীরে এগিয়ে যায়।’

এর আগে এক সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা বলেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই জেলার সুন্দর রূপ দিন দিন হারিয়ে যেতে চলেছে। সরকার পর্যটন শিল্পের বিকাশে কয়েকটি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ শিল্পের উন্নয়নে সরকার গুরুত্বারোপ করছে।’
সূত্র: পরিবর্তন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়