আমিন মুনশি : সংবাদ বলতে মুদ্রণজগৎ, সম্প্রচার কেন্দ্র, ইন্টারনেট অথবা তৃতীয় পক্ষের মুখপাত্র কিংবা গণমাধ্যমে উপস্থাপিত বর্তমান ঘটনাপ্রবাহের একগুচ্ছ নির্বাচিত তথ্যের সমষ্টি যা যোগাযোগের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। আর এ ব্যাপারে ইসলামের দাবি হলো, মানবিক ও মনের কুপ্রবৃত্তির বশীভূত না হয়ে মানব কল্যাণের জন্য সত্য সংবাদ পৌঁছে দেওয়া। এই মর্মে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘তারপর আমি তোমাকে দ্বীনের এক বিশেষ বিধানের উপর প্রতিষ্ঠিত করেছি। সুতরাং তুমি তার অনুসরণ কর এবং যারা জানে না তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করো না।’(সূরা জাসিয়া: ১৮)
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন- ‘এ কারণে তুমি আহবান কর এবং দৃঢ় থাক যেমন তুমি আদিষ্ট হয়েছ। আর তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো না।’ (সূরা শুরা: ১৫)
সংবাদ সংগ্রহের সময় দৃষ্টিশক্তি প্রখর রাখতে হবে। যেনতেন লোক থেকে সংবাদ গ্রহণ করা যাবেনা। এই মর্মে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।’(সূরা হুজরাত: ৬)
রাসূল (সা.) বলেন- ‘মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য ইহাই যথেষ্ট, যা শুনবে তা যাচাই করা ছাড়া বর্ণনা করা। (মুসলিম শরীফের ভূমিকা, আবু দাউদ ৪/২৯৮ ইবনে হিব্বান, ১/২১৩ )
হলুদ সাংবাদিকতার পরিণতি:
রাসূলে কারীম (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদেরকে কবিরা গুনাহ সম্পর্কে সংবাদ দেব না? (কথাটি রাসূল (সা.) তিনবার বলেছেন) সাহাবায়ে কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! বলুন, তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা, মাতা পিতার অবাধ্য হওয়া, কথাগুলো বলার সময় রাসূল (সা.) হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। অতঃপর সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। কথাগুলো তিনি বারবার বলতেছিলেন। আমরা (সাহাবাগণ) মনে মনে বলতেছিলাম, হায়! যদি তিনি চুপ হতেন। (বুখারী ও মুসলিম)
রাসূল (সা.) আরো বলেন, যে আমার সম্পর্কে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নাম বানিয়ে নিলো। (মুসলিম শরীফ) সহীহ সনদে ইমাম হাকেম বর্ণনা করেন, মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনকারীর ঠিকানা জাহান্নাম। আল্লাহ পাক আমাদের সাংবাদিক বন্ধুদের মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা ও শোনা থেকে হেফাজত করুন।
আপনার মতামত লিখুন :