শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১১:৩৬ দুপুর
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১১:৩৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তীব্র হচ্ছে শূন্যতা

ডেস্ক রিপোর্ট: যত দিন পেরোচ্ছে, ততই তার শূন্যতার প্রতিধ্বনি তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে বাংলার পথে-প্রান্তরে, ভাষা ও সাহিত্যের স্রোতে। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে তার বহুমাত্রিক লেখনী সমৃদ্ধ করেছে মানুষকে। সাহিত্যের সব মাধ্যমেই অনন্য কুশলী স্পর্শ রেখেছেন তিনি। আবহমান বাংলা ও বাঙালির অন্যতম সেরা ভাষাশিল্পী এই সৈয়দ শামসুল হক। দুই বছর আগের এই দিনে, ২৭ সেপ্টেম্বর, না-ফেরার দেশে চলে গেছেন এই সব্যসাচী লেখক।

২০১৬ সালের এপ্রিলে ফুসফুসে ক্যান্সার শনাক্তের পর সৈয়দ হক চিকিৎসার জন্য লন্ডনের রয়্যাল মার্সেডন হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে পাঁচ মাস চিকিৎসার পর ১ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে তিনি ভর্তি হন ইউনাইটেড হাসপাতালে। চিকিৎসারত অবস্থায়ও সক্রিয় ছিল তার কলম। মৃত্যুযন্ত্রণাকে উপেক্ষা করে তিনি হাসিমুখে লিখেছেন কবিতা ও ছোটগল্প, অনুবাদ করেছেন বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম সম্পদ শেক্সপিয়রের নাটক হ্যামলেট।

সৈয়দ শামসুল হকের জন্ম কুড়িগ্রামে, ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর। সেখানকার মাইনর স্কুলে তার শিক্ষাজীবনের সূচনা। বাবার ইচ্ছা ছিল তাকে চিকিৎসক করে তোলার। কিন্তু সাহিত্য সৃজনের অদম্য বাসনায় ঘর ছাড়েন তিনি- মুম্বাইয়ে চলে যান ১৯৫১ সালে। পরে অবশ্য দেশে ফিরে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ থেকে পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। তবে পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়েন তিনি। এর পর লেখালেখিকেই একমাত্র ব্রত করে নেন তিনি।

১৯৫৪ সালে প্রথম গল্পগ্রন্থ 'তাস' প্রকাশের পরই বাংলা সাহিত্যে নিজের আসন স্থায়ী করেন তিনি। একে একে প্রকাশিত হয় 'শীত বিকেল', 'রক্তগোলাপ', 'আনন্দের মৃত্যু', 'প্রাচীন বংশের নিঃস্ব সন্তান', 'জলেশ্বরীর গল্পগুলো' ইত্যাদি গভীর জীবনঘনিষ্ঠ রচনা। ১৯৫৯ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস 'এক মহিলার ছবি'। ১৯৬১ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'একদা এক রাজ্যে'। সৈয়দ হকের ভাষা ও আঙ্গিকের উজ্জ্বল নিরীক্ষার পরিচয় উৎকীর্ণ হয়ে আছে 'বিরতিহীন উৎসব', 'বৈশাখে রচিত পঙ্‌ক্তিমালা', 'পরানের গহীন ভিতর'সহ বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে। তার লেখা উল্লেখযোগ্য

উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে 'খেলারাম খেলে যা', 'দ্বিতীয় দিনের কাহিনী', 'নীল দংশন', 'বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ', 'তুমি সেই তরবারি', 'নিষিদ্ধ লোবান' ইত্যাদি। শিশু-কিশোরদের জন্যও নানা গ্রন্থ লিখেছেন তিনি। তার অতুলনীয় কাব্যনাট্য 'পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়', 'নুরলদীনের সারাজীবন', 'ঈর্ষা', 'গণনায়ক' ইত্যাদি ব্যাপকভাবে আলোচিত। উইলিয়াম শেক্সপিয়রের 'ম্যাকবেথ', 'হ্যামলেট'সহ বিশ্বসাহিত্যের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রচনাও বাংলায় অনুবাদ করেছেন তিনি। তার প্রবন্ধগ্রন্থ 'হূৎকলমের টানে' ও আত্মজৈবনিক গ্রন্থ 'দুই পয়সার জোছনা' এবং 'প্রণীত জীবন'ও ব্যাপক আলোচিত।

সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মাত্র ২৬ বছর বয়সেই বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়া পেয়েছেন একুশে পদক, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, আলাওল স্বর্ণপদক, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, কবিতালাপ পুরস্কার, লেখিকা সংঘ সাহিত্য পদক, ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার। চিত্রনাট্যকার ও সংলাপ রচয়িতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন দু'বার।

অনুষ্ঠান :সৈয়দ শামসুল হকের দ্বিতীয় প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমি আজ বৃহস্পতিবার ও আগামীকাল শুক্রবার দু'দিনের স্মরণার্ঘ্য অনুষ্ঠান করছে। আজ সন্ধ্যা ৭টায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান শুরু হবে। সূত্র: সমকাল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়