শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে বিশ্বরাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে কে: বাইডেন ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ◈ মা হিসেবে পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়ে দেশের ইতিহাসে নাম লেখালেন অভিনেত্রী বাঁধন ◈ আরও তিন মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক ◈ সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ ◈ তাপপ্রবাহে উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা,  বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ ইউনিসেফের ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৯:৩৯ সকাল
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৯:৩৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সমাবেশের বিকল্প ভাবছে না বিএনপি

ডেস্ক রিপোর্ট : আগামী শনিবার রাজধানীতে সমাবেশের বিকল্প ভাবছে না বিএনপি। এ জন্য তারা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি না পেলে যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই করা হবে সমাবেশ। এই সমাবেশ থেকে বিএনপির সাত দফা, ১২ লক্ষ্য ঘোষণাসহ দলের অবস্থান তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে আপাতত ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো কর্মসূচিতে না যাওয়ার কৌশলে থাকবে দলটি।

জানতে চাইলে দলটির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যেকোনো মূল্য আমরা সমাবেশ করব। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে আমরা ২৭ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ২৯ সেপ্টেম্বর সমাবেশ করছি। ফলে আমরা সমাবেশের বিকল্প ভাবছি না। এই সমাবেশ থেকে বিএনপি সাত দফা, ১২ লক্ষ্য, যুক্তফ্রন্ট ও বৃহত্তর ঐক্যজোট নিয়ে দলের অবস্থান, ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-মামলার রায়, কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসনের কারামুক্তিসহ দলের রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরা হবে।’

সমাবেশকে কেন্দ্র করে গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিল। বৈঠকে শনিবারের সমাবেশে রাজধানীর আশপাশের জেলা মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, টাঙ্গাইল থেকে নেতাকর্মীদের ব্যাপকহারে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

দলটির ভাইস চেয়ারম্যান পর্যায়ের এক নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ১. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই জাতীয় সংসদ বাতিল, খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার। ২. নেতাকর্মীর মুক্তি, সাজা বাতিল ও মামলা প্রত্যাহার, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও নতুন কোনো মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা, পুরনো মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার না করা, কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশের অভিযোগে ছাত্র-ছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির নিশ্চয়তা। ৩. সরকারের পদত্যাগ ও সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা। ৪. সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনাক্রমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা। ৫. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা। ৬. সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ করা। ৭. নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার বিধান নিশ্চিত করা।

১২ লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে ১. রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করা। ২. সব প্রতিহিংসার রাজনীতির অবসানে জাতীয় ঐকমত্য গঠন। ৩. রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দলীয়করণের ধারার বদলে গণতান্ত্রিকব্যবস্থায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। ৪. রাষ্ট্রক্ষমতায় গ্রহণযোগ্য ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা। ৫. স্বচ্ছ নিয়োগপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারক নিয়োগ এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা নিশ্চিত করা। ৬. স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীকে আরো আধুনিক, শক্তিশালী ও কার্যকর করা। ৭. গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। ৮. দুর্নীতি প্রতিরোধে দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কার ও কার্যকর করা। ৯. সব নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করা। ১০. সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, এ মূলনীতিকে অনুসরণ করে জাতীয় মর্যাদা এবং স্বার্থ সংরক্ষণ করে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা। ১১. কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদকে মদদ না দেওয়া এবং কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেওয়া। ১২. সর্বনিম্ন আয়ের নাগরিকদের মানবিক জীবন নিশ্চিত করা।

সূত্রগুলো বলছে, এসব দাবি তুলে ধরে সরকারকে একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিতে পারে বিএনপি। সময় বেঁধে দেওয়ার পর যুক্তফ্রন্ট ও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে ২০ দলীয় জোটের শরিকদের। তবে জামায়াতকে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট ও বৃহত্তর ঐক্য জোটের নেতাদের বিধি-নিষেধ থাকায় এই বিষয়ে বিকল্প ভাবা হচ্ছে বলে দলটির সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জামায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, এমন এক নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে বিএনপি যতটুকু সম্ভব ছাড় দেবে। প্রাথমিকভাবে জামায়াতকে বিহাইন্ড দ্য সিনে রাখা হবে। তাদের সঙ্গে দৃশ্যত কোনো কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি। আবার তাদের ছেড়ে যেতেও বলা হবে না। এ ক্ষেত্রে জামায়াত যদি নিজ থেকে চলে যায়, সেটি বিবেচনায় নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি।
সূত্র : কালের কন্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়