ফেসবুক স্ট্যাটাস: ড. কামাল হোসেনকে নাকি আওয়ামী বিরোধী রাজনীতির মূল শক্তি বি এন পি "জাতীয় মুরুব্বী" অভিধা দিয়েছে ? জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয়ার মতো রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ড. কামাল হোসেনের নেই। নির্বাচন কি জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি হতে পারে? বিরাজনীতিকরণের কুশীলবদের হয়তো বোধোদয় হয়েছে যে , রাজনীতিবিদদের বাইরে সরকার গঠন প্রক্রিয়া অপরিণামদর্শী হবে । সাধারণ মানুষ রাজনীতিবিদদেরকেই বিশ্বাস করে। কিন্তু তাদের হাতে সর্বদলীয় সর্বজন শ্রদ্ধেয় কোনও ব্যাক্তি নেই ।
ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ ঘরানার মুরুব্বি হবার সুযোগ বহু আগেই হারিয়েছেন, তিনি জিল্লুর রহমানের মতো ধৈর্যশীল নন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতাও অর্জন করতে পারেননি। তিনি একজন বিজ্ঞ আইনজীবী হয়েও বঙ্গবন্ধু হত্যা, যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার, ২১ অাগস্ট শেখ হাসিনা হত্যা প্রচেষ্টার বিচার এই তিনটি রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ভূমিকা পালন করে নিজেকে শ্রদ্ধার জায়গায় নিতে পারেননি । আন্তর্জাতিক পরিসরে তেল গ্যাস কোম্পানিগুলোর কাছে আইনজ্ঞ হিসেবে গ্রহণীয় হতে পারলেও, দেশের মানুষের কাছে রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর ইমেজ নেই বললেও চলে ।
বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী ষড়যন্ত্রের রাজনৈতিক পরিবেশে ড. কামাল জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি । আদর্শিক প্রশ্নে মিজানুর রহমান চৌধুরীরা আওয়ামী লীগ ছেড়ে একই নামে ব্র্যাকেট বন্দী দল করেছিলেন । কিন্তু জিয়াউর রহমানের সামরিক জান্তার অধীনে ১৯৭৯"র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনও সিনিয়র নেতাকে জিতে আসতে দেয়া হয়নি । ঐ নির্বাচনের পরে দলে সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের প্রভাব একচ্ছত্র হয়ে যায় । মতিয়া চৌধুরীর নেতৃত্বে ন্যাপের একাংশ আওয়ামী লীগে যোগ দিলে আব্দুর রাজ্জাকের প্রভাব আরও বেড়ে যায় । ছাত্রলীগ ও যুবলীগেও সেই সময় শুধুমাত্র আব্দুর রাজ্জাকের-ই গ্রহণযোগ্যতা ছিলো । সিনিয়র নেতারা দিশেহারা হয়ে ড. কামাল হোসেনের পরামর্শে তখন প্রবাসী শেখ হাসিনাকে দলের সভানেত্রী করে নিয়ে আসেন । দলে "রক্তের উত্তরাধিকারে "র নেতৃত্ব চালু করার অগণতান্ত্রিক উপায় ড. কামাল তার নিজ রাজনৈতিক স্বার্থেই বের করেছিলেন । তিনি মনে করেছিলেন শেখ হাসিনাকে "পুতুল" হিসেবে সামনে রেখে তিনি-ই হবেন ক্ষমতাবান । জিয়াউর রহমানের মৃত্যু তাকে সেই সুযোগ এনে দিয়েছিলো । অনভিজ্ঞ শেখ হাসিনার ইচ্ছায় ৮১ র রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ড. কামাল বিচারপতি সাত্তারের বিরুদ্ধে নির্বচন করেন, কিন্তু পরাজিত হন ।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনা রাজনীতিতে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠেন । দলে তাঁর একক প্রভাব বাড়তে থাকে । আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরত্ব তৈরিতে ড. কামালদের ষড়যন্ত্র ভূমিকা ছিলো। কিন্তু এতে শেখ হাসিনা শক্তিশালী হলেও, কামালের গ্রহণযোগ্যতা খর্ব হয়েছে ।
ড. কামাল দলের মুরুব্বী হবার সুযোগ হারিয়েছেন, এখন দলছুট হয়ে জাতীয় মুরুব্বী হবেন কিভাবে ?
- কথাকার ও কবিয়াল এনায়েত কবির এর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেওয়া।
আপনার মতামত লিখুন :