শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৩:১১ রাত
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৩:১১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিচারপতি সিনহাকে সংসদে আওয়ামী লীগ বানিয়েছেন একসময়ের আইনমন্ত্রী মওদুদ

মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে

 

২০০১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সরকার গঠন করলে আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় নেতা এমন কী ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা হয়। ছাত্র সংগঠনটির সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সম্পাদককে আটক করা হয়। মুক্তির পর তাদের বিভিন্ন জেলায় ডজনখানেক হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। আমি পুলিশকে সুয়োমটো ক্ষমতা বলে হাজতে থাকাকালীন দোষীকে কী করে গেস্খফতার দেখানো হয় সেই নির্দেশনায় ‘হিবিয়াস কর্পাস’ আবেদনের ভিত্তিতে সব মামলা বাতিল করে দেই। আর অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতাকেও জামিনে মুক্তি দেই। এতে ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষুব্ধ হয়। তৎকালীন আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমেদ পার্লামেন্ট ফ্লোরে আমাকে ঘোর আওয়ামী লীগ সমর্থক জজ অভিহিত করেন, কারণ আমি নাকি তাদের প্রতি অযাচিত আনুকল্য দেখিয়েছি। আমার চ্যানেল আই সংশ্লিষ্ট বন্ধু আবদুর রশিদের অনুরোধে পার্লামেন্ট থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত সেই সমালোচনা দেখে আমি যথেষ্ট আহত হই।

এাঁই দেশের দুই প্রধান দল অনুসৃত প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে: ক্ষমতায় এসে মামলা চাপিয়ে পরাজিত দলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা সাধন। সে জন্য বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা আমার বিরুদ্ধে বন্য দুর্নীতির অভিযোগ এনে রিপোর্ট দিয়েছে, যা দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রয়াত চেয়ারম্যান বিচারপতি সুলতান হোসেন খান আমাকে জানিয়েছেন। আমি তাকে বলেছি বিষয়টির তদন্ত হোক এবং আমি তদন্তের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। তিনি জানালেন, তাতে খারাপ দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হবে এবং সংবিধান তার অনুমোদন দেয় না। আমি বললাম, সংস্থাটি আমাকে কালিমা লেপনে নিবৃত্ত হবে না। আমি এটাও জানতাম, কেন তারা আমাকে দুর্নীতিবাজ বিচারক হিসেবে রূপায়িত করতে তৎপর।

প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে অচলাবস্থা দেখা দিল। আওয়ামী লীগ কে এম হাসানের নিয়োগের বিরোধিতা করলো, এতে তিনি নিজেই তা পরিত্যাগ করলেন। প্রেসিডেন্ট ড. ইয়াজউদ্দীন আহমেদ সংবিধান লংঘন করেই নিজে প্রধান উপদেষ্টা হলেন। আওয়ামী লীগের আন্দোলনে ফলে পুরো অরাজকতা দেখা দিল। শেষটায় আর্মির অনুপ্রবেশ ঘটলো। সেটা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর চাপে সরকার সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যাতে দিতে পারে, নতুবা জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সদস্যদের ফেরত পাঠানো হবে। তাতে আর্মির উপরিভাগে উত্তেজনা দেখা দিল। আর্মির চাপে ইয়াজউদ্দীন আহমেদ তা ছাড়লেন, দেশে ইমারজেন্সি জারি করা হলো এবং ড. ফখরুদ্দিন আহমেদকে প্রধান উপদেষ্টা করা হলো। এতে আওয়ামী লীগ খুশি হলেও অপর রাজনৈতিক দলটি তখন বিপর্যস্ত। ইতোমধ্যে ২০০৭ সালে জাস্টিস বি কে দাশের স্ত্রী হঠাৎ মারা গেলে আমি তাদের বাড়িতে যাই।

সেখানে কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এলেন। আমরা আগে থেকে ঘনিষ্ট ছিলাম। ইমারজেন্সি ঘোষণায় সুরঞ্জিত যারপর নাই খুশি, যেন তার দল ক্ষমতা পেয়েছে। বললেন, তার দল সরকার গঠন করবে, সেটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এমন কী তিনি ভুলে গেলেন আমরা সেখানে কেন গিয়েছি। সুরঞ্জিত অন্যত্র তাড়া থাকায় চলে যাচ্ছিলেন। আমি তাকে থামিয়ে বলালাম, ‘লিডার, চলে যাওয়ার আগে আমার কিছু কথা ছিল, বসুন।’ বললাম, আপনার মতো দেশের মানুষও রাজনৈতিক মূল্যায়নবিহীন নাচছে, কিন্তু কী অত্যাসন্ন আতঙ্ক অপেক্ষা করছে, ভুলে গেছে। ‘আপনারা পরিণতি না জেনেই বোকার মতো আর্মিকে স্বাগত জানিয়েছেন। আপনার দলই প্রথম টার্গেটে পরিণত হবে, আপনারা সহসা নির্বাচন পাচ্ছেন না’। যখন কথাগুলো বললাম মনে হলো তিনি দ্বিধান্বিত, তাই প্রত্যুত্তরে বললেন, ‘দেখা যাক’। কিছুদিনের মধ্যেই আমার কথা বাস্তবতা পেল। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আর্মির প্রথম টার্গেট হলেন। তিনি গ্রেফতার হলেন কিছু রুজুকৃত মামলায়, যদিও তিনি সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী নন। ইতোমধ্যে আর্মি ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে আরও নেতাদের গ্রেফতার করেছে।

প্রায় ছয় মাস পর রেজিস্ট্রার জানালেন পরদিন বিকেলে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীন আহমেদ বঙ্গভবনে আমাকে ডেকেছেন। যখন গেলাম, দেখলাম আর্মি সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আমিনুল করিমের হাতে একটি ফাইল। কোনো সন্দেহ ছিল না, ভেবেছিলাম হয়তো কোনো দায়িত্ব দেয়া হবে। কয়েক মিনিটেই সে ধারণা ভ্রান্ত হলো। রাষ্ট্রপতি বললেন, আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে। জানতে চাইলে বললেন আমার বিরুদ্ধে সাংঘাতিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। আমি বললাম, সে তথ্য ভুল এবং বিষয়টা তার পুনরায় ভাবা উচিত। এ সময় সামরিক সচিব হাতে থাকা ফাইলের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাচ্ছিলেন। আমি তাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম আমি রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে এসেছি।

রাষ্ট্রপতিকে বললাম আমি এভাবে পদত্যাগ করতে পারি না, পেনশনটাও পাবো না। তিনি বললেন, প্রস্তাবে রাজি হলে সরকার অর্থের অঙ্ক দ্বিগুণ করে দেবে। ভারতে যেতে চাই,ে সরকার সব সুবিধা বরাদ্দ করবে। আমি চা পান না করে দুঃখিত বলে তা আবারও ভাবতে বলে ফিওে গেছি।

ই-মেইল: [email protected]

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়