ডেস্ক রিপোর্ট: চলতি দশম সংসদের শেষ অধিবেশন বসবে অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধন বিলসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল এই অধিবেশনে পাস হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে সরকারের শেষ সময়ে বিল পাসের হিড়িক পড়েছে। সদ্য সমাপ্ত ২২তম অধিবেশনের মাত্র ১০ কার্যদিবসে রেকর্ডসংখ্যক ১৮টি সরকারি বিল পাস হয়েছে। এর মধ্যে বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল, সড়ক পরিবহন বিলসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল ছিল।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, বেশ কিছু সরকারি বিল পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। সে কারণে আগামী মাসে আবারও অধিবেশন আহ্বানের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আর সেটাই হতে পারে চলতি সংসদের শেষ অধিবেশন। কারণ নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হলে সংবিধান নির্দেশিত ৬০ দিনের মধ্যে সংসদ অধিবেশন বসার বাধ্যবাধকতা থাকছে না। ফলে একমাত্র বিশেষ প্রয়োজনে ওই সময়ে সংসদ অধিবেশন বসবে।
সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আরেকটি অধিবেশন আহ্বানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ২১ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই অধিবেশন চলতে পারে। সে ক্ষেত্রে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রাষ্ট্রপতি সংসদের ২৩তম অধিবেশন আহ্বান করবেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আগামী অধিবেশনে পাস হবে বহুল আলোচিত গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধন বিল। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন ওই আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। নতুন আরো কয়েকটি বিল আগামী অধিবেশনে আসতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন বিল, প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট বিলসহ ৯টি বিল পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে সংসদে থাকা বেসরকারি বিলগুলোর কী হবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেনি।
সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত ২০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সংসদ অধিবেশনের মাত্র ১০ কার্যদিবসে ১৮টি বিল পাস হয়েছে। এটা চলতি সংসদের রেকর্ড। এর আগে ২৫ কার্যদিবসের বাজেট অধিবেশনে ১৪টি বিল পাস হয়। চলতি বছরের সবচেয়ে দীর্ঘ ২০তম অধিবেশনে ১৫টি বিল পাস হয়। আর আগের চার বছরে ১৯টি অধিবেশনে বিল পাস হয়েছে সর্বমোট ১৩০টি।
সূত্র জানায়, সদ্য সমাপ্ত অধিবেশনের শেষ দিনে পাস হয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিল, পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরি শর্তাবলি) বিল, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট বিল ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা বিল। এর আগে ১৯ সেপ্টেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল, সড়ক পরিবহন বিল এবং কওমি মাদরাসাগুলোর দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান বিল; ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (সংশোধন) বিল, কৃষি বিপণন বিল ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিল; ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি বিল ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বিল; ১৬ সেপ্টেম্বর সার (ব্যবস্থাপনা) (সংশোধন) বিল ও যৌতুক নিরোধ বিল, ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিল এবং ১২ সেপ্টেম্বর বস্ত্র বিল, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিল ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন বিল পাস হয়।
এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারের শেষ সময়ে বিল পাসের সংখ্যা বেশি হবে, এটা স্বাভাবিক। কারণ একটি বিল পাসের আগে নানা প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। সে জন্য সংসদে বিল উত্থাপনে অনেক সময় লেগে যায়। ফলে শেষের দিকে বিল বেশি জমা পড়ে। আর শেষ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলো অবশ্যই পাস করতে হবে। এই সংসদে আনা কোনো বিল পাস না হলে তা তামাদি (বাতিল) হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। সূত্র: কালের কন্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :