শিরোনাম
◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু

প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৭:৫০ সকাল
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৭:৫০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমার দর্শনের সঙ্গে মান্টোকে মেলাতে পেরেছি : নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি

২১ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছে বহুল আলোচিত ‘মান্টো’ সিনেমাটি। উর্দু ভাষার বরেণ্য লেখক সাহাদাত হোসেন মান্টোর জীবনী নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন অভিনেত্রী ও নির্মাতা নন্দিতা দাস। আর এই ছবিতেই সাহাদাত হোসেন মান্টোর চরিত্রে অভিনয় করেছেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। মান্টোর বিশাল জীবন দেখানো হবে মাত্র দুই ঘণ্টার সিনেমায়। নওয়াজের সঙ্গে সিনেমায় রয়েছেন ঋষি কাপুরের মতো বর্ষীয়ান অভিনেতা, পরেশ রাওয়ালের মতো তুখোড় অভিনেতাও। রয়েছেন জাভেদ আখতার।

সিনেমাটি নির্মাণ প্রসঙ্গে নির্মাতা নন্দিতা বলেছেন, ‘১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত সময়টা মান্টোর জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আর ওই সময়টায় মান্টো বোম্বেতে ছিলেন। তার পর দেশভাগ হলে তাকে লাহোরে চলে যেতে হয়। উনি কিন্তু জানতেন না যে, এ রকম কিছু একটা হবে। এ ঘটনা তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। যা পরবর্তী সময়ে তার ব্যক্তিজীবনকে নাড়িয়ে দেয়।’
সিনেমাটির চিত্রনাট্য লেখার জন্য মান্টোর আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন নন্দিতা। তিনি বলেন, ‘সিনেমার জন্য তার মেয়েদের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তখন অবশ্য তারা খুব ছোট ছিলেন। তবে একজন ছিলেন, যিনি আমাকে সাফিয়া অর্থাৎ মান্টোর স্ত্রীর গল্প করেন। কারণ সাফিয়ার গল্প তো কোথাও পাওয়া যায় না।’

এরপর পরিচালক নন্দিতা দাস জানিয়েছেন, এই সিনেমার জন্য কেবলমাত্র ১ রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন নওয়াজ। আর ‘মান্টো’-তে নিজেদের সবটা উজাড় করে দিয়েও, কিছুই নেননি ঋষি কাপুর, জাভেদ আখতারদের মতো তারকারা। পরিচালক নন্দিতা দাস আইএনএস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘এমন একটা চরিত্রের (সাহাদাত হোসেন মান্টো) জন্য একজন অভিনেতা সব কিছু করতে পারেন। তবে নিজের ন্যূনতম পারিশ্রমিকটাও না নেওয়া, এটা নওয়াজের উদার মনের পরিচয়।’
সিনেমা মুক্তির আগে বেশ কিছু গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জনপ্রিয় মেধাবী অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। পাঠকদের জন্য নওয়াজের সাক্ষাৎকারগুলো থেকে কয়েকটি বিশেষ প্রশ্নোত্তর তুলে ধরা হলো।

যখন ‘মান্টো’র চরিত্র পেলেন, কী মনে হয়েছিল?

নওয়াজ: আমার মনে হয়েছিল, ‘মান্টো’ খুব স্পর্শকাতর চরিত্র।আমার দর্শনের সঙ্গে ‘মান্টো’কে মেলাতে পেরেছি।

কতটা কঠিন মনে হয়েছিল?

নওয়াজ: কঠিন তো ছিলই। ‘মান্টো’র সততা দেখানো কঠিন ছিল। কতটা সততা দেখাতে পারব, সেটাই চ্যালেঞ্জ ছিল। একটুও অসৎ হলেই আমাকে সমস্যায় পড়তে হত।

নন্দিতা কতটা হেল্প করেছে?

নওয়াজ: এই সিনেমার জন্য নন্দিতা পাঁচ-ছয় বছর ধরে রিসার্চ করেছে ‘মান্টো’র ওপর। শুটিং শুরুর আগে আমরা ওয়ার্কশপ করেছিলাম। ফলে আমার জন্য এবং সব অভিনেতাদের জন্যই খুব সুবিধা হয়েছিল। আমার মনে হয়েছিল, মান্টো যা লিখেছে, আমিও তো এটাই বলতে চেয়েছি। এটাই তো আমার ভাবনা। ফলে অভিনয়ের যে পরিবেশ ছিল, চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার যে ব্যাপার ছিল, তা নিয়ে পরিচালক হিসেবে নন্দিতা অনেক সাহায্য করেছেন।
আপনার ক্যারিয়ারেও তো এটা একেবারে অন্য রকমের কাজ...

নওয়াজ: বলিউডে নায়কের ভূমিকা ছাড়া বাকি সব চরিত্রেই আমি অভিনয় করেছি। বলিউডের নায়কের চরিত্রে আমি অভিনয় করতেও চাই না। আমি বাংলা সিনেমা দেখে বড় হয়েছি। সেখানে অনেক শেখার জায়গা আছে। আমি চেষ্টা করি, নায়ক ছাড়া আর যেকোনো চরিত্রই হোক সেটি আমার চলবে। আমি খুশিই হই। আমি তিনটি সিনেমায় গ্যাংস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেছি। যদি নায়কের চরিত্রে অভিনয় করতাম, তাহলে হয়ত এই প্রশ্ন আমাকে করা হত না।

‘মান্টো’ চরিত্রে অভিনয় করার জন্য কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?

নওয়াজ: নন্দিতা ৫-৬ বছর ধরে মান্টোকে নিয়ে রিসার্চের কাজটা করে রেখেছিলেন। চিত্রনাট্য পড়ার দিন থেকে ৪-৫ দিনের ওয়ার্কশপ করেছি। আমাদের সিনেমার টিমের সব অভিনেতা-অভিনেত্রীর কাছে কাজটা অনেক বেশি সহজ হয়ে গিয়েছিল। কেননা চরিত্রের খুঁটিনাটি, চলাফেরা যাবতীয় কিছুর খোঁজখবর তিনি আগেই নিয়ে রেখেছিলেন। এমন কী মান্টোর মেয়েদের সঙ্গে দেখা করে তাদের বাবার সম্পর্কে খোঁজখবরও নিয়েছিলেন নন্দিতা। তারাও নিজেদের বাবা সম্পর্কে অনেক তথ্য দিয়েছিলেন। তাই কাজটা করতে বেশ সুবিধাই হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, মান্টোর যে চিন্তাভাবনা, সেটা পড়ে আমার মনে হয়েছিল এটা যেন আমারই চিন্তাভাবনা, নিজের কথা। তাই কাজটা করতেও বেশ ভালো লেগেছিল। তবে মান্টোর সততা, সেটার সঠিক বহিঃপ্রকাশ যাতে আমার মধ্য থেকে হয়, মানে কথাটা মান্টোর, পর্দায় আমি সেটা বলছি, এটা ফুটিয়ে তোলার জন্য পরিচালক যে পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছিলেন তাতে আমার মান্টোর চরিত্রে প্রবেশ করতে বা বলতে পারেন মান্টো হয়ে উঠতে কোনো সমস্যাই হয়নি।

আপনি একবার বলেছিলেন আপনি অভিনয় দেখাতে চান না। সেটাকে উদযাপন করতে চান। একটু বুঝিয়ে বলবেন বিষয়টা।

নওয়াজ: এটা আমার নিজস্ব একটা ধারণা। এক-একজন অভিনেতার নিজের নিজের অভিনয় নিয়ে এক একধরনের ভাবনাচিন্তা থাকে। মাঝে মধ্যে আমিও এটা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যাই। তবে একদিন অবশ্যই এটা করার চেষ্টা করব।
‘মান্টো’ আপনার অভিনীত তৃতীয় বায়োপিক। ‘রামাণ রাঘব’ ও ‘মাঝি দ্য মাউন্টেন ম্যান’ সিনেমার পর ‘মান্টো’।

কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল একজন লেখকের চরিত্রে অভিনয় করা?

নওয়াজ: দু’টি ক্ষেত্রেই আলাদা অভিজ্ঞতা রয়েছে। আলাদা প্রস্তুতিও নিতে হয়েছে। তবে মান্টোর চিন্তাভাবনা আর আমার চিন্তাভাবনা যেহেতু একরকম ছিল, মানে আমি নিজে যদি সমাজ সম্পর্কে কিছু বলতে চাই তাহলে এটাই বলব। মান্টো সত্যি বলতে চেয়েছেন। সত্যিটা সবাই বলতে পারে না। আমরা অনেকেই ভয় পাই বলতে। তাই সমঝোতার পথটাই বেছে নিই। আজও যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাহলে আজকের সময়ের মতো করে নিজের সংবেদনশীল মনোভাবকেই ব্যক্ত করতেন। একটা সামাজিক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আমিও মনে করি সত্যটা সেভাবেই বলা উচিত। এখনো আমাদের সমাজের বিভিন্ন জায়গায় অনেক মান্টো রয়েছেন যারা নিজের নিজের মতো করে সত্যিটা বলার চেষ্টা করেছেন। সবার সামনে নিয়েও আসছেন।

আপনি নন্দিতার পরিচালনায় কাজ করলেন। নন্দিতা একজন অভিনেত্রী। আপনার কাকে বেশি পছন্দ, অভিনেত্রী নন্দিতা নাকি পরিচালক নন্দিতা? কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

নওয়াজ: আমার দু’জনকেই ভালো লাগে। কাজের অভিজ্ঞতা বেশ ভালো। আমি তার ‘ফিরাক’ সিনেমাতেও কাজ করেছি। এবার একসঙ্গে কোনো সিনেমাতে অভিনয় করতে চাই। নন্দিতার সঙ্গে শর্ট ফিল্ম করেছি। সূত্র: প্রিয় সংবাদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়