বিনোদন প্রতিবেদক : রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর হাসপাতালে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ‘ভুল চিকিৎসা ও অকেজো কিডনি ফেলতে গিয়ে ভালো কিডনি ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা রফিক শিকদার।
বিষয়টি নিয়ে রফিক শিকদার সাংবাদিকদের সাথে গত ১৯ সেপ্টেম্বর কথা বলেন। বিষয়টি নিয়ে নির্মাতা রফিক শিকদার বলেন,‘আমার মা রওশন আরা (৫৫)। আমার মায়ের বাম কিডনি ও মুত্রথলিতে সমস্যা ছিল। ডান কিডনিটা পুরোপুরি ভালো ছিল। তার ডায়বেটিস ও হাই প্রেসার ছিল না। ডাক্তারের পরামর্শে আমি আমার মায়ের বাম কিডনি সার্জারি করলে আমার মা পুরোপুরি সুস্থ হন এবং সাভাবিকভাবে চলাফেরা শুরু করেন।
ঈদে পাবনা থাকা অবস্থায় আমাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর হাসপাতালে (পিজি) থেকে জানানো হয় আমার মায়ের কিডনিটা ফেলে দিতে হবে। তাহলে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবেন। আর সেটা না করলে পরবর্তী সময়ে সমস্যা হতে পারে। এরপর ঢাকায় আসলে মার অপারেশন ৫ সেপ্টেম্বর হয় । এরপর মা সুস্থ থাকলেও কয়েকদিন পর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
হঠাৎ করে ডাক্তাররা আমাকে জানান মাকে দ্রুত আইসিইউতে নিতে হবে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে। আমাদের পিজিতে আইসিইউতে কোনও সিট ফাকা নেই তাই অন্য জায়গায় নিতে হবে।
এরপর পিজি থেকে মাকে নিয়ে গেলাম রাজধানীর মগবাজারের ইনসাফ বারাকা কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে । সেখানে তারা ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে সিটি স্ক্যান পরীক্ষা করতে বলেন। ল্যাব এইডে সিটি স্ক্যান করার পর ওই পরীক্ষা দেখে, ল্যাবএইডের ডাক্তাররা জানালেন, আমার মায়ের কোনো কিডনি নাই।
তখন আমি ডাক্তারদের কথা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। পরীক্ষা করে ডাক্তাররা বলে আমার মায়ের কোনও কিডনি নেই। কথাটা আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কিন্তু তাদের রিপোর্ট দেখা যাচ্ছিল একটিও কিডনি নেই আমার মায়ের। ঢাক্তাররা বলে আপনার মাযের কি চিকিৎসা করবো কোনও কিডনি তো নাই। পিজি হাসপাতালে মায়ের অপারেশনের সংশ্লিষ্ট ডা. হাবিবুর রহমান দুলালতো আমাকে বলেছেন, ‘তিনি আমার মায়ের বামের অকেজো কিডনিটি ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু দুইটা কিডনি যে গোপনে ফেলে দেবেন তা আমি কল্পনা করতে পারছিলাম না।
পরে বিষয়টি ক্লিয়ার হওয়ার জন্য আমি অভিনেতা নিরবের পরামর্শে আবারও বিআরবি হাসপাতালে গিয়ে আগের রিপোর্টসহ ল্যাবএইড হাসপাতালের রিপোর্ট দেখালে তার আমাকে বলে রিপোর্ট বলছে আপনার মায়ের কিডনি নেই। তখন আমি বলি তাহলে এই বিষয় নিয়ে কী আমি চ্যালেঞ্জ পারবো? তারা আমাকে বলে শতভাগ নিশ্চিত আমরা আপনি চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন।
বিষয়টি নিয়ে ২০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন ৭১টিভিতে একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। প্রতিবেদনে জানানো হয় অকেজো বাম কিডনি ফেলতে গিয়ে চিকিৎসকরা ডান কিডনি কেটে ফেলে দিছে বলে অভিযোগ রোগীর ছেলের। তবে চিকিৎসকরা বলছেন ডান কিডনিটি অকেজো হওয়ায় সেটি দেখা যাচ্ছে না। তবে অন্য ডাক্তাররা এই কথা মানতে নারাজ তারা ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই অপারেশনের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল দাবি করেন , বাকি থাকা কিডনি অকেজো হওয়ায় সেটি সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ছে না।
অপারেশনের বিষয়ে ভুক্তভোগী নির্মাতা রফিক শিকদার কাছে জানতে চাওয়া হয় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. হাবিবুর সম্পর্কে ,‘ তখন তিনি বলেন কারও কাছে যোগাযোগ করে কারও কথায় কান দিয়েন না । আপনি বিভ্রান্ত হবেন না। আপনার মা সুস্থ হয়ে ওঠবেন। এসব বলে আমাকে আস্বস্থ করছিলেন। আমি ঢাক্তারকে বললাম তার তো কোনও কিডনি নেই তাহলে তিনি ভালো হবেন কিভাবে। এরপর আমাকে বলেন, আমার মায়ের কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে তাই তার কিডনি কাজ করছে না। রফিক শিকদার বলেন আমার মায়ের কিডনি ডাক্তার বিক্রি করে দিয়েছেন।
নির্মাতা আরও বলেন,‘দৃশ্যমান সত্য আমার মায়ের এখন একটি কিডনিও নেই। ডাক্তার আরেকটা কিডনি কি করেছেন? অথ্যাৎ সুস্থ কিডনিটা কি করেছেন? সেটার জবাব আমি তাদের কাছ থেকে পাইনি। আমার মাকে আমি সুস্থ দেখতে চাই। অন্যথায় আমি আইনগত ব্যবস্থার দিকে আগাব।’
তবে এ বিষয়ে অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সূত্র: ৭১ টিভি ও ফেসবুক
আপনার মতামত লিখুন :