খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল: জেলার উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টুকে (৪০) শুক্রবার রাতে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি ওই এলাকার সুখলাল হালদারের পুত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত আটটার দিকে কারফা বাজারের নিজের কাপরের দোকানে বসে থাকা অবস্থায় হেলমেট পরিহিত তিন দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলযোগে এসে অর্তকিতভাবে চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষন করে। এসময় নিহার হালদার (৩৫) নামের এক যুবকও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নিহার ওই এলাকার নকুল হালদারের পুত্র। তাকে রাত ১১টার দিকে শেবাচিম হাপসাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয়রা দুর্বৃত্তদের ধাওয়া করলে তারা ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনার সময় ওই বাজারে বিদ্যুৎ ছিলোনা।
থানার ওসি শিশির কুমার পাল জানান, চেয়ারম্যানের বুকে ও পায়ে তিন রাউন্ড গুলি লেগে তিনি গুরুত্বর আহত হন। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা মুর্মুর্ষ অবস্থায় চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টুকে উদ্ধার করে প্রথমে পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতলে নিয়ে আসেন। রাত সোয়া ১০টার দিকে চিকিৎসকরা বিশ্বজিৎ হালদার নান্টুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রাজনৈতিক অভ্যন্তরীন কোন্দলের জেরধরে এ হত্যাকান্ডটি ঘটেছে বলে দাবী করেছেন উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস জানান, নির্দোষ কাউকে হয়রানী না করে ঘটনার সাথে জড়িতদের অনতিবিলম্বে চিহ্নিত করে গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, হত্যাকান্ডের মূলকারন উদ্ঘাটনের পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে থানা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
অপরদিকে ঘটনার পর থেকেই হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে পুরো উপজেলাবাসী। শনিবার দুপুরে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের ইচলাদী বাসষ্ট্যান্ডে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এর আগে শনিবার সকাল থেকেই উজিরপুরের বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে কারফা বাজারের অর্ধশতাধিক দোকানপাট। সকাল থেকে কারফা বাজারের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা। এরইমধ্যে পুলিশ বহনকারী একটি গাড়ি ভাঙচুর, বাজারের ভিটি ভবনের পাশে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
ঘটনার পর থেকেই কারফা বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের সাথে শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় স্থানীয়দের বাগ্বিতন্ডা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :