আনিসুর রহমান তপন : কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে পারস্পারিক সহমর্মিতার সম্পর্ক তৈরীর লক্ষ্যে সারাদেশে চার হাজার ৮৮৩টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
শনিবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ভবনে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের একটি মডেল এর (ডামি) ফিতা কেটে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অনুষ্ঠানে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হলেও রাজধানীসহ দেশের কয়েকটি জেলায় মহিরা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিষয়ভিত্তিক লক্ষ্য অর্জনের ইতোমধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কয়েকটি ক্লাব স্থাপন করা হয়েছে। এসব ক্লাবগুলোর মাধ্যমে কাংক্ষিত সাফল্য পাওয়ায় এবার ব্যাপক পরিসরে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এরই ধারাবাহিকতায় সারাদেশে এবার মোট চার হাজার ৮৮৩টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন করবে সরকার। এর মধ্যে ৩৩০টি পৌরসভায় ও চার হাজার ৫৫৩টি ইউনিয়নে এই কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন করা হবে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তদরের অধিনে বাস্তবায়ত এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইভটিজিং বন্ধ, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, জেন্ডার বেইজড ভায়েলেন্স প্রতিরোধে Sexual & Reproductive Health and Rights (SRHR) , জন্মনিবদ্ধন, বিবাহ নিবন্ধন, যৌতুক প্রতিরোধ, শিশু অধিকার, নারী অধিকার, জেন্ডার ভিত্তিক বৈষম্য দূর করা, যৌন নির্যাতন ও নিপীড়ন প্রতিরোধসহ ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে ক্লাবগুলোতে। আর এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব বিষয়গুলোতে কিশোর-কিশোরীদের সচেতন করতে উদ্বুদ্ধ করা হবে।
কিশোর-কিশোরীদের বয়:সন্ধিকাল মানসিক বিকাশের উপযুক্ত সময় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী এসময় বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ কিশোর-কিশোরী। বর্তমানে কিশোর-কিশোরীর সংখ্যা ৩ কোটি ৬৩ লক্ষ ৮০ হাজার যা মোট জনসংখ্যার শতকরা ২১ দশমিক চার ভাগ। তাই দেশের এই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক ভাবে গড়ে তুলে মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে পারস্পরিক সহমর্মিতার সম্পর্ক গড়ে তুলে ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তুলতেই কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে বয়:সন্ধিকালের কোমলমতি এসব কিশোল-কিশোরীদের মানসিকতার পরিবর্তন হবে বলেও এসময় উল্লেখ করেন চুমকি।
এই ক্লাবের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন দিবস উদযাপন, খেলাধূলা, বই-ম্যাগাজিন, সংগীত, আবৃত্তি, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, মুক্তআলোচনা, আন্ত:ক্লাব প্রতিযোগিতা ও আত্মরক্ষার্থে কারাতে প্রশিক্ষণ নিতে পারবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিশোর-কিশোরীরাই হবে এই ক্লাবের মূল সদস্য এবং তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিজের সদস্যগুলো মিটিয়ে নিতে পারবে।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী রওশন আক্তার এর সভাপতিত্বে এতে আরো উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম এনডিসি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার কেএম আলী আজম।
আপনার মতামত লিখুন :