স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের ওপেনাররা একে একে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। তারা বারবার সুযোগ পাওয়ার পরে ,তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। শ্রেনীরা ভালো না করতে পারলে ,জুনিয়রা দলের হাল ধরতে পারেনি । দেখা যাচ্ছে ঘুরে ফিরে চার পাচ ভালো খেলছে । আর নতুন যারা তারা এক ম্যাচ ভালো খেললে পরে আর কোন খবর থাকেনা ।এবাবে আর কতদিন?
টুর্নামেন্টের মাঝপথে হুট করেই ইকরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারকে আরব আমিরাতে ডেকেছে বাংলাদেশ দল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ শনিবার সন্ধ্যায় আমিরাতে উড়ে যাবেন ইমরুল-সৌম। প্রশ্ন হলো হুট করেই একসঙ্গে দুজন ওপেনারকে ডেকে পাঠানো কেন? একদিক থেকে কারণটা স্পষ্টই। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের উদ্বোধনী একেবারেই নিষ্প্রভ।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩৭ রানের বিশাল জয়ের ম্যাচটাও বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি ভেঙেছিল মাত্র ১ রানে। শুন্য রানেই আউট হয়েছিলেন লিটন দাস। ওই ম্যাচ দিয়েই আবার এশিয়া কাপ শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের ওপেনিংয়ের প্রধান স্তম্ভ তামিম ইকবালের।
আফগানিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে পরের দুই ম্যাচেই তাই ওপেনিং করেছেন লিটন দাস ও নবাগত নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু দুজনেই ব্যর্থ। দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি ভেঙেছে দলীয় ১৫ রানে। তার চেয়েও বড় কথা, একজন আউট হলেও অন্যজন দলকে টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। বরং দুই ম্যাচেই দুজনেই আউট হয়েছেন যুগপত। আফগানিস্তানের বিপক্ষে লিটন করেন ৬ রান, নাজমুল ৭। শুক্রবার ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটাতে দুজনেই করেছেন সমান ৭ রান করে।
স্বাভাবিকভাবেই নড়বড়ে ওপেনিং জুটি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তাই বলে একসঙ্গে দুজন ওপেনারকে ডাকতে হবে? ব্যাকআপ খেলোয়াড় হিসেবে দলে যাদের নেওয়া হয়েছে, তাদের একজনের উপরও আস্থা রাখা যেত না? এসব প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছেন আমিরাতে দলের সঙ্গে থাকা বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম।
দিয়েছেন হুট করেই ইমরুল-সৌম্যকে ডাকার ব্যাখ্যা। বলেছেন, ‘তামিম চোটে পড়ার কারণে আমাদের ওপেনিং জুটিতে নড়বড়ে অবস্থা। এক ম্যাচেও আমরা ওপেনিং জুটিতে ভালো পারফরম্যান্স পাইনি।’ তাই বলে এক সঙ্গে দুজনকে ডাকা কেন? এর উত্তরে আকরাম বলেছেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট আসলে একজন ওপেনারকে ডাকার কথাই বলেছিল। কিন্তু আমরা ঝুঁকি না নিয়ে দুজনকেই ডেকে নিয়ে আসছি। টিম ম্যানেজমেন্ট এবং বোর্ডপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেই ইমরুল ও সৌম্যকে আনছি।’
দলে থাকা ব্যাকআপ খেলোয়াড়দের উপর আস্থা রাখার প্রশ্নে আকরাম বুঝিয়ে দিলেন, ব্যাকআপ হিসেবে যারা সুযোগ পেয়েছে, তারা আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি, ‘আমরা কিন্তু এসব চিন্তা করে আগেই দলে একজন বাড়তি ব্যাকআপ খেলোয়াড় নিয়ে এসেছি। যাদের ব্যাকআপ হিসেবে নিয়ে এসেছি, ওরাও ভালো খেলোয়াড়। ওদের দারুণ সুযোগ ছিল। লিটন তিনটা ম্যাচ খেলোয়াড় সুযোগ পেয়েছে। শান্ত দুইটা ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু ওরা রান করতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের এমন পরিকল্পনা করতে হয়েছে।’
কিন্তু যাদের ডাকা হয়েছে তারাও ব্যর্থতার কারণেই দল থেকে বাদ পড়েছেন। বাদ পড়ার পর এমন কোনো কারিশমাই তারা দেখাননি যে, তাদের গিয়েই সমস্যার সমাধান করে ফেলবেন। আকরাম এ বিষয়ে কিছু না বললেও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা কিন্তু সরাসরিই প্রশ্ন তুলেছেন। স্পষ্ট করেই বলেছেন, ‘ওরাও কিন্তু পারফর্ম করতে না পারার কারণেই দল থেকে বের হয়েছে। আবার এসে এই ধরনের টুর্নামেন্টের এতো চাপ নিয়ে...আমি জানি না ওরা টেকনিক্যালি কতটা কাজ করেছে। জানি না, যে সমস্যার কারণে দল থেকে বাদ পড়েছিল, সেগুলো ঠিক করে আসছে কিনা।’
যাই হোক, টিম ম্যানেজমেন্টের ডাকে সারা দিয়ে ইমরুল-সৌম্য আজ সন্ধায়ই আমিরাতে উড়ে যাচ্ছেন। আকরামের যুক্তি মতো আজ আমিরাতে গিয়ে আগামীকালই তাদের ম্যাচ খেলার জন্য মাঠে নেমে পড়ার কথা। আগামীকালই যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোরের পরের ম্যাচ বাংলাদেশের।
ইমরুল-সৌম্য পারবেন টিমম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান দিয়ে ওপেনিং সমস্যার সমাধান দিতে?
আপনার মতামত লিখুন :