স্বপন কুমার দেব, মৌলভীবাজার: হায় হোসেন হায় হোসেন ধ্বনিতে নিজের শরীর রক্তাত্ব করে কুলাউড়ার পৃথিমপাশার শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানরা পালন করলো ১০ মহরম পবিত্র আশুরা। শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্য ও নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ আড়াইশ বছরেরও বেশী সময় ধরে পালন করে আসা মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের নবাব বাড়িতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দিবসটি পালিত হয়েছে।
শুক্রবার ১০ মহরম বেলা সাড়ে ৩টায় পৃথিমপাশা নাবাব বাড়ির হোসেনি দালান থেকে ধর্মী ভাবগাম্বীর্য ও নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে বের হয় সু-সজ্জিত তাজিয়া মিছিল। শিয়া সম্প্রদায়ের কয়েক’শ পুরুষ যুদ্ধের নানা অনুসঙ্গ, তাজিয়া, কালো, লাল ও সবুজ নিশান উড়িয়ে মিছিলে অংশ নেয়। পা নগ্ন রেখে মিছিলে অশংগ্রহণ কারীরা শোকের প্রতীক কালো পোষাক পরিধান করে। কারবালার নির্মম হত্যাকান্ড ও ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রা.) শাহাদৎ বরণের শোকে কাতর হয়ে শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানরা ধারারো ছোরাগুচ্ছ রশিতে বেধে নিজের শরীরেকে অবলীলায় রক্তত্ব করে।
কারো কারো কালো জামা রক্তে ভিজে চুপসে গেছে আর সাদা জামা হয়ে উটে রক্তে লালে-লাল। তবুও ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হচ্ছে আকাশ-বাতাস। তাজিয়া মিছিলে বুক চাপড়ে, জিঞ্জির দিয়ে শরীরে আঘাত করে প্রকাশ করা হয় মাতম।
এবারও কঠোর নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত ছিল পৃথিমপাশার নবাব বাড়ি। কুলাউড়ার অফিসার ইনচার্জ শামীম মূছার নেতৃত্বে থানা পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদার করে সর্বত্র। অনুষ্ঠানে কয়েক লক্ষ মানুষের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠা ঐতিহ্যবাহি নবাব বাড়ি। স্পর্শকাতর জায়গা মোতায়েন করা হয় একাধিক থানা পুলিশ, ও গ্রাম পুলিশ । সবরকমের অপৃতিকর ঘটনা এড়াতে পুরো নবাব বাড়ি জুড়েই তৎপর পুলিশ সদস্য।
অপরদিকে ১ মহরম থেকে ১০ মহরম পযর্ন্ত নবাব বাড়িতে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল জিগির আজগার, কোরআনে তেলাওয়াত, মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা, কাঙ্গালী ভোজসহ নফল নামায ও রোজা।
আপনার মতামত লিখুন :