শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১০:১৫ দুপুর
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১০:১৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গোছানো আ.লীগ, এলোমেলো বিএনপি

ডেস্ক রিপোর্ট : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বরিশাল-১ আসনের সব কেন্দ্রে কমিটি গঠন শেষ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলীয় নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করে একক মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে পুরো নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন বর্তমান সাংসদ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। মামলা আর গ্রেপ্তার-আতঙ্কে মাঠছাড়া বিএনপি প্রকাশ্যে তো দূরের কথা, ঘরোয়া কর্মসূচিও পালন করতে পারছে না। যদিও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কোন্দলে বিভক্ত।

গৌরনদী-আগৈলঝাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত বরিশাল-১ আসনে সর্বশেষ নির্বাচনে (২০১৪) সাংসদ হন বঙ্গবন্ধুর ভাগনে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। সাবেক মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাতের পুত্র হাসানাত আবদুল্লাহ বর্তমানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। দক্ষিণাঞ্চলের ভোটের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত এই আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল জয়ের জন্য অন্তরায় বলে অনেকেই মনে করেন। বর্তমানে ত্রিবিভক্ত বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা রাজনৈতিক অবস্থানের দিক থেকে কেউ কারও চেয়ে কম নন। চার প্রার্থীর তিনজনই কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা আর একজন কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা।

হাসানাতের গোছানো মাঠ

গত ১০টি সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ পাঁচবার, জাতীয় পার্টি দুবার এবং বিএনপি তিনবার (১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিসহ) জয়লাভ করেছে। ’৯৬ সালে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এলাকায় প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার উন্নয়নকাজ করেন বলে দাবি আওয়ামী লীগের। ২০০৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এখানে সাংসদ হন তালুকদার মো. ইউনুস। তবে ২০১৪ সালে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের একক মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসানাত আবদুল্লাহ। নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। গৌরনদী উপজেলার সাতটি ও আগৈলঝাড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জনসভা করেছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গণসংযোগ চলছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের জন্য আলাদা কমিটিও করা হয়েছে। সব সহযোগী সংগঠন ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করা হয়েছে।

গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক হাসানাত আবদুল্লাহকে ঘিরেই রাজনীতির মেরুকরণ হয়ে থাকে। তাঁর নেতৃত্বে এই আসনসহ দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও এখানকার মানুষ তাঁকেই বিজয়ী করবেন।

এলোমেলো বিএনপি

হামলা-মামলাসহ ক্ষমতাসীনদের চাপের মুখে বিএনপি মাঠছাড়া। দলের সম্ভাব্য চার মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, সদস্য আবদুস সোবাহান, সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এম জহির উদ্দিন স্বপন ও কেন্দ্রীয় সদস্য গাজী কামরুল ইসলাম।

দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে হামলা-মামলার ভয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা এলাকাছাড়া। ফলে নেই কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা। প্রকাশ্যে তো দূরের কথা, ঘরোয়া কর্মসূচিও পালন করতে পারছেন না। পাশাপাশি রয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। গৌরনদী উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির দুটি করে কমিটি রয়েছে। দুই পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কুদ্দুসুর রহমান ও আবদুস সোবাহান। সংস্কারপন্থী নেতা জহির উদ্দিনের সমর্থকেরা মূল বিএনপিতে কোনো অবস্থানে না থাকলেও তাঁরা সংঘবদ্ধ।

বিএনপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতার দাবি, বিএনপিতে কোন্দল থাকলেও সংসদ নির্বাচনে মূলধারার তিন সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। কুদ্দুসুর রহমান, আবদুস সোবাহান ও কামরুল ইসলামের মধ্য থেকে যে কেউ মনোনয়ন প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকার পাশাপাশি সংস্কারপন্থী নেতা জহির উদ্দিনকে ঠেকাতেও এককাট্টা।

কুদ্দুসুর রহমান বিভিন্ন মামলার আসামি হওয়ায় এলাকায় আসতে পারেন না। সোবাহান ও কামরুল গত পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করে গণসংযোগ করেন। সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করে পুলিশি চাপে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন।

গৌরনদী উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা মুঞ্জুর হোসেন বলেন, ক্ষমতাসীনদের চাপের মুখে সাংগঠনিক তৎপরতা চালাতে পারছেন না। এ ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ ছাড়ানোর পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের তালিকা করে পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

গৌরনদী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মান্নান খানসহ একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, একদিকে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের মামলা-হামলা, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিএনপি অনেকটাই বিপর্যস্ত। দলীয় কোন্দলের কারণে ’৯১, ’৯৬ ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে বিএনপি হেরে যায়।

২০০৮ সালে এখানে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন আবদুস সোবাহান। তিনি বলেন, গত দুটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করতে কাজ করেছেন জহির উদ্দিন। তিনি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিএনপি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চক্রান্তে জড়িত ছিলেন।

এ অভিযোগ অস্বীকার করে জহির উদ্দিন বলেন, ‘দলকে কীভাবে ক্ষমতায় আনা যায়, কীভাবে বিএনপির প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিবের নির্দেশে কাজ করছি। দলীয় সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত।’

কুদ্দুসুর রহমান বলেন, ত্যাগী, নির্যাতিত, যোগ্য ও কর্মিবান্ধব নেতাকে মনোনয়ন দিলে বিজয় সুনিশ্চিত। বিএনপিতে প্রতিযোগিতা আছে, কোন্দল নেই। সূত্র : প্রথম আলো

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়