শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৬:২৬ সকাল
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৬:২৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নাফ নদীরপাড়ে দেশের প্রথম ‘সোলার পার্ক’

ডেস্ক রিপোর্ট : বিদ্যুৎখাতে নতুন চমক নিয়ে আসছে নব নির্মিত দেশের একমাত্র ‘সোলার পার্ক’। যা গড়ে তোলা হয়েছে দেশের সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফের নাফ নদীর পাড়ে। এখান থেকে প্রথমবারের মতো জাতীয় সঞ্চালন গ্রিডে যোগ হবে সৌরবিদ্যুৎ। ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু হলে দেশের বিদ্যুৎখাতে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মুক্ত হবে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশ ও ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী (আইপিপি) প্রতিষ্ঠান জুলস পাওয়ার লিমিটেড (জেপিএল)।

জুলস পাওয়ার লিমিটেড (জেপিএল) সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি জেপিএলের সঙ্গে বিপিডিবির চুক্তি হয়। এর মাত্র ১৮ মাসের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন করা হয়েছে। দেশের প্রথম সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে চলতি মাসের ১১ তারিখ থেকে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছে জেপিএলের নাফ নদীরপাড়ের এ সোলার পার্কটি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ কিনে জাতীয় সঞ্চালন গ্রিডের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে সরবরাহ করবে। ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে জানা গেছে।

জুলস পাওয়ার লিমিটেড (জেপিএল) সূত্রে আরও জানা যায়, কেন্দ্রটি থেকে বছরে ৪৩ হাজার মেগাওয়াটের আওয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে টেকনাফের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ সরবরাহ করা যাবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী এলাকার নাফ নদীরপাড়ে সারি সারি বসানো হয়েছে ৮৭ হাজার সৌর প্যানেল। এসব প্যানেলের মাঝখানে রয়েছে পাঁচটি সাবস্টেশন। একই সঙ্গে প্রকল্পে যাতায়াতের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে কয়েকটি সড়কও। এসব সৌর প্যানেল থেকে উৎপাদিত ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রথমে মূল স্টেশনে রাখা হয়। পরে হ্নীলা ইউনিয়নের লেদায় অবস্থিত পল্লী বিদ্যুতের সাবস্টেশনে সরবরাহ করা হবে।

এদিকে দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হওয়ার খবরে বেশ উচ্ছ্বসিত টেকনাফের মানুষ। এ পার্কের মাধ্যমে লোডশেডিং যন্ত্রণার অবসান হবে বলে মনে করছে টেকনাফের সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধিরা।

টেকনাফ পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম জানান, দেশের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ একটি বাণিজ্যিক এলাকা। এ উপজেলায় রয়েছে একটি স্থলবন্দরও। যার কারণে টেকনাফে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন। লোডশেডিং রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ‘সোলার পার্কটি।

লেদা এলাকার ফরিদুল আলম বলেন,‘লোডশেডিংয়ের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছিল সাধারণ মানুষ। কোনো ইলেকট্রনিক্স কাজ করতে পারত না। একবার গেলে আর বিদ্যুতের আসার নাম থাকত না। হয়তো সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে আমাদের দুর্ভোগের সমাধান হবে।’

হ্নীলার বাসিন্দা আনোয়ার ইসলাম নয়ন বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকার যন্ত্রণা আমাদের নিত্যদিনের। এ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে আমাদের লোডশেডিং অনেকাংশে কমে আসবে। পাশাপাশি টেকনাফের মানুষের যে বিদ্যুৎ সংকট সেটি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’

উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি মুঠোফোনে বলেন, ‘টেকনাফের মানুষের বিদ্যুৎ সমস্যা দীর্ঘদিনের। এ প্রকল্প পুরোপুরি চালু হলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে টেকনাফের মানুষ। জনগণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তার হাত ধরেই উদ্ধোধন করা হবে।’

টেকনাফ সোলারটেক এনার্জির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুহের লতিফ খান  বলেন,‘এ সোলারটেক থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। দেশের টেকসই উন্নয়নে নবায়নযোগ্য জ্বালানির আরও প্রকল্পে ভবিষ্যতে সংযুক্ত থাকতে পারলে ধন্য হব। মধ্যম আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সরকার। এর আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। আশা করছি এরই একটি অংশ টেকনাফ সোলারপার্কে থেকে যাবে।’

জুলস পাওয়ার লিমিটেডের (জেপিএল) পরিচালক রায়ান মঈন জানান, পরীক্ষামূলক অপারেশন শেষ হতে আরও দু’একদিন লাগবে। এরপর বাণিজ্যিকভাবে চালুর তারিখ নির্ধারণ করা হবে। ২০ মেগাওয়াটের এ প্রকল্পটি সোলার পাওয়ার হিসেবে একটি বড় প্রকল্প।

তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব, তা মোকাবেলায় ক্লিন এনার্জির মাধ্যমে দেশের পাশে দাঁড়াতে পারা খুবই আনন্দের ও গর্বের। সোলার পার্কের প্রথম প্রকল্প হিসেবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাস্তবায়নে আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হয়েছে। তবে সরকারের আন্তরিকতায় প্রকল্পটি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করা গেছে।’ সূত্র : বার্তা২৪

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়