শাহীন চৌধুরী: দেশের বিদ্যুৎ সংকটকে সর্বাাধিক গুরুত্ব দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহন করার পর থেকেই কাজ করা শুরু করে। এ কারনেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে বিশেষ নজর দেয়া হয়। এখন যার ফল পেতে শুরু করেছে জাতি। দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার তুলনায় এখন উৎপাদন ক্ষমতা বেশী। গত সাড়ে ৯ বছরে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে ১২ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট। এসময় ১০১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন শুরু করেছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
এদিকে গত সামবার সন্ধ্যা ৭টায় দেশে রেকর্ড পরিমান ১১ হাজার ৫৩৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় বলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে। এই উৎপাদন দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। বিপিডিবির পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী আমাদের অর্থনীতিকে এ তথ্য জানান। এর আগে গত ১৮ জুলাই সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৩৮৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছিল।
সোমবার দিনের পিক আওয়ারে ১১ হাজার ৭৪০ এবং সন্ধ্যার পিক আওয়ারে ১২ হাজার ৫০২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছিল বিপিডিবি। ওই কর্মকর্তার দাবি, রেকর্ড গড়ার ওই দিনে দেশে কোনও লোডশেডিং ছিল না। তবে কোথাও কোথাও বিতরণগত ত্রুটির কারনে কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ না থাকার খবর পাওয়া গেছে।
দেশে বিদ্যুৎ সপ্তাহ পালন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয়। তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল মাত্র ৩ হাজার মেগাওয়াট। বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াটে দাড়িয়েছে।
সূত্রমতে, গত সাড়ে ৯ বছরে মোট ২৪ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৩৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। যেখানে ২০০৯ সালের পূর্বে ১০০ বছরেরও বেশি সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছিল মাত্র ২৭টি। সে হিসেবে গত সাড়ে ৯ বছরে যে চুক্তি করা হয়েছে তা একটি রেকর্ড।
বর্তমান সরকারের দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা রয়েছে।
দেশে জ্বালানি সংকট থাকায় বর্তমানে নতুন সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র আমদানি করা কয়লা দিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে গ্যাস সংকট মোকাবেলা করার জন্য ইতিমধ্যেই এলএনজি আমদানি শুরু হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ বিভাগের পরবর্তী টার্গেট এলএনজি নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা। সম্প্রতি এলএনজি নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করার জন্যও কয়েকটি বিদেশী কোম্পানির সাথে চুক্তি হয়েছে। ২০৪১ সালের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে এসব চুক্তিরই মূল লক্ষ্য।
আপনার মতামত লিখুন :