শেখ মো. আমিনুল ইসলাম : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঔষধকে ২০১৮ সালের প্রডাক্ট অব দি ইয়ার ঘোষণা করেছিলেন বছরের প্রথম দিকে। আমরা খুবই আশাবাদী হয়েছিলাম এবার হয়তো ঔষধ শিল্পের বিস্ময়কর উত্তরণের কারিগরদের একটা কিছু হবে।
দিনরাত পরিশ্রম করে যারা ঔষধের প্রধান বিপণন কাজটি করেন, সেই ২৩০০০০ (প্রায়) প্রতিনিধির কোন অধিকারই যেন নেই এ শিল্পের সুফল ভোগ করার। অবাক হতে হয় যখন দেখি এত বিপুলসংখ্যক উচ্চ শিক্ষিত প্রতিনিধির চাকরির কোন নীতিমালা নাই, ন্যূনতম বেতনের কোন সীমারেখা নাই, চাকরির কোন সুরক্ষার ব্যবস্থা নাই, সরকারি ছুটি নাই ইত্যাদি। কোম্পানিগুলো ইচ্ছামতো বেতন বোনাস দেয়, যখন তখন চাকরি যায়, যাকে খুশি তাকে যখন তখন বিদায় করে দেয়। এ যেন এক ভানুমতির খেলা।
আজকে গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের ন্যূনতম বেতন ৮০০০ টাকা আদায় করে নিয়েছে। জানুয়ারি থেকে এটা কার্যকর হবে। আর আমরা উচ্চশিক্ষিত হয়েও নিজেদের অধিকার আদায়ে এক প্লাটফর্মে আসতে পারি না। দুইগ্রুপ এক হয়ে দেখা যাচ্ছে আবার তৃতীয় গ্রুপের জন্ম হচ্ছে।
এদেশে গৃহকর্মী সুরক্ষা আইন আছে অথচ উচ্চশিক্ষিত ২৩০০০০ যুবক যারা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানী শিল্পের মূল চালিকাশক্তি তাদের চাকরি সুরক্ষার কোন ব্যবস্থা নাই। আমরা লজ্জা পাই না। যদি লজ্জিত হতাম তাহলে অধিকার আদায়ে নিজের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে একমঞ্চে আসতে পারতাম।
আমি বুঝি না, ফারিয়ার কোন ফান্ড নাই, আয়ের কোন উৎস নাই, অধিকার আদায়ে জোরালো কোন আন্দোলন নাই, তারপরেও সবাই নেতা হতে চাই কেন? শুধু নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের কারণে আজ কিছুই হচ্ছে না। দীর্ঘদিনের জটিলতা মিটাতে গিয়ে দেখি আমার কয়েকজন ভাই, যারা ফারিয়া আন্দোলনে বিপ্লবী ভূমিকা রেখেছেন, আন্দোলনে যাদের গুরুত্ব অপরিসীম তাদের কেউ কেউ সাথে না থেকে সমালোচনায় মগ্ন।
এটাতো হওয়ার কথা না। আমি যদি মনে করি, আমাকে দাওয়াত করে, আমার নিকট জিজ্ঞেস করে সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে এটা আমার ভুল। কেননা এখানে সবাই স্বেচ্ছায় কাজ করেন, নিজের পকেটের টাকা খরচ করেন, নিজের কর্ম ঘণ্টা ব্যয় করেন। তাই যারা কাজ করেন তাদের ভুল না খুঁজে নিজেই নিজের অধিকার আদায়ে এগিয়ে আসি। হাতে হাত ধরে, কাঁধে কাঁধ রেখে একত্রে এগিয়ে যাই।
আর কোন বিভাজনে নিজেকে না জড়াই। ইস্পাতকঠিন ঐক্যগড়ে চাকরির একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রতিষ্ঠা করি। প্রডাক্ট অব দি ইয়ার, ন্যূনতম মজুরী, চাকরি সুরক্ষা আইন এবং আমরা।
পরিচিতি : চাকরিজীবী, ওয়েস্টার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড/মতামত গ্রহণ : নৌশিন আহম্মেদ মনিরা/ সম্পাদনা : ফাহিম আহমেদ বিজয়
আপনার মতামত লিখুন :