আশিস গুপ্ত ,নয়াদিল্লি: ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ- আরএসসের প্রধান মোহন ভাগবত মঙ্গলবার বলেছিলেন ,‘আমরা হিন্দুরাষ্ট্রে বিশ্বাস করি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা মুসলিম বিরোধী। আমরা এমন একটা ব্যবস্থা চাই , যেখানে সব ধর্ম এবং গোষ্ঠীর স্থান হবে।’ এই বক্তব্যের ঠিক ২৪ঘন্টা পরে বুধবার তিনি বললেন , ‘ভারতে যারা বাস করেন তারা সকলেই হিন্দু। এই নিয়ে কোনও সংশয় নেই।’
বুধবার নয়াদিল্লিতে 'ভবিষ্যতের ভারত' শীর্ষক আলোচনা সভায় এমনই দাবি করলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত।
তিনি বলেছেন , ‘ভারতে যারা বসবাস করেন তারা অনেকেই স্বীকার করতে দ্বিধা বোধ করেন। তবে একথা সত্য যে ভারতের প্রত্যেক বাসিন্দার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য এক। আর সেটা হিন্দু সংস্কৃতি।’
গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া তিনদিনের আলোচনাসভা বুধবার শেষ হয়েছে। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত আলোচনাসভায় হাজার দেড়েক শ্রোতার সামনে সঙ্ঘ প্রধানের সবথেকে চমকে দেওয়ার মত মন্তব্য, ‘আরএসএস জাতপাতের ভেদাভেদে বিশ্বাসী নয়। সেকারণেই দেশের অনেক জায়গাতেই মুসলিমরা গো–পালন করে থাকেন। গোরক্ষার নামে যারা হিংসা ছড়ান, তারা আসলে দুষ্কৃতী। প্রকৃত গোরক্ষক নন। তাই গোরক্ষকদের সঙ্গে এই দুষ্কৃতীদের মিলিয়ে না ফেলাই ভাল।’
সঙ্ঘ কখনও ভিন্ন জাতের মধ্যে বিবাহের বিরোধী নয় দাবি করে মোহন ভাগবত বলেছেন, ‘আরএসএসে যারা যোগ দিতে চান তারা কোন জাতের সেটা দেখা হয় না। এটা নারী-পুরুষের মধ্যেকার বোঝাপড়ার বিষয়। জন গণনা করলে দেখা যাবে সঙ্ঘের কর্মীদের মধ্যেই সবথেকে বেশি ভিন্ন জাতের বিয়ে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মহারাষ্ট্র প্রথম ভিনজাতে বিয়ে হয়েছিল ১৯৪২ সালে। সেসময় তাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল সঙ্ঘ । এমনকী বিআর আম্বেদকর নিজে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। তার আরও দাবি সঙ্ঘ কখনও মুসলিমদের বিরোধী নয়। বিশ্ব একটি পরিবার এই নীতিতে বিশ্বাস করেন তারা।’
সবার কাছে সংগঠনকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে আরএসএসের নতুন প্রয়াস ছিলো দিল্লির এই আলোচনাসভা। যা প্রথমেই হোঁচট খেয়েছে । বেশ কিছুদিন ধরেই প্রচার চলছিলো আরএসএস'র অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের। কাকে কাকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো সে সম্পর্কে সঙ্ঘের থেকে সরকারিভাবে কিছু না জানালেও , বিজেপি ছাড়া অন্য কোনও দলের প্রতিনিধি ছিলেন না সোমবার থেকে শুরু হওয়া রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের তিনদিনের আলোচনাসভায়।তিনদিনই সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত-ই ছিলেন প্রধান বক্তা।
আপনার মতামত লিখুন :