ফয়সাল মেহেদী : আসন্ন সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে সুশাসন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক বেশ কিছু অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর বিবেচনার জন্য ১৩টি সুপারিশ করেছে দুর্নীতি বিরোধী বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সোমবার ধানমন্ডির কার্যালয়ে ‘রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সুশাসন ও শুদ্ধাচার’ শীর্ষক এক কার্যপত্র প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ তুলে এসব সুপারিশ করে সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- সরকার গঠনকারী প্রতিটি রাজনৈতিক দল কর্তৃক পূর্ববর্তী নির্বাচনে দেওয়া অঙ্গীকার কতটুকু পূরণ করেছে সে সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ; নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন না করতে পারলেও বিরোধী দল হিসেবে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কী ভূমিকা থাকবে তা ইশতেহারে স্পষ্ট করা; প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলপত্র অনুসরণ করে কর্মপরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন এবং প্রতিবছর তা পর্যালোচনা করা; এবং রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে গণতন্ত্র ও সুশাসনের বিদ্যমান ঘাটতি পূরণে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকারসহ এসব অঙ্গীকার কিভাবে বাস্তবায়িত হবে তার সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রদান।
এছাড়াও বিরোধী দলকে সংসদীয় কার্যক্রমে আরও বেশি অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া যেমন- ডেপুটি স্পিকার নিয়োগ, সরকারি হিসাব সম্পর্কিত কমিটিসহ এক-তৃতীয়াংশ কমিটিতে বিরোধীদলীয় সদস্যকে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন; সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে প্রয়োজনীয় সংশোধনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি; দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, কমিশনার ও সদস্যসহ সকল নিয়োগ এবং নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি, গোষ্ঠীস্বার্থ এবং দলীয় রাজনৈতিক বিবেচনা পরিহার করা ও প্রয়োজনে সংস্কারের সুপারিশ করা হয়।
অপর সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় পেশাদারী উৎকর্ষ ও কার্যকরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সমন্বিত ও পরিপূরক কৌশল গ্রহণ এবং সকল অংশীজনের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করা; কেবলমাত্র যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে জনপ্রশাসনে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন করা; প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ, প্রশাসনসহ সকল সরকারি খাতে আধুনিক কর্মী মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রণোদনা নিশ্চিত করা; পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক কাঠামো সংস্কার করা; তথ্যের অভিগম্যতাকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কোনো আইন প্রণয়ন না করা; এবং তথ্য অধিকার আইনবিরোধী এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পরিপন্থী বিভিন্ন নিবর্তনমূলক উপধারা বাতিল করা।
আপনার মতামত লিখুন :