আবু সালেহ রনি: সাংবাদিক ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে কারও উদ্বেগ নেই! অথচ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৬ কোটি মানুষের সুশাসন ও রাজনীতি! গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরুপ সেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া আবারও প্রত্যাখান করেছে সম্পাদক পরিষদ!!
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যখন সাংবাদিকদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রীই শেষ ভরসা। যতদূর জানি ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাংবাদিক নেতাদের সাহ্মাৎ হওয়ার কথা রয়েছে। আশা করি তারাও বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে নিয়ে খসড়ায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে উদ্যোগী হবেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে রোববার দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় সম্পাদক পরিষদের । পরে এক বিবৃতিতে বলা হয়, খসড়া আইনটির ৮,২১, ২৫,২৮, ২৯,৩১, ৩২ ও ৪৩ ধারায় মৌলিক কোনো পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। এসব ধারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুতর হুমকি।তবে ৩ নম্বর ধারার অধীন তথ্য অধিকার আইনের (আরটিআই) অন্তর্ভুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।
বিবৃতিতে ঔপনিবেশিক আমলের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন (অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট) অন্তর্ভুক্ত করায় খসড়া ডিজিটাল আইনটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কারণ:১. এটি সংবিধানের ৩৯ (২) ক ও খ ধারায় দেওয়া মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তার পরিপন্থী।
২. এটি চিন্তার স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ধারণার বিরোধী, যে স্বাধীনতা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ।
৩. এটি গণতন্ত্রের মৌলিক চর্চারও বিরোধী, যে গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ সব সময়ই লড়াই করেছে এবং এর পাশে থেকেছে।
৪. এটি সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক নীতিমালার বিরোধী, যার জন্য বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা লড়াই করেছেন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন নিউজ টুডের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, দৈনিক আজাদি সম্পাদক এম এ মালেক, করতোয়া সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, দ্য ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক এম শামসুর রহমান, সংবাদ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান, যুগান্তর-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকাল-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি ও ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শহীদুজ্জামান খান।
পরিচিতি: সাংবাদিক
আপনার মতামত লিখুন :